পশ্চিমবঙ্গে একুশের নির্বাচনে ভোট পরবর্তী যে হিংস্মাতক লড়াই শুরু হয়েছে তা পুরোটাই পূর্ব পরিকল্পিত হিন্দু নিধনের চক্রান্ত। যাকে মুসলিম ধর্মগ্ৰন্থ কোরানের ভাষায় “জেহাদ” নামে বর্ণনা করা হয়েছে।
কি এই জেহাদ ?
ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসারের জন্য
অমুসলমান কাফেরদের বিরুদ্ধে সব রকমভাবে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে যুদ্ধ করাই হল জেহাদ।
আরবী জেহাদ শব্দের আক্ষরিক অর্থ হলো, “উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা”।
কাফের কারা ?
কাফের একটি আরবি শব্দ, যা আরবি কুফর ধাতু থেকে আগত। যার ব্যবহারিক অর্থ হল অবাধ্যতা, অস্বীকার করা, অকৃতজ্ঞতা।
ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় কাফের তারাই যারা ঈমানের বিপরীত। যে ব্যক্তি আল্লাহর অংশ নবী অথবা ইসলামে রাসূলের বিধি-বিধানকে অস্বীকার করে, প্রত্যাখান করে নিঃসন্দেহে সে ব্যক্তি একজন কাফের। কাফের শব্দের আসল মানে হল যে কোরান মানে না, অর্থাৎ সমস্ত অমুসলমান। সুতরাং হিন্দু, খ্রীষ্ঠান, ইহুদী, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সী সবাই কাফের এবং মুসলমানের কাছে বধযোগ্য।কাফের আবার দুই রকম, খ্রীষ্ঠান-ইহুদি প্রভৃতি যারা মূর্তি পূজা করে না তারা অপেক্ষাকৃত ভাল কাফের। এরা জিজিয়া কর দিয়ে বাঁচলেও বাঁচতে পারে। কিন্তু হিন্দুরা যারা মূর্তিপূজায় বিশ্বাস করে তারা নিকৃষ্টতম, ইসলামের চোখে তাদের বাঁচবার কোন অধিকারই নেই।কোরান পড়লে তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
জেহাদের উদ্দেশ্য কি ?
তাদের একটাই উদ্দেশ্য, সারা পৃথিবীতে যেন তেন ভাবে ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠা করা। সর্বাত্মক প্রচেষ্টা বলতে শুধুমাত্র সশস্র লড়াই বুঝায় না, ইসলামের পক্ষে অমুসলমান হিন্দু কাফেরদের বিরুদ্ধে যে কোন রকম কাজকেই বুঝায়।
ইসলামের পক্ষে জনমত তৈরি করা, প্রবন্ধ লিখে তথ্য বিকৃত করে বা যেকোন উপায়ে অমুসলমানদের বিভ্রান্ত করা, বোকা বানানো, প্রবঞ্চিত করা, ভুলিয়ে ধরে এনে হত্যা করা, ছলে বলে কৌশলে অমুসলমান হিন্দু নারী অপহরন বা ধর্ষণ করা, হিন্দুদের ভয় দেখানো, কিংবা তাদের অর্থ দিয়ে বশীভুত করে হিন্দুদের দিয়েই হিন্দুদের জব্দ করা, দমন করা, লুণ্ঠন করা বা আর্থিক ক্ষতি ঘটানো এসবই জেহাদ।
প্রায় দেখা যায় মুসলমান যুবকরা হিন্দু মেয়েদের ভুলিয়ে-ভালিয়ে বিয়ে করে বা বিয়ের আগেই শারিরীক সম্পর্ক করে বিয়েতে বাধ্য করে, এটাও এক ধরণের জেহাদ। একে লাভ জেহাদ বলা হয়।
