করোনার (Covid-19) কবলে পড়ে যেমন প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ, তেমনই একের পর এক মৃত্যু হচ্ছে চিকিৎসকদের। পরিসংখ্যান বলছে, গোটা ভারতে রবিবার প্রায় ৫০ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি আশঙ্কার বিষয়। এখনও পর্যন্ত করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ২৪৪ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে।
এক সপ্তাহ আগে আনস মুজাইদ (Anas Mujaid) নামে এক চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন। তাঁর বয়স ছিল ২৫ বছর। দেশে সম্ভবত তিনিই কনিষ্ঠতম চিকিৎসক যিনি করোনায় প্রয়াত হলেন। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রাণ হারান তিনি। তাঁর পরিবার ও বন্ধুদের থেকে জানা গিয়েছে, মুজাহিদ করোনা আক্রান্ত ছিলেন। চিকিৎসায় থাকাকালীন ইন্ট্রাক্রেনিয়াল রক্তক্ষরণ হয় তাঁর। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ফলে প্রয়াত হন তিনি। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (IMA)-র তরফে জানানো হয়েছে, বিহারে সবথেকে বেশি চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। ৬৯ জন চিকিৎসকের মৃত্যু দেখেছে এই রাজ্য। উত্তর প্রদেশে ৩৪ ও দিল্লিতে ২৭ জন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছেন।
গত বছর গোটা দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৭৩০ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছিল। IMA সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। কিন্তু সংসদে এই তথ্য প্রকাশিত হয়নি। সরকারের কাছে হিসাবও নেই। মিডিয়া রিপোর্ট বলছে মাত্র ৩ শতাংশ চিকিৎসককে এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। ৬৬ শতাংশ স্বাস্থ্য কর্মী ভ্য়াকসিন পেয়েছেন। IMA-র তরফে জানানো হয়েছে এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা প্রবল চাপের মধ্যে কাজ করছেন এবং অতিরিক্ত কাজ করেছেন। তাঁরা কখনও কখনও কোনও বিশ্রাম ছাড়াই টানা ৪৮ ঘন্টা কাজ করছেন। ফলে তাঁদের সংক্রমণের শিকার হওয়ার মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য কর্মীদের সংখ্যা বাড়াতে সরকারের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে জানিয়েছে IMA। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে একদিন অক্সিজেন সংকটের মতো চিকিৎসকদের সংকটেও ভুগবে দেশ।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় গোটা দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ লক্ষ ৬৩ হাজার ৫৩৩ জন। সোমবারের তুলনায় আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কম। সোমবার ২ লক্ষ ৮১ হাজার ৩৮৬ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। নিঃসন্দেহে এটি কিছুটা স্বস্তিদায়ক। তবে আশা জাগাচ্ছে দৈনিক সুস্থতার হার। সোমবারের তুলনায় সুস্থতার হার অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। সুস্থতার হার এদিন দৈনিক সংক্রমণের থেকে বেশি তো অবশ্যই। তাছাড়া এদিন সুস্থতার সংখ্যা পেরিয়েছে ৪ লক্ষের গণ্ডি। সোমবার ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার ৭৪১ জন সুস্থ হয়েছিলেন। আর মঙ্গলবারের রিপোর্ট বলছে সুস্থতার সংখ্যা গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ লক্ষ ২২ হাজার ৪৩৬ জন।