ব্ল্যাক ফাঙ্গাস মারাত্মক হয়ে ওঠার আগেই ধরা প্রয়োজন, উপায় জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা

কোভিড রোগীদের মধ্যে মিউকোরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ধরা পড়ছে দেশের নানা জায়গায়। এবং সংখ্যাটা দিন দিন বাড়ছেও। এতদিন গুজরাত, মহারাস্ট্র, দিল্লি, কর্নাটকের মতো বেশ কিছু রাজ্যে দেখা যাচ্ছিল। এখন দেখা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গেও। কোভিডের মতোই এই রোগও যত তাড়াতাড়ি ধরা পড়ে, ততই ভাল। দ্রুত চিকিৎসা শুরু করলে সংক্রমণ সামাল দেওয়া সম্ভব। না হলে মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস।

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস তাড়াতাড়ি ধরার উপায় কী

নাক-কান-গলার ডাক্তার বা ইএনটি চিকিৎসক চিরজিৎ দত্ত জানালেন, সচেতনটা বাড়ানো সবচেয়ে আগে প্রয়োজন। ‘‘উপসর্গগুলি খেয়াল রাখতে হবে। জয় বাংলার মতো হঠাৎ চোখ লাল হয়ে যাওয়া, মাথা ধরা, মুখ ফুলে যাওয়া, মুখের এক ধারটা অবশ হয়ে যাওয়া, দাঁত বা চোয়ালে ব্যথা বা নাকে কালচে দাগ কিংবা নাক থেকে রক্ত পড়ার মতো কিছু সাধারণ উপসর্গ সকলেরই জেনে রাখা প্রয়োজন। এর মধ্যে কোনও একটা দেখা গেলেও সঙ্গে সঙ্গে ইএনটি দেখানো উচিত। তবে সন্দেহ করার প্রবণতা তৈরি করতে হবে,’’ বললেন তিনি।


যে কোভিড আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে এই সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি। বিশেষ করে যাঁদের স্টেরয়েডের ওষুধ দেওয়ার ফলে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে এসেছে, কিংবা যাঁদের ডায়াবেটিস আছে বা যাঁদের রোগ-প্রতিরোধক ক্ষমতা অন্য কোনও কারণে কম, তাঁদের বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন।


ইএনটি চিকিৎসক অর্জুন দাশগুপ্তের মতে, ‘‘যাঁদের ডায়েবিটিস রয়েছে, বা যাঁদের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কম, তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি হতে হোক, বা না হোক, কোভি়ড সেরে যাওয়ার পর ইএনটি’র পরামর্শ নেওয়া আবশ্যিক। তবে শুধু একবার দেখালে চলবে না, বেশ কয়েক মাস ধরে অন্তত ২ থেকে ৩টে ভিজিট প্রয়োজন। ডাক্তারদেরও পরীক্ষা করার সময়ে শুধু আলো ফেলে দেখলে হবে না, নাকের এন্ডোস্কোপি করাতে হবে।’’ তিনি বুঝিয়ে বললেন, ‘‘এন্ডোস্কোপি করালে নাকের ভিতর কোনও রকম অস্বাভাবিক কালচে দাগ রয়েছে কিনা বোঝা যাবে। তবে নিশ্চিত হতে গেলে বায়োপ্সি করা দরকার। কোভিডের মতোই এই সংক্রমণও নাক থেকে ফুসফুসে পৌঁছে গেলে, সেটা মারাত্মক রূপ নিয়ে নেয়।’’

চিকিৎসকেরা সকলেই বারবার বলছেন, এই রোগ আগেও ছিল। কিন্তু বহুদিন খুব কম রোগী পেয়েছেন তাঁরা। গত বছর থেকে হু হু করে বাড়ছে এই সংখ্যা। এবং বেশির ভাগই কোভিড আক্রান্ত। তবে তাঁরা আশ্বাস দিচ্ছেন, একদম গোড়াতেই যদি এই রোগ ধরে ফেলা সম্ভব হয়, তা হলে তেমন ভয়ের কারণ নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.