জল্পনা ছিল৷ যা সত্যি হল বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বিজেপিতে যোগদানের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই৷ তাঁকেই গুজরাট থেকে রাজ্যসভার প্রার্থী করল বিজেপি৷
সংসদ ভবনে বিজেপির সর্বভারতীয় কার্যকরী সভাপতি জে পি নাড্ডার উপস্থিতিতে জয়শঙ্কর বিজেপিতে যোগ দেন সোমবার৷ আদতে কূটনীতিক এই ব্যক্তিত্ব ১৯৭৭ সালের আইএফএস ব্যাচের অফিসার৷ এর আগে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব সামলেছেন বিদেশ সচিব হিসেবে৷ প্রথম মোদী সরকার মেয়াদের শেষের দিকে অবসর নেন তিনি৷
দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেই জয়শঙ্করকে মন্ত্রী হিসাবে বেছে নেন প্রধানমন্ত্রী মোদী৷ তাঁকে দেওয়া হয় বিদেশ দফতরের দায়িত্ব৷ যা এবারের মন্ত্রিসভার অন্যতম সেরা চমক বলেই বিবেচিত৷ কিন্তু মন্ত্রী হলেও সংসদের কোন কক্ষেরই সদস্য ছিলেন না জয়শঙ্কর৷ ফলে আগামী ৬ মাসের মধ্যে তাঁকে সংসদের যেকোনও একটি কক্ষের সদস্য হতেই হত৷
এবারের লোকসভা ভোটে লড়েছেন অমিত শাহ ও স্মৃতি ইরানি৷ তাঁরা দুজনেই জয় পেয়েছেন৷ আদাবানীর গান্ধীনগর কেন্দ্র থেকে জয় পেয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি৷ অন্যদিকে, আমেঠি থেকে রাহুল গান্ধীকে পরাস্ত করে ‘জায়েন্ট কিলারে’র হিসাবে তকমা পেয়েছেন স্মৃতি৷ শাহ ওবং স্মৃতি দু’জনেই ছিলেন গুজরাট থেকে রাজ্যসভার সদস্য৷ তাঁরা লোকসভা ভোটে জয় পাওয়ায়া ওই দুটি আসন ফাঁকা ছিল৷
গুজরাটে রাজ্যসভায় দুটি ফাঁকা আসনের একটিতে লড়বেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর৷ অপরটিতে লড়বেন যুগলজী মাথুরজী ঠাকো৷ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে এই দুই বিজেপির প্রার্থীর জয় নিয়ে কোনও সংশয়ই নেই৷
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত হন জয়শঙ্কর৷ ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে সুজাতা সিংকে সরিয়ে তাঁকে বিদেশ সচিব পদে বসানো হয়৷ গত চার দশকে তিনিই সবথেকে বেশি সময় ধরে বিদেশ সচিবের দায়িত্ব সামলেছেন। একসময় চিনের রাষ্ট্রদূত ছিলেন তিনি। লাদাখে অনুপ্রবেশ রুখতে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন জয়শঙ্কর। ডোকলাম সংঘাত এর সময়েও গুরুদায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনিই।
চাকরির প্রথম দিকে রাশিয়ায় ছিলেন জয়শঙ্কর। এরপর টোকিও সহ ইউরোপের একাধিক রাজধানী শহরে কাজ করেছেন তিনি। শ্রীলঙ্কার ভারতীয় পিস কিপিং ফোর্সের পলিটিক্যাল অ্যাডভাইজার ও সচিব হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। ২০১৮ তে সরকারি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়ে তিনি টাটা গ্রুপের গ্লোবাল করপোরেট আফেয়ার্সের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন।
এবার মন্ত্রিসভায় যে সুষমা স্বরাজ থাকবেন না, তা আগেই জানা গিয়েছিল৷ সেই জায়গাতেই নিয়ে আসা হয় জয়শঙ্করকে৷ উল্লেখ্য, আমেরিকার সঙ্গে পরমাণু চুক্তির সময় ২০০৫ সালে ভারতের যে টিম কাজ করেছিল তার অন্যতম সদস্য ছিলেন জয়শঙ্কর।