একুশের নির্বাচনে অভূতপূর্ব আসন পেয়ে তৃতীয়বার রাজ্যের ক্ষমতায় ফিরেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস। সরকার গঠনের ১০ দিন যেতে না যেতেই পুনর্গণনা নিয়ে রাজ্যে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হল। বিজেপির তরফ থেকে মঙ্গলবার জানানো হয় যে, তাঁরা পুনর্গণনা আর্জি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে। বিজেপির মতে, যেই আসনগুলোতে তাঁরা ২ হাজারের কম ভোটে হেরেছে, সেই আসন গুলোর পুনর্গণনা চেয়ে তাঁরা আদালতে মামলা করবে। আরেকদিকে, নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে পুনর্গণনা চেয়ে তৃণমূলের তরফ থেকে মামলা করা হয়েছে।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে রাজ্যের আসনগুলোতে পুনর্গণনা চেয়ে শাসক দলের উপর পাল্টা চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে বিজেপি। একুশের ভোটে বিপর্যয় থেকে মুখ ঘোরাতে এবং নেতাদের ব্যর্থতা ঢাকতেই বিজেপি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে দাবি ওয়াকিবহাল মহলের। যদিও, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছেন যে বিজেপি হার স্বীকার করতে পারছে না বলেই নতুন নতুন ফন্দি আঁটছে। আরেকদিকে, আদালতে মামলা করার এই হুমকিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল।
তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা তথা মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, দুই হাজারের কম ভোটে হারলেই পুনর্গণনার দাবি করা যায় না। গণনায় অনিয়মের অভিযোগ উঠলেই তবেই পুনর্গণনার দাবি করা যায়। কিন্তু আদালতে আগে প্রমাণ করতে হবে সেই অভিযোগ। নাহলে আদালতে মামলা চলবে না।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অনুযায়ী, রাজ্যের বিভিন্ন কেন্দ্রে উনিশের লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছিল বিজেপি। কিন্তু একুশের নির্বাচনে সেখানে খুবই কম ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে তাঁরা। গণনায় কারচুপি করেই বিজেপিকে হারানো হয়েছে বলে দাবি দিলীপ ঘোষের। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, আমরা যেই আসনগুলোতে ২ হাজারের কম ভোটে হেরেছি, সেগুলোতে পুনর্গণনার দাবিতে আদালতে মামলা করা হবে।
প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, ৩৬ টি আসনে পাঁচ হাজার অথবা তাঁরও কম ভোটে পরাজিত হয়েছে বিজেপি। গণনায় কারচুপি করে ওই আসনগুলোতে তৃণমূলকে জিতিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির। গণনার সময় কাউন্টিং এজেন্টকে ভয় দেখিয়ে বের করে দেওয়ারও অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের নেতাদের মতে, প্রচারে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম আর ইভিএমে তাঁর প্রভাব পড়বে না সেটা হতে পারে না। আর সেই কারণেই তাঁরা আদালতে যাওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে।