পশ্চিমবঙ্গ সরকারী শিক্ষায় মুসলিম ধ্যানধারণা জোর করে চাপানো হচ্ছে

পশ্চিমবঙ্গ সরকারী শিক্ষায় মুসলিম ধ্যানধারণা জোর করে চাপানো হচ্ছে। সাহিত্য ও ভাষায় এই প্রবণতা ভয়াবহ হয়ে উঠছে। প্রতিবাদ না করলে, শাসকদলের মতলব বুঝতে না পারলে, নীরবে মেনে নিলে — এই মারণ বিষ ধীর কিন্তু নিশ্চিত ভাবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পঙ্গু করে দেবে।
ভাষা-সাহিত্য পাঠের কিছু অংশ তুলে ধরি জনমানসে।

প্রথম শ্রেণির ‘আমার বই’

‘ছুটির মজা: শরৎ এসেছে’-তে আছে ‘চারিদিকে দুগ্গা পূজো আর ঈদের খুশি’ (281 পৃষ্ঠা)। শরৎকালে ঈদ প্রত্যেক বছর তো আসে না। হিজরী বছর দেড় সপ্তাহ (11 দিন) করে পিছিয়ে যায়। কিন্তু দুর্গাপূজা শরৎকালেই হয়।

দ্বিতীয় শ্রেণির ‘আমার বই’

154 পৃষ্ঠায় স্বাধীনতা সংগ্রামী গাধীজী,নেতাজী, ভগত সিং, অরবিন্দের মতো মনীষীদের সঙ্গে বেগম রোকেয়া আর আবুল কালাম আজাদকে রাখা হল কোন মানদণ্ডে..? কোনও ব্যাখ্যা নেই।
বাংলার বিখ্যাত কবি-সাহিত্যিকের রচনার পরিবর্তে জনৈক রহীম শেখের ‘ছুটি’ কবিতা কেন এল বোঝা যায় না (237 পৃষ্ঠা)।
সুশীল জানার এক বিচিত্র লেখা ‘তের পার্বণের ছড়া’ (274 পৃষ্ঠা) — কোনো পার্বণের নাম নেই। মমতা সরকার কি বাংলার পালাপার্বণের স্মৃতি ঘুঁচিয়ে দিতে চাইছে…??
‘আমার মায়ের ছবি’–তে মুসলমান রীতিতে এক মহিলার সাজ দেখা গেল (169 পৃষ্ঠা)। সচেতন ভাবেই হিন্দু সমাজ কে অপমান করা হচ্ছে কিনা পাঠক বিবেচনা করবেন।

পঞ্চম শ্রেণির ‘বাংলা ভাষাপাঠ’

বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব ‘দুর্গাপূজা ও ঈদ’ (58 পৃষ্ঠা)। ভাবুন একবার। ‘সবচেয়ে বড় ‘ যে কখনই দুটি হতে পারে না, কে বোঝাবে..?

ষষ্ঠ শ্রেণির ‘বাংলা ভাষা চর্চা’

স্বামী বিবেকানন্দকে রাখা হয়েছে মীর মশারফ হোসেনের নিচে (85 পৃষ্ঠা)। স্বামী বিবেকানন্দকে ছাত্রছাত্রীদের মনে ছোট করে আঁকার ষড়যন্ত্র নাকি…?

পত্ররচনার নমুনা শুরু হয়েছে মুসলমান রীতি দিয়ে। যথা– পাক জনাবেসু, / আব্বা। শেষে ঠিকানা লেখা হয়েছে– হাজি মহ. মহসিন স্কোয়ার, কলকাতা – ১৬ (76 পৃষ্ঠা)।

সপ্তম শ্রেণির ‘সাহিত্য মেলা’

‘একুশের তাৎপর্য’ –এর শেষে আছে ‘ভাষার জন্য প্রাণ দেওয়ার এমন অনন্য দৃষ্টান্ত পৃথিবীর অন্য কোথাও নেই'(21 পৃষ্ঠা)। একথা সম্পূর্ণ ভুল। ১৯৬১ সালে শিলচর রেল স্টেশনে ১৯ শে মে বাংলা ভাষার অধিকারের দাবিতে ছাত্র মিছিলে ব্যাপক পুলিশি অত্যাচার ও গুলি চালনার ঘটনা ঘটে। মৃত্যু হয় ১১ জন বাঙালি হিন্দুর।
জসীমউদ্দিনের বহু মাটিমাখা গাথা বাদ দিয়ে ‘বিষম দইরার পানি’ (117 পৃষ্ঠা) না থাকলে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের চলছিল না।

অষ্টম শ্রেণির ‘সাহিত্য মেলা’

‘অদ্ভুত আতিথেয়তা’ গদ্যটিতে আরবী-চরিত্রের জয়গান হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দু ছেলেমেয়েরা জানবে না তাদেরও এরকম বহু বীর বীরাঙ্গনা ছিলেন। ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুসলমানদের বীরত্বের পরিচয় নেই।

শরৎচন্দ্রের ‘পল্লীসমাজ’– এর যে অংশ নেওয়া হয়েছে, সেখানে রমা, বেণী ঘোষাল সামান্য আছে; নায়ক রমেশ আড়ালে, অথচ আলো পড়েছে ‘মোছলমানের ছ্যালে’ আকবর লেঠেলের উপর (70 পৃষ্ঠা)।

এই মতলবি অশিক্ষিতের হাতে বাংলার সংস্কৃতি কতটা নিরাপদ, ভাবার সময় এসেছে বন্ধু।

তথ্য সংগৃহীত: ডঃ অচিন্ত্য বিশ্বাস (প্রাক্তন উপাচার্য, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.