মসজিদের মাইকে শব্দ মাত্রা বেধে দিল সৌদি আরব, নিয়ম ভাঙলে জরিমানা

মসজিদের মাইকের শব্দমাত্রায় রাশ টানার সিদ্ধান্ত নিল সৌদি আরব। দেশের ইসলাম সংক্রান্ত মন্ত্রক নির্দেশ দিয়েছে, লাউডস্পিকারে শব্দের মাত্রা সর্বোচ্চ সীমার এক-তৃতীয়াংশের বেশি কখনোই যেনো না হয়। এই নির্দেশ না মানা হলে জরিমানাও দিতে হবে।

মন্ত্রকের নির্দেশ, আজান, ইকামতের সময় মসজিদের মাইক বাজবে। মাইক খুব জোরে বাজলে মারাত্মক শব্দ হয় বলে একাধিক অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানান ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রী। জানা গেছে, সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মহম্মদ বিন সলমান দেশে রক্ষণশীলতাকে সরিয়ে উদারীকরণের খোলা হাওয়া ঢুকতে দেওয়ার পক্ষপাতি। আর সেই উদারীকরণের পদক্ষেপ হিসেবে মসজিদের লাউডস্পিকারে শব্দের মাত্রা বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এই সিদ্ধান্ত ছাড়াও গত কয়েক দশক হল সিনেমার ওপর নিষেধাজ্ঞা তোলা হয়েছে, মহিলাদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে, কমানো হয়েছে ধর্মীয় পুলিশ বাহিনীর দাপট। বলা যায় রক্ষণশীল দেশে আধুনিক পরিবেশ তৈরি করতে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার ঘটানো সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মহম্মদ বিন সলমানের অন্যতম লক্ষ্য। দেশে বিদেশি বিনিয়োগ, পর্যটক টানাও তাঁর লক্ষ্য।

তবে যুবরাজের এই সিদ্ধান্ত স্বাভাবিক ভাবেই মেনে নেয়নি রক্ষণশীল ওয়াহাবি সুন্নি অধ্যুষিত দেশের কট্টরপন্থীরা। সরব হয়েছেন তারা। প্রশ্ন তুলেছেন, কেন শুধু আজান, ইকামতের সময় লাউডস্পিকার বাজবে? ২০০৯ সালেও এই একই ধরনের নির্দেশ দিয়েছিল মন্ত্রক। কিন্তু দেশের রক্ষণশীল অংশের প্রবল বিরোধিতায় সেটা কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। তবে এবার রক্ষণশীলদের আপত্তি আর তোয়াক্কা করা হবে না বলে ঠিক করা হয়েছে।

সৌদির ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রী আবদুল্লাহ লতিফ শেখ জানিয়েছেন, যারা প্রার্থনা করতে চান তাদের ইমামের ডাকের অপেক্ষায় থাকার প্রয়োজন নেই। যদিও ইদ ও শুক্রবারের প্রার্থনার সময় পুরো ভলিয়্যুমেই মসজিদের বাইরে লাউড স্পিকার বাজানোয় সায় দেওয়া হয়েছে।

২৩ মে থেকে কার্যকর হওয়া এই সিদ্ধান্তের নিন্দা সোশ্যাল মিডিয়ায় হ্যাশট্যাগ দিয়ে ব্যপক প্রচার চলছে। দাবি তোলা হয়েছে, তাহলে রেস্তোরাঁয় কাফেতে জোরে মিউজিক বাজানো বন্ধ করতে হবে।

কিন্তু সৌদি আরবের ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রী জানিয়েছেন, তারা নজর রাখছেন যাবতীয় নির্দেশ ঠিকঠাক পালিত হচ্ছে কিনা। কোনও সমস্যা হলে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। তাঁর স্পষ্ট কথা, জোরে মাইক বাজলে শিশু থেকে বয়স্ক সবারই অসুবিধা হয় বলে অভিযোগ এসেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.