এই বছরেই টিকা পেতে চলেছেন সকল দেশবাসী। টিকা নিয়ে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে শুক্রবার এই দাবি কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী প্রকাশ জাওড়েকরের (Prakash Javadekar)। তাঁর দাবি, ডিসেম্বরের মধ্যেই সবাই টিকা পেয়ে যাবেন।
রাজনৈতিক মহলের মতে, টিকা নিয়ে কেন্দ্রের এই দাবি নতুন নয়। এর আগে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনও একই দাবি করেছিলেন। তবে, কীভাবে টিকার (Vaccine) কাজ শেষ হবে সেই রূপরেখা দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে ব্যর্থ হন তিনি। এদিন অবশ্য জাওড়েকর বলেন, “ভারতে টিকাকরণ ২০২১ সাল শেষ হওয়ার আগেই সম্পন্ন হবে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পক্ষ থেকে এবিষয়ে ব্লু প্রিন্ট তৈরি হয়ে গিয়েছে। যাতে ১০৮ কোটি দেশবাসীর জন্য ২১৬ কোটি টিকার ডোজ দেওয়ার কাজ ডিসেম্বরের মধ্যেই হয়ে যাবে।” দেশবাসীর জন্য টিকার কথা ঘোষণার পাশাপাশি এদিন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকেও (Rahul Gandhi) নিশানা করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাওড়েকর। টিকা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাহুল অভিযোগ করেন, দেশের মাত্র ৩ শতাংশ মানুষেরই এখনও পর্যন্ত টিকাকরণ হয়েছে বাকি ৯৭ শতাংশ বাকি। জবাবে জাওড়েকর এদিন বলেন, “টুলকিটকাণ্ড থেকে নজর ঘোরাতেই কংগ্রেস সাংসদ এইসব অভিযোগ করছেন। মানুষ সব বোঝেন।’’
গত বুদ্ধপূর্ণিমার দিন করোনা যুদ্ধে টিকাকেই ফের হাতিয়ার করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। তারপর থেকে দেশের একশো কোটির বেশি মানুষের টিকাকরণ নিয়ে সরব বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাঁরা নিশ্চিতভাবে দাবি করছেন ঠিকই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই দাবি কীভাবে বাস্তবায়িত হবে? কোভিড-যুদ্ধে এই বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ভারতে শুরু হয়েছে টিকাকরণ। গত সাড়ে চার মাসে এখনও পর্যন্ত কুড়ি কোটি মানুষ টিকা পেয়েছেন। এটা ঠিক, শুরুর থেকে এই মে মাস পর্যন্ত করোনার টিকাকরণের গতি অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। তবুও সন্দেহ, বাকি সাত মাসে আশি কোটির বেশি মানুষের ভাগ্যে টিকা জুটবে কীভাবে? কারণ, সময়ের হিসাবের সঙ্গে সংশয় তৈরি হচ্ছে টিকার হিসাব নিয়েও।
প্রতিনিয়তই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক থেকে দাবি করা হচ্ছে, এই বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ২১৬ কোটি ডোজ তৈরি হয়ে যাবে। কীভাবে তা তৈরি হবে, সেই ব্যাপারেও ইতিমধ্যে তথ্য দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই মে মাসে শেষ দিকে দাঁড়িয়ে দেখা যাচ্ছে, কোভিশিল্ড, কোভ্যাক্সিন এবং স্পুটনিক-ভি ছাড়া বাকি টিকাগুলির এখনও ছাড়পত্রই আসেনি। যদিও দিন কয়েক আগে কেন্দ্রে জানায়, বর্তমানে দেশে প্রতি মাসে ৬ কোটি ৩০ লক্ষ করোনার টিকা উৎপাদন হচ্ছে। জুলাই মাস থেকে যা বৃদ্ধি পেয়ে ১২ কোটি হবে। অঙ্ক বলছে, এই হিসাবে এই বছরে মোট ৭২ কোটি টিকা উৎপাদন হওয়ার কথা। সেখানে কেন্দ্র ২১৬ কোটি টিকার হিসাব কোথায় পাচ্ছে, তা বলা বেশ মুশকিল বিশেষজ্ঞদের কাছে।