সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও শক্তিশালী হচ্ছে কোভিড-১৯ (COVID-19) ভাইরাস। বাড়াচ্ছে সংক্রামক ও মারণ ক্ষমতা। দ্বিতীয় ধাক্কাতেই তা বুঝিয়ে দিয়েছে করোনা ভাইরাস। তবে এবার মারণ জীবাণুর আরও এক নয়া স্ট্রেনের হদিশ দিল ভিয়েতনাম (Vietnam)। হ্যানয় এবং হো চি মিন শহরের গবেষণাগারে পরীক্ষানিরীক্ষার পর ভিয়েতনামের বিজ্ঞানীদের দাবি, করোনার ভারতীয় স্ট্রেন ও ব্রিটেন স্ট্রেনের সংমিশ্রণে এক নতুন ধরনের ভাইরাস জন্মেছে, যারা বাতাসে আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। মহামারী নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে ভিয়েতনামের এই দাবি ঘিরে নতুন করে আতঙ্কের আবহ বিশ্বজুড়ে।
গত বছর, করোনা ভাইরাসের (Coronavirus)প্রথম ধাক্কা থেকে নিজেকে অনেকটাই বাঁচিয়ে রেখেছিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছোট্ট দেশ ভিয়েতনাম। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউ আর সামলাতে পারেনি। সম্প্রতি সে দেশে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। গত একমাসে ৬৮০০ জনের সংক্রমণের খবর মিলেছে। মৃতের সংখ্যাও পঞ্চাশের কাছাকাছি। এই অবস্থায় করোনা নিয়ে গবেষণার তাগিদ বেড়েছে ভিয়েতনামের বিজ্ঞানীদের মধ্যে। তারপরই গবেষণা শুরু হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী নুয়েন জানিয়েছেন, ‘‘আমরা জিন সিকোয়েন্সিং (gene sequencing) করছিলাম। তাতে এক করোনা রোগীর দেহে এমন একটি স্ট্রেন মিলেছে, যেটি ভারতীয় ও ব্রিটেন স্ট্রেনের মিশ্রণ।’’ তিনি আরও জানান, ‘‘এর বিশেষত্ব এই যে বাতাসে এটা অনেক দ্রুত ছড়ায়। গলায় থাকা লালারসের মধ্যে থেকেও এর সংক্রমণ ক্ষমতা অনেক বেশি।’’ প্রাথমিকভাবে নয়া স্ট্রেন সম্পর্কে এটুকুই জানা গিয়েছে। আরও বিস্তারিত গবেষণার পর ভিয়েতনাম এ নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
কিন্তু এই নয়া স্ট্রেন কি কারও শরীরে মিলেছে? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য মেলেনি ভিয়েতনাম প্রশাসনের তরফে। তবে ভিয়েতনামের সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউশন অফ হাইজিন অ্যান্ড এপিডেমিওলজির তরফে জানা গিয়েছে, তাঁদের প্রতিষ্ঠানে ভরতি হওয়া ৩২ জনের মধ্যে চারজনের শরীরের নমুনা সংগ্রহ করে জিন সিকোয়েন্সের মাধ্যমে ভিন্নতর ভ্যারিয়েন্টের হদিশ মিলেছে। তবে সেটাই ভারতীয়-ব্রিটেন স্ট্রেনের মেলবন্ধনে তৈরি নতুন প্রজাতি কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন তাঁরা। এখনও পর্যন্ত সাতটি স্ট্রেন চিহ্নিত হয়েছে ভিয়েতনামে – বি.১.২২২, বি.১.৬১৯, ডি৬১৪জি, বি.১.১.৭। এগুলি সবই ব্রিটেন স্ট্রেন, আর ভারতীয় স্ট্রেন বি.১.৩৫১, এ.২৩.১ এবং বি.১.৬১৭.২। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দাবি, এই নয়া স্ট্রেনের কারণে সম্প্রতি ভিয়েতনামে এত দ্রুত ছড়িয়েছে করোনা সংক্রমণ।