উত্তরবঙ্গের পর এবার ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাস দেখতে নন্দীগ্রামে যাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। শনিবার তিনি নন্দীগ্রাম সফরে যাবেন। শুক্রবার নিজেই টুইট করে সে কথা জানান রাজ্যপাল।
রাজ্যে ভোট-পরবর্তী হিংসায় অনেকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে প্রথম থেকেই সরব বিরোধী দল বিজেপি। যদিও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শান্তির বার্তা দিয়েছেন। হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের কথাও বলেছেন। তারপরও সন্ত্রাস নিয়ে বিজেপি-র পাশাপাশি রাজ্যপালও সরব হন। নবান্নের অনুমতি ছাড়া তিনি উত্তরবঙ্গ সফরে যান বলেও অভিযোগ ওঠে। বৃহস্পতিবার বিজেপি সাংসদ ও বিধায়কদের সঙ্গে রাজ্যপাল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের অবস্থা দেখে চোখের জল মুছতেও দেখা যায় তাঁকে।
বৃহস্পতিবারই উত্তরবঙ্গ সফর শেষ হয়েছে তাঁর। এ বার সন্ত্রাস দেখতে দক্ষিণবঙ্গের নন্দীগ্রামে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করলেন রাজ্যপাল। নিজেই টুইট করে জানালেন সে কথা। টুইটে লেখা হয়েছে, ভোট-পরবর্তী হিংসা দেখতে ১৫ মে নন্দীগ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যাচ্ছেন রাজ্যপাল। সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে সেনা বাহিনীর হেলিকপ্টারে নন্দীগ্রামে যাবেন তিনি। ওই দিনই জানকীনাথ মন্দিরে পুজো দেবেন রাজ্যপাল। সে দিনই ফিরে আসবেন।
বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম আসনটিতে ছিল সবচেয়ে বেশি চমক। এক দিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য দিকে, শুভেন্দু অধিকারী। ফলাফলে শুভেন্দু অল্প ভোটের ব্যবধানে মুখ্যমন্ত্রীকে পরাজিত করেন। ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে নন্দীগ্রামে অশান্তি বার বার অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। বিজেপি-র অনেক কর্মী-সমর্থক ঘর ছাড়া বলেও দাবি করেন তিনি। গত সপ্তাহে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি বিধায়ক। তারপরই শুক্রবার রাজ্যপাল নন্দীগ্রাম সফরের কথা ঘোষণা করলেন।
এর আগে রাজ্যপালের উত্তরবঙ্গ সফর নিয়ে রাজভবন ও নবান্নের মধ্যে নতুন করে দ্বৈরথ সৃষ্টি হয়। মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি রাজ্যপালের সফরের বিরোধিতা করেন। নবান্নের তরফে বলা হয়, সরকারি ভাবে রাজ্যকে না জানিয়েই সফরে বেরিয়েছেন রাজ্যপাল। উত্তরে রাজ্যপাল জানান, মানুষ যখন সমস্যার মধ্যে পড়েন, তখন জানানোর সময় থাকে না। সবার আগে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে তিক্ততার আবহেই ফের নন্দীগ্রাম যাওয়ার কথা ঘোষণা করলেন ধনখড়।
রাজ্যপালের নন্দীগ্রাম সফর নিয়ে সমালোচনা করেছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘বিজেপি নেতারা পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন। সেটা হয়নি। আর এখন উনি বিজেপি-র কার্যনির্বাহী সভাপতির মতো আচরণ করছেন। যেখানে তৃণমূল কর্মীরা খুন হচ্ছেন, সেখানে উনি যাচ্ছেন না কেন? ওঁর নাম তো ‘টুইট ধনখড়’। ‘টুইট ধনখড়’-এর টুইটে ভ্যাকসিন আসছে না। রেমডেসিভির নেই। অক্সিজেন নেই। তা নিয়ে টুইট করছেন না কেন?’’