একজন পাসিং ফুটবলের মাস্টার। আর একজন টোটাল ফুটবলে গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। একজন পেপ গুয়ার্দিওলা (Pep Guardiola)। অপরজন টমাস টুখেল। দুই মাস্টার টেকটিশিয়ানের লড়াইয়ে সাম্প্রতিক অতীতের অন্যতম সেরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের সাক্ষী থাকল ফুটবল বিশ্ব। আর এই লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসলেন জার্মান টুখেল। তাঁকে যিনি চ্যাম্পিয়ন (UEFA Champions League) করলেন তিনিও একজন জার্মান।
ম্যাচ শুরুর আগে থেকেই চেলসির বিরুদ্ধে ধারে ও ভারে পেপের ম্যাঞ্চেস্টার সিটিকেই (Manchester City) এগিয়ে রেখেছিল ফুটবল মহল। তাঁর মগজাস্ত্র ভেদ করে ফাইনালের মঞ্চে বাজিমাত করা তো চারটি খানি কথা নয়। কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়াল পেপের অতিরিক্ত চিন্তা ও স্ট্র্যাটেজি। উলটো দিকে, ঠান্ডা মাথায় সহজভাবে ছেলেদের খেলিয়েই শনি-রাত নিজের নামে করে রাখলেন টুখেল। তাই তো ম্যাচ শেষে রানার্স আপ হয়েও যেন তাঁকে কোণঠাসা দেখাচ্ছিল। নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে হয়তো আক্ষেপ রয়ে গিয়েছিল তাঁর। ফাইনালের মতো লড়াইয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করা যে ঠিক হয়নি, তা হয়তো হাড়ে হাড়ে টের পেলেন। যদিও মুখে অন্য বলছেন। ম্যান সিটি কোচ বলে দেন, “তখন দলের জন্য যেটা ঠিক মনে হয়েছিল, সেটাই করেছি।”
অন্যদিকে কার্যত আন্ডার ডগ হয়ে নেমেই বাজিমাত করলেন টুখেল। এমনকী মাঠে নামার সময় একনজর ট্রফির দিকেও রাখেননি। লক্ষ্যে স্থির থেকে এগিয়ে গিয়েছেন। এবার নয়তো নেভার মানসিকতা নিয়ে প্রতিনিয়ত কাউন্টার অ্যাটাকে গিয়েই ম্যান সিটিকে চাপে ফেলেছেন তাঁর ছেলেরা। আর ঠিক ৪২ মিনিটে স্বপ্নের ইতিহাস রচনা করে চেলসি। সিটির ডিফেন্সের ভুলের সুযোগ নিয়ে গোলকিপারকে পিছনে ফেলে ফাঁকা জালে বল জড়িয়ে দেন চেলসিতে রেকর্ড অঙ্কে সই করা কাই হাভার্টজ।
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের নাম খোদাই করল চেলসি (Chelsea)। ড্রেসিংরুমে সেলিব্রেশনের মেজাজো ছিল তাই অন্যরকমই। আর উলটোদিকে গত দু’মাসে মধ্যে তৃতীয়বার নকআউট পর্বে এসে স্বপ্নভঙ্গ হল সিটির। ক্ষুরধার মগজাস্ত্রও যে হারের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে, শনিবার পোর্তোর স্টেডিয়ামের ৯০ মিনিটে যেন সে শিক্ষাই দিয়ে গেল গুয়ার্দিওলাকে।