দেখুন, টাকা নিয়ে ধরা পড়লো চারজন। তারা একবারও বললোনা, না টাকা নিইনি। তারা বললো; ওরাও তো তয় নিয়েছিলো, ওদের কেনো ধরলো না? এবার আপনাদের ভোটে জয়ী মুখ্যমন্ত্রী, সব কাজ ফেলে ওখানে ছুটে গেলেন এবং বসে থাকলেন ছয় ঘন্টা। হ্যাঁ, ছুটেই গেলেন… যিনি বিগত দেড় মাস হুইল চেয়ারে ঘুরছিলেন। তারপর তারা জামিন পেলো, পঞ্চাশ হাজার টাকা… উঁহু, ওরা নিজেরা দেবেনা, দেবে সরকার। অর্থাৎ আমার আপনার টাকা। অর্থাৎ আমরা টাকা দিয়ে চারটে চোরকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসবো। সেতো হলোনা, যাক।
তারপর জেলে যেতেই অসুস্থ হয়ে পড়লো সবাই। প্রত্যেকে এক একজন কি ভালো অভিনেতা ভাবা যায়!! একজন হুইল চেয়ারে ঘোরে তো অন্যরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারপর তাদের জেল হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে নিয়ে আসা হয় এসএসকেএম-এ। সেখানে তাদের বেড পেতে বিন্দুমাত্র অসুবিধে হলোনা। এদিকে নাকি বেড, অক্সিজেনের আকালে ভুগছে শহর, মানুষ মরছে বিনা চিকিৎসায়। সৎ, ভালো মানুষ গুলো বেড পাচ্ছেনা, তাদের বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চলছেনা… কিন্তু চোর-চামারগুলো বেড পেয়ে যাচ্ছে। এবং তাদের চিকিৎসা হচ্ছে ওই সৎ, ভালো মানুষগুলোর পয়সায়, আমার আপনার পয়সায়। আমার আপনার পয়সায় দিব্যি খেয়ে দেয়ে আরামে এসিতে আয়েস করছে তারা। মিডিয়া খবর দেখাচ্ছে, কার বউ এলো, কার প্রেমিকা এলো, কে লেবু টিপে ভাত খেলো, কে পায়চারী করলো… কিন্তু একটি মিডিয়াও যারা এই দুর্দান্ত অভিনয়ের সিরিয়াস চিকিৎসা করে চলেছে তাদের জানতে চাইলোনা কি হয়েছে, আদৌ কিছু হয়েছে কিনা। আমি আপনিও কিন্তু খানিকটা বউ আর প্রেমিকার রগরগে মশলা নিয়েই ব্যস্ত…
আর ওদিকে তাদের তো বিন্দুমাত্র চিন্তা করতে হচ্ছেনা, মুখ্যমন্ত্রী নিজেই উকিল জোগাড় করছেন, একেকজন বাঘা বাঘা উকিল। আমার আপনার জীবনে কোনও আইনি সংকট নেমে আসলে আমাদের প্রায় ৯৫% মানুষ এই উকিলদের নাগালই পাবোনা, তাদের পারিশ্রমিক দিতেই পারবোনা… কিন্তু এখন আমরা দেবো, এই চারজন চোরকে বাঁচাতে। হ্যাঁ, এই উকিলরা বিপুল পরিমান যে টাকা নেবেন সেটা আমার আপনার পকেট থেকেই যাবে। জামিনের অঙ্কটাও বাড়বে… সেটাও তো আমাদেরই…
বলেছিলাম না??
বাংলা নিজের চোরদেরই চায়।