‘নিউ নর্মালে’ ওয়ার্ক ফ্রম হোমই দস্তুর হয়ে উঠেছে। সরকারি থেকে বেসরকারি সংস্থা, সকলেই তাদের কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজের সুযোগ করে দিচ্ছে। এবার থেকে সেই সুযোগ পাবেন কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) ওসি ও অতিরিক্ত ওসিরা। শনিবার একটি ভারচুয়াল বৈঠকে থানার ওসি ও অতিরিক্ত ওসিদের তা মৌখিকভাবে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র।
করোনা পরিস্থিতিতে অপরাধ দমনের সঙ্গে সঙ্গে এলাকার দুঃস্থ মানুষদের হতে খাবারও তুলে দিচ্ছে প্রত্যেকটি থানা। সেখানে প্রত্যেকদিন কাজের চাপ বেড়েই চলেছে থানার ওসি ও অতিরিক্ত ওসিদের। এ ছাড়াও প্রত্যেকদিন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন কোনও না কোনও পুলিশকর্মী। এদিন পুলিশ কমিশনার বৈঠকে জানান, সপ্তাহে এবার একদিন করে ‘ছুটি’ নিতে পারবেন থানার ওসি ও অতিরিক্ত ওসিরা। যেহেতু তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন, তাই সম্পূর্ণ ছুটি না নিয়েই ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ করতে হবে তাঁদের। লালবাজারের এক আধিকারিক জানান, সাধারণভাবে কনস্টেবল থেকে সাব ইন্সপেক্টররা সপ্তাহে একদিন ছুটি পান। পুলিশের অন্যান্য বিভাগে সাধারণভাবে ওসি বা অতিরিক্ত ওসিরাও ছুটি পান। কিন্তু থানার ওসি বা অতিরিক্ত ওসিদের ক্ষেত্রে তা হয়ে ওঠে না। তাঁরা যাতে পরিবারের সঙ্গে সপ্তাহে একদিন সময় কাটাতে পারেন, এবার সেই ব্যবস্থাই করছেন পুলিশ কমিশনার।
থানার ওসি বা অতিরিক্ত ওসিরা সপ্তাহে একদিন ‘ছুটি’ নিলেও তাঁদের অন্য আধিকারিক ও উর্ধবতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখতে হবে। আক্ষরিক অর্থে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’। কোনও সমস্যা এলে ফোনেই তা মেটাতে হবে। যদিও বড় কোনও ঘটনা যদি ঘটে, তখন তাঁরা ঘটনাস্থলে যাবেন। আবার ওসি ও অতিরিক্ত ওসি যাতে একইদিনে ছুটি না নেন, সেদিকেও নজর রাখতে বলা হয়েছে।
এদিকে, এদিনই পুলিশ কমিশনার থানার প্রত্যেকটি ফাইল ‘ডিজিটাল’ করার নির্দেশ দিয়েছেন। ভারচুয়াল বৈঠকে তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী, থানাগুলির মালখানায় মামলার যত ফাইল আছে, জুলাইয়ের শেষের মধ্যেই প্রত্যেকটির ডিজিটাল কপি তৈরি করতে হবে। তার জন্য একটি বিশেষ সফটওয়্যারের সাহায্য নিতে হবে। গোয়েন্দা বিভাগ ওই সফটওয়্যার দিয়ে সাহায্য করবে। এই ব্যাপারে থানাগুলির প্রতিযোগিতার উপরও জোর দিয়েছে লালবাজার। যে থানা প্রথমে প্রত্যেকটি নথি ডিজিটাল করার কাজ শেষ করবে, সেই থানাকে পুরস্কার দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে। পুলিশকর্তাদের মতে, কাগজের ফাইল কোনও কারণে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে মালখানায় থাকা নথিগুলিতে ধরতে পারে উই। এ ছাড়াও বৃষ্টির জলে ভিজে বা অন্যভাবেও নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়। সেই কারণেই প্রত্যেকটি নথিকে কম্পিউটার বন্দি করার ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।