EXCLUSIVE: কোন ম্যাজিকে ৭ দিনেই পাশ আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজের ৩ অকৃতকার্য পড়ুয়া!

সাত দিনেই উলটপুরান। এশিয়ার প্রাচীনতম আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজে সাত দিন আগে প্রকাশিত স্নাতকোত্তরের ফলে দেখা গিয়েছিল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তপন গিরির অধীনে থাকা তিন ছাত্রই ফেল করেছেন। এই নিয়ে সমালোচনাও শুরু হয়েছিল চিকিৎসক মহলে। সাত দিন পরে হঠাৎ নোটিস বের করে রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানিয়ে দেওয়া হলো, ওই তিন ছাত্রই পাশ করেছেন।

গত শুক্রবার প্রকাশিত এমডিএস বা মাস্টার অফ ডেন্টাল সার্জারির ফাইনাল রেজাল্টে দেখা যায় আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজের প্রিন্সিপাল তপন গিরির নিজের ডিপার্টমেন্ট “প্রস্থডন্টিক্স এন্ড ক্রাউন ব্রিজ” বিভাগের তিন জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে তিন জনই অকৃতকার্য! এই তিন ছাত্র হলেন সমৃধি থাপা, আশিস কুমার বারুই ও ঋজু দাস।

তারপরেই অভিযোগ ওঠে কলেজের পরিকাঠামোর উপর। আঙুল ওঠে অধ্যক্ষ তপন গিড়ির উপরেও। ছাত্র-ছাত্রীরা অনেকেই বিক্ষোভ দেখান। তারপর সাত দিন বাদে নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, তিন পড়ুয়ায় পাশ করেছেন।

কিন্তু কীভাবে বদলে গেল পরীক্ষার ফল?

এই বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. রাজেন পান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “এই বিষয়ে ডিটেলস কন্ট্রোলার অফ এক্সামিনেশন বলতে পারবেন। যতদূর জানি, পুরনো সিস্টেমে নম্বর দেওয়া হয়েছিল। ভুল করে ক্যানসেলড ট্যাবুলেশন শিট জমা দেওয়া হয়েছিল। পরে যখন কন্ট্রোলার অফ এক্সামিনেশনের নজরে আসে, তখন মেন এক্সামিনারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসল ট্যাবুলেশন শিট বের করা হয়। তারপরেই রেজাল্ট বদল করা হয়েছে।”

তবে এ বিষয়ে সন্দেহ যাচ্ছে না কলেজের পড়ুয়াদের। তাঁদের বক্তব্য, এই ধরণের ঘটনা তো আগে কখনও হয়নি। এটা ডিপার্টমেন্টের নেগেলেজেন্সি ও পরিকাঠামোর খারাপ অবস্থার ফলেই হয়েছে। জানা গিয়েছে, এই ডিপার্টমেন্টে প্র‍্যাকটিক্যাল ক্লাসে সব চেয়ে বেশি জরুরি যে দু’টি জিনিস, সে দু’টি হল: সেরামিক ফার্নেস এবং কাস্টিং মেশিন। অভিযোগ, দু’টিই অনুপস্থিত আর আহমেদ কলেজে। এই বিষয়ে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস বাইরে করানো হয়। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই স্নাতকোত্তর ছাত্র-ছাত্রীরা হাতেকলমে কাজ শেখার সুযোগ পাচ্ছেন না এই বিভাগে। সেই সঙ্গে অভিযোগ, প্রিন্সিপালের নিজের দায়িত্বে থাকা এই ডিপার্টমেন্টে রেগুলার থিয়োরি ক্লাস-ও হয় না।

কলেজের এক ছাত্রনেতা অভিষেক হালদার জানিয়েছেন, “এটা সম্পূর্ণ আমাদের প্রিন্সিপ্যালের গাফিলতির ফলে হয়েছে। উনি ক্লাস নেন না। সবসময় পার্টি নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। তার ফল ভোগ করতে হয়েছে ওই তিন পড়ুয়াকে। কিন্তু রেজাল্ট বেরনোর পর সমালোচনা শুরু হওয়ার নিজের মুখরক্ষার জন্যই ফের তাদের পাশ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা খুবই খারাপ একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল। এর ফলে কলেজেরই সুনাম নষ্ট হলো।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.