কাটমানি নিয়ে নাটক করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কাটমানি খাওয়া যদি সত্যিই বন্ধ করতে চান তাহলে একজন বিচারপতির নেতৃত্বে কমিশন গঠন করুন তিনি৷
শুক্রবার বিধানসভায় এই মন্তব্য করলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান৷ তা না হলে বিধানসভা অধিবেশনের আগামী দিনগুলিতে শাসকের উপর চাপ বাড়ানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি৷
তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পর থেকেই কাটমানি নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গণ্ডগোল শুরু হয়েছে৷ বীরভূম, চন্দননগর, নদীয়ায় তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে কাটমানি ফেরৎ পেতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন আম-জনতা৷ এই বিক্ষোভের পিছনে কোথাও কোথাও বিজেপির মদত রয়েছে বলে তৃণমূল নেতৃত্বের একটা অংশ মনে করছে৷
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে কলকাতায় রাজ্যের সব পুরসভার কাউন্সলিরদের ডেকে বৈঠক করেন মমতা। সেখানেই তিনি বলেন, কেউ কেউ সমব্যথীর ২০০০ টাকা থেকেও ২০০ টাকা কমিশন নেয়। কন্যাশ্রী থেকে স্বাস্থ্যসাথী সব প্রকল্প থেকেই দলের জনপ্রতিনিধিরা কাটমানি নিচ্ছেন বলে অভিযোগ তোলেন তৃণমূলনেত্রী। কেউ কাটমানি নিয়ে থাকলে তা ফিরিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রপরই প্রথম গণ্ডগোলটি ঘটে বৃহস্পতিবার বীরভূমে৷ দুবরাজপুরের একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই সদস্যের বাড়িতে কাটমানির টাকা ফেরৎ চাইতে পৌঁছে যান এলাকার মানুষ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যপক গোলাগুলি-বোমাবাজি চলে৷ঘটনায় জখম হয়েছেন পাঁচ জন৷ আর এই ঘটনার পরই ‘সেম-সাইড’ গোল করে ফেলেন স্থানীয় সাংসদ শতাব্দী রায়।
তিনি বলেন “লোকে ফেরত চাইবে যার হাতে টাকা দিয়েছে তার থেকে। কিন্তু কাটমানির ভাগ অনেকের কাছেই যায়। তাদের ফেরত দিতে হবে না।” শতাব্দী বুঝিয়েছেন, শুধু নীচু স্তরের প্রতিনিধিরাই টাকা নেন তা নয়, অনেকেই ভাগ পান সেই টাকার। কারা ভাগ পান তা স্পষ্ট না করলেও তৃণমূল সাংসদ যা বলেছেন তাতে এটাই স্পষ্ট যে তৃণমূল কংগ্রেসে কাটমানির চেন সিস্টেম চলে। তিনি বলেন “যারা এক-দু পার্সেন্ট কাটমানি নিয়েছে তাদের ধরা হলেও কাটমানি কালচার বন্ধ করা যাবে না। কারণ, তখন দেখা যাবে যারা কাটমানির বেশিটা পায় তারা এক-দু পার্সেন্ট বেশি নেবে।”
কাটমানিকে অস্ত্র করে এখন তৃণমূলকে ঘায়েল করতে চাইছে বিরোধী দলগুলি৷ বিধানসভা অধিবেশনেও যে এর আঁচ পড়তে চলেছে তা বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের কথাতেই স্পষ্ট৷