২৪ ঘণ্টায় চার হাজারের বেশি মৃত্যু, রাজ্যে রাজ্যে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের হার

করোনায় মৃত্যু বাড়ছে দেশে। মৃত্যুহারও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। চলতি বছরের গোড়ায় মৃত্যুহার ২ শতাংশের নীচে নেমে যাওয়ায় স্বস্তি পেয়েছিল স্বাস্থ্যমন্ত্রক। কিন্তু মে মাস থেকে উদ্বেগ বেড়েছে। দেশে এখন কোভিডে মৃত্যুহার ১.০৯ শতাংশ। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেব বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যুও রেকর্ড করেছে। একদিনে ৪২০৫ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে যা চিন্তার কারণ।

দৈনিক আক্রান্ত এখন কিছুটা কমেছে দেশে। পর পর চার সপ্তাহ ধরে চার লাখের বেশি দৈনিক সংক্রমণ ধরা পড়ছিল। গত কয়েকদিনে তা সাড়ে তিন লাখে নেমে গেছে। তবে সংক্রমণের হার কমেনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রক বলছে, মে মাসের ৫ তারিখ অবধি ৩০ লাখের বেশি সংক্রমণ ধরা পড়েছিল দেশে। সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার কারমেই আক্রান্তের সংখ্যা এত দ্রুত গতিতে বেড়েছে। দেশে এখন গড়ে কোভিড পডিটিভিটি রেট তথা সংক্রমণের হার ১৭.৫৬ শতাংশ। কিন্তু হিসেব বলছে, অন্তত ২৭টি রাজ্যে পজিটিভিটি রেট তথা সংক্রমণের হার ২০ শতাংশের বেশি।

যত জন কোভিড রোগীর করোনা পরীক্ষা হচ্ছে তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যতজনের সংক্রমণ ধরা পড়ছে, সেই হিসেবকেই বলে পজিটিভিটি রেট তথা সংক্রমণের হার। স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানাচ্ছে, দেশের ৭৩৪টি জেলার মধ্যে ৬৪০টি জেলায় এই পজিটিভিটি রেট জাতীয় গড়ের থেকে বেশি। পুদুচেরী, গোয়া, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশে সংক্রমণের হার সাঙ্ঘাতিকভাবে বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গে কোভিড পজিটিভিটি রেট ৩৪ শতাংশের বেশি।

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) বলছে দেশের প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি হচ্ছে দ্রুত গতিতে। হিমাচল প্রদেশ ও নাগাল্যান্ডের প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে সংক্রমণের হার বেশি। রাজস্থানেও তাই। রিয়েল টাইম আরটি-পিসিআর টেস্ট সব জায়গায় ঠিকমতো হচ্ছে না বলেই দাবি স্বাস্থ্যমন্ত্রকের, বদলে র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট হচ্ছে। সে কারণেই বেশিরভাগ কোভিড পজিটিভ রোগীকে চিহ্নিত করা যাচ্ছে বলেই জানিয়েছেন কেন্দ্রের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

তার মধ্যেই কোভিডের ডবল ভ্যারিয়ান্টের সংক্রমণ বাড়ছে রাজ্যে রাজ্যে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করেছে, এই ডবল ভ্যারিয়ান্ট বা ভারতীয় প্রজাতি ৪৪ টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতেরই দিল্লি, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে এই ডবল ভ্যারিয়ান্টের তিনটি ছোঁয়াচে স্ট্রেন ছড়াচ্ছে বলেও দাবি করেছেন গবেষকরা। এই ভাইরাল স্ট্রেনগুলো সুপার-স্প্রেডার, দ্রুত ছড়াতে পারে মানুষের শরীরে। করোনার মধ্যে আবার ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিসের সংক্রমণও স্বাস্থ্যমন্ত্রকের মাথাব্যথার কারণ। মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ওড়িশায় কোভিড রোগীদের মধ্যে কালো ছত্রাকের সংক্রমণ বাড়ছে। মধ্যপ্রদেশে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে, মহারাষ্ট্রে দু’হাজারের বেশি সংক্রমিত। করোনার মধ্যেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ ঠেকাতে নতুন নির্দেশিকাও জারি করেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। সকলকে সাবধানে থাকতে বলা হচ্ছে। পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ করে নজর দিতে বলা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.