অতিমারি শুরুর ঠিক পরেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (‘হু’)-র বিবৃতি চিনকে বাঁচিয়েছিল। হু বলেছিল, চিনের কোনও গবেষণাগার থেকে ছড়িয়ে পড়েনি করোনাভাইরাস। কিন্তু এ বার চিনের এক ভাইরাস বিশেষজ্ঞই অভিযোগ করলেন, করোনাভাইরাসকে ইচ্ছাকৃত ভাবেই পরিবেশে ছড়িয়েছিল বেজিং।
একটি সর্বভারতীয় ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চিনের ভাইরাস বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক লে-মেং-ইয়ানের অভিযোগ, বাদুড়, প্যাঙ্গোলিন বা পরিবেশ থেকে অন্য কোনও ভাবে ছড়িয়ে পড়েনি সার্স-কোভ ২ ভাইরাস। তা ছড়িয়ে পড়েছিল চিনের সেনাবাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মি(পিএলএ)-র গবেষণাগার থেকেই। আর জীবাণুযুদ্ধের মহড়া হিসাবে তা ইচ্ছাকৃত ভাবেই ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল পরিবেশে।
এ ব্যাপারে প্রমাণিত তথ্যাদি আমেরিকার বিদেশ দফতরের হাতে রয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল অতিমারি শুরুর পরপরই। তাতে বলা হয়েছিল, চিনা সেনাবাহিনীর বিজ্ঞানীরা জীবাণুযুদ্ধের মহড়া হিসাবে করোনাভাইরাসকে ব্যবহার করার পরীক্ষা নিরীক্ষা গবেষণাগারে শুরু করেন ২০১৫ থেকে। বেজিং ওই অভিযোগ অস্বীকার করতে দেরি করেনি। এমনকি চিন ঘুরে এসে হু-র বিশেষজ্ঞ দলও ঘোষণা করেছিল। সার্স-কোভ ২ ভাইরাস উহানের বাজার থেকেই বাতাসে ছড়িয়েছিল। তা কোনও গবেষণাগার থেকে বেরিয়ে আসেনি। আর তা ইচ্ছাকৃত ভাবেও ছড়ানো হয়নি। হু-র সেই বিবৃতিতে চিনের আপাত স্বস্তি মিলেছিল।
কিন্তু সেই সন্দেহটাকেই ফের উস্কে দিলেন চিনের ভাইরাস বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক লে-মেং-ইয়ান। তিনি বলেছেন, ‘‘আমেরিকার বিদেশ দফতরের হাতে আসা ওই তথ্যাদি একেবারেই সঠিক। গোটা বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অপ্রচলিত জীবাণু অস্ত্র ব্যবহারের কর্মসূচি বেজিংয়ের অনেক দিনের পুরনো। কী ভাবে সেই জীবাণু অস্ত্র ধাপে ধাপে বানানো যায় আর তা ব্যবহার করা যায় তা নিয়ে চিন দীর্ঘ দিন ধরে কী কী পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়েছে, গত মার্চে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে আমিও সবিস্তারে তার উল্লেখ করেছি। করোনাভাইরাস গবেষণাগার থেকেই ছড়িয়েছে এটা রটে গেলে, মানুষকে বিভ্রান্ত করতে কী কী পদক্ষেপ জরুরি বেজিং তা-ও অনেক আগেই ভেবে রেখেছিল।’’
কিসের ভিত্তিতে তাঁর এই অভিযোগ, জানতে চাওয়া হলে ইয়ান বলেন, ‘‘আমি গত জানুয়ারি থেকেই তথ্যপ্রমাণ-সহ এই সব কথা ইউটিউবে বলে চলেছি। এও বলেছি, এই ভাইরাস আবিষ্কারের জন্য প্রচুর পরিমাণে অর্থবরাদ্দ করেছিল বেজিং। আর ইচ্ছাকৃত ভাবেই তা বাতাসে ছড়ানো হয়েছিল, যাতে মানুষের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেওয়া যায় এবং যাতে শত্রু দেশগুলির চিকিৎসা ব্যবস্থাকেও নড়বড়ে করে দেওয়া যায়।’’