অক্সিজেনের পর এবার কোভিড ভ্যাকসিন নিয়েও রাজনীতি করছে আম আদমি পার্টি (AAP) : যে কারণে তারা ভুল
অক্সিজেন সংকট নিয়ে নোংরা রাজনীতির পর এখন নিজেদের ভ্যাকসিনেশন করতে না পারার গাফিলতি থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতে এখন নানান অজুহাত দিচ্ছে দেশের রাজধানীর AAP সরকার। সোমবার দিল্লির সহকারী মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া কেন্দ্রের উপর তীর বিধে বলেছেন যে তাদের “অর্ডার” করা ভ্যাকসিন কেন্দ্র সাপ্লাই না করে পারার জন্য তারা সাবলীলভাবে টিকাকরণ করতে পারছেন না।
সিসোদিয়া দাবী করেছেন যে ১৮-৪৪ বয়সের মানুষদের জন্য করা তাদের ১.৩৪ কোটি ভ্যাকসিন অর্ডারের মধ্যে কেন্দ্র মে মাসে মাত্র ৩.৫ লাখ ডোজ দিয়েছে। সিসোদিয়া দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর করা দাবি গুলির পুনরাবৃত্তি করেছেন, যখন এপ্রিল মাসে কেন্দ্র বলেছিল যে রাজ্যরা চাইলে ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারকের কাছে ভ্যাকসিন অর্ডার করতে পারে।
চিঠির কপিগুলি টুইট করে তিনি বলেছেন যে কেন্দ্র তাদেরকে বলেছে যে তারা মে মাসে ৩.৫ লক্ষ ডোজ ভ্যাকিসন পাবে। তার টুইটে কেন্দ্র সরকারের উপর রাগ উগলে দুয়ে বলেছেন ” বিজেপি কেবলমাত্র মিথ্যার রাজনীতি করছে এবং এটা বলছে যে দিল্লি সরকার কেবলমাত্র ৫.৫ লক্ষ ডোজের অর্ডার দিয়েছে”।
সহকারী মুখ্যমন্ত্রী এটাও উল্লেখ করেছেন যে কেন্দ্রীয় সরকার তাদের “অর্ডার” করা ভ্যাকসিন দিতে মানা করেছে।
বিজেপি আপ এর নোংরা রাজনীতির জবাব দিয়েছে
এই সব অভিযোগগুলির উত্তরে বিজেপি বলেছে যে দিল্লি সরকার এই মিথ্যাগুলি বলে কেবলমাত্র ছলচাতুরি করে হতবুদ্ধির পরিচয় দিয়েছে। তারা দিল্লি শহরে”অতুলনীয় কোভিড-১৯ সংকট” এর জন্য কেজরিওয়াল সরকারকে দোষারোপ করেছে। বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র সেই চিঠিগুলিও শেয়ার করেছেন এটা প্রমান করতে যে কেজরিওয়াল সরকারের করা অভিযোগ গুলো নিতান্তই মিথ্যা এবং এটি কেবলমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারের মানহানির জন্য করা।
তিনি বলেছেন যে চিঠিতে স্পষ্টভাবে লেখা যে দিল্লি সরকার কেবলমাত্র দুটি প্রস্তুতকারকের কাছ থেকে ভ্যাকসিন কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে দিল্লি সরকার।
সম্বিত পাত্র বলেছেন যে ২৬শে এপ্রিল ভারত সরকারকে লেখা দিল্লির চিঠিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে না দিল্লি সরকার ৬৭ লক্ষ কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন কেনার পরিকল্পনা করছে যথাক্রমে সিরাম ইনস্টিটিউট এবং ভারত বায়োটেকের কাছ থেকে। এখানে কোথাও অর্ডার করে দেওয়ার কথা বলা নেই, সম্বিত পাত্র পরিষ্কার করে বলেছেন।
“আপ সরকারের দ্বারা প্রকাশিত দুটি চিঠিই ভালো করে পড়ে দেখুন, আপনি দেখতে পাবেন যে এগুলি ১.৩৪ কোটি ভ্যাকসিন ‘অর্ডার করে দেওয়ার চিঠি’ নয় যেটা দিল্লির সি এম কেজরিওয়াল বলেছেন। এগুলি কেবলমাত্র ‘সাগ্রহের চিঠি'( আমরা কেনার পরিকল্পনা করছি), এগুলিকে অর্ডার বলা চলে না!” বলেছেন বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্র।
চিঠিগুলো ভালোভাবে পরিদর্শন করলে বোঝা যায় যে সম্বিত পাত্র যেগুলি বলেছেন সেগুলি সঠিক। চিঠিতে উল্লেখ করা আছে যে দিল্লির আপ সরকার ” কেনার পরিকল্পনা করছে”। এখানে কোথাও এই কথা লেখা নেই যে তারা প্রস্তুতকারকদের কাছে অর্ডার করে দিয়েছে, যেটা তারা এখন দাবি করছে ।
উল্লেখযোগ্যভাবে মনীশ সিসোদিয়া যখন টুইট করেছেন তখন কেবলমাত্র আন্ডারলাইন করেছেন যে “procure 67 (Sixty Seven) lakh doses of Covaxin and Covishield” কিন্তু তিনি সুবিধামত “planing” শব্দটিকে ছেড়ে দিয়েছেন, যেটাতে স্পষ্ট হয়ে যায় যে তারা অর্ডার দেয়নি বরং অর্ডার দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন অথচ এলহন তারা অর্ডার দেওয়ার দাবি করে বেড়াচ্ছেন।
এখন এটা স্মরণ করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে যে কিভাবে কেজরিওয়াল অক্সিজেন সরবরাহ নিয়ে ন্যাকা কান্না কেঁদেছিলেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করেছিলেন। ব্যাপারটি এতটাই চরমসীমায় পৌঁছেছিল যে প্রথমে দিল্লি হাইকোর্ট ও পরে সুপ্রিম কোর্টকে মধ্যস্থতা করতে হয়েছিল।
কেজরিওয়াল প্রথমে বলেছিলেন যে দিল্লিতে রোজ ৯৭৬ মেট্রিক টন অক্সিজেন দরকার চাহিদা পূরণের জন্য কিন্তু কেন্দ্র সরকার অডিটের মাধ্যমে তা পরিষ্কার করতে চাইলে দিল্লি সরকার তাতে না করে দেয়।
পরে কোর্টের আদেশ মেনে যখন কেন্দ্র ৭৩০ মেট্রিক টন অক্সিজেন সরবরাহ করার পর কেজরিওয়াল ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে বিবৃতি দেয় যে তাদের অক্সিজেন ঘাটতি মিতে গেছে এবং তাদের পর্যাপ্ত অক্সিজেন ছিল চাহিদা মেটানোর জন্য।
চিঠিগুলির ছবি নীচে দেওয়া হল।