মধ্য অসমের নগাঁও জেলার অন্তর্গত বঢ়মপুর বিধানসভা এলাকার বামুনি পাহাড়ে বজ্রপাতে ১৮টি বুনোহাতির করুণ মৃত্যু হয়েছে। বজ্রপাতের ফলে একঝাঁক হাতির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তের পর জানিয়েছেন বন দফতরের কর্তারা। এ ঘটনায় গোটা রাজ্যের সংশ্লিষ্ট মহলে শোক ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালের দিকে বামুনি পাহাড়ে কাঠখড় কুড়োতে গিয়ে এতগুলি বুনোহাতির মৃতদেহ দেখেন গ্রামের কতিপয়। তাঁরা সঙ্গে ছুটে এসে স্থানীয় জনতাকে এই চাঞ্চল্যকর খবর দেন। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া নগাঁও জেলা বন দফতরকে। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যান বন দফতরের পদস্থ আধিকারিকরা। তাঁরা পাহাড়ি জঙ্গলে প্রথমে একত্রে পাঁচটি এবং পরবর্তীতে তালাশি চালিয়ে এক এক করে কয়েকটি শাবক সহ ১৮টি মৃত হাতিকে উদ্ধার করেন। বন আধিকারিকদের ধারণা, গত রাতে বজ্রপাতে হাতিগুলির মৃত্যু হয়েছে। পাহাড় সংলগ্ন গ্রামের মানুষের উদ্ধৃতি দিয়ে তাঁরা জানান, গতকাল রাতে বামুনি পাহাড়ে হাতির আৰ্তনাদ তাঁরা শুনেছেন।
এদিকে বজ্রপাতে হাতিগুলির মৃত্যু হয়েছে বলে বন দফতর দাবি করলেও রাজ্যের প্রথমসারির জনৈক হস্তীবিশেষজ্ঞ বিজয়ানন্দ চৌধুরীর হাতিগুলির মৃত্যু বজ্ৰপাতে সংঘটিত হয়নি। হস্তীবিশেষজ্ঞ বিজয়ানন্দের ধারণা, এ ঘটনা খাদ্যে বিষক্ৰিয়াজনিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কেননা, বজ্রপাতে যদি তাদের মৃত্যু হত তা হলে দুটি ভিন্ন স্থানে এই ১৮ হাতির মৃত্যুদেহ উদ্ধার হত না। এক জায়গায় ১৪টি এবং অন্যত্র চারটি হাতির মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। এমতাবস্থায় হাতিগুলির মৃত্যু বজ্ৰপাতে হয়নি বলে তিনি মনে করেন, দাবি হাতি বিশেষজ্ঞ বিজয়ানন্দ চৌধুরীর। পাশাপাশি তিনি বলেন, সঠিক ময়নাতদন্ত হলে আসল রহস্য উদ্ঘাটন হবে। গতকাল রাতে হাতিগুলি ঠিক কোন স্থানে অবস্থান করছিল তা বের করে তদন্ত প্রক্রিয়া চালাতে তিনি বন দফতরের আধিকারিকদের পরামৰ্শ দিয়েছেন।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, গত দুদিন নগাঁও জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ঘন ঘন বজ্রপাত হয়েছে। এতগুলি হাতির মৃত্যুর কারণ বজ্রপাত বলেই একপ্রকার নিশ্চিত বন দফতরের শীর্ষ আধিকারিকদের। তাঁরা বলেছেন, গত বেশ কিছুদিন থেকে বামুনি পাহাড়ে প্রায় ২০টি হাতির এক দল অবস্থান করছিল।
2021-05-13