এটি মূলত বিয়ের মাধ্যমে হিন্দু মেয়েকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিতকরণের বন্ধে যে নতুন আইন পাশ হয়েছে সংবিধানে তা “লাভ জেহাদ” আইন নামে পরিচিত।এতে যেমন একটি হিন্দু মেয়েকে মুসলমান করা গেলো আবার একটি হিন্দু পরিবারকেও কব্জা করা গেলো।হিন্দু বুদ্ধিজীবীদের হাত করে তাদের দিয়ে ক্রমাগত আর এক হিন্দুর প্রতি বিদ্বেষ সৃষ্টি করে, হিন্দু সমাজকে কলুষিত ও হিন্দু ধর্মের প্রতি বীতশ্রদ্ধ করে তোলাও এক ধরনের জেহাদ।আবার হিন্দুদের চোখের সামনে গো হত্যা করে তাদের মনে কষ্ট দেওয়াটাও জেহাদের মধ্যেই পড়ে। আবার অনেক মুসলমান কবি-সাহিত্যিক, ও অভিনেতা আছেন, যারা সাহিত্যে চর্চা ও অভিনয় জগতের মাধ্যেমে নিজেকে হিন্দু সমাজে মহান উদার সেক্যুলার মুসলমান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আমরা যদি একটু খোঁজ করি তাহলে দেখতে পাবো, এই সব মুসলমান কবি-সাহিত্যিক,ও অভিনেতাদের স্ত্রী কিন্তু হিন্দু ধর্মেরই।অর্থাৎ এরা হিন্দু নারী বিয়ে করে কোরানে জেহাদের একটি কর্মকে সম্পূর্ণ রুপ দিয়ে সাকার করেছেন। আসলে এরা সবথেকে বড়ো জেহাদী।সেই জন্যই মুসলমানরা এদের কিছু বলে না। এরা যদি প্রকৃতই হিন্দু দরদী হতো, তাহলে তাদের জাত ভাইরা তাদেরকেই আগে হত্যা করতো।কারন ইসলামে “মুশারিক” বলে একটা কথা আছে। এর অর্থ এই ,যে ব্যক্তি মুসলমান হয়েও জেহাদ করেনা তাদের আল্লা কখনোই মাফ বা ক্ষমা করে না।এই মুশারিকদের জন্য কিন্তু কাফেরদের মতই কঠিন শাস্তির বিধান আছে কোরানে।
ইসলামে “মূর্তাদ” বলে একটি কথা আছে এর অর্থ ধর্মত্যাগী, কোন মুসলমান ইসলাম ত্যাগ করে অন্য ধর্ম গ্রহন করলে তাকে মূর্তাদ বলে এবং যে কোন মুসলমানের অধিকার আছে সেই মূর্তাদকে হত্যা করার। মুশরিক ও মূর্তাদকে হত্যা করাটাও জেহাদের অঙ্গ। তাহলে দেখা যাচ্ছে জেহাদের অর্থ প্রবল আকারে অতি ব্যপক। জেহাদের প্রকৃত অর্থ হিন্দুদের বুঝতে না দেওয়ার জন্য মুসলমান এবং তাদের অনুগত হিন্দু বুদ্ধিজীবীরা প্রাণপণ চেষ্টা করে চলেছেন। কারন জেহাদের সাফল্যের উপর দাঁড়িয়ে আছে ইসলামের ভ্যবিষ্যত। আর জেহাদের প্রকৃত মানে সময় মত বুঝতে না পারার উপর নির্ভর করছে হিন্দুদের অস্তিত্ব।
আর আমরা সেক্যুলাল হিন্দুরা এতটাই বোকা যে, এদের মহানতাই আকৃষ্ট হয়ে স্বধর্মকে জলাঞ্জলি দিয়ে ” ধর্মের থেকে মনুষ্যত্ব বড়ো” এই ভেবে জ্ঞানের প্রতি অজ্ঞানের লোপকে প্রকাশ করে নিজেরই মারাত্মক সর্বনাশ ডেকে আনছি।
কোরানে এবং হাদিসে জেহাদের মানে পরিষ্কার করে বলাই হয়েছে। কোন মহানুভবতা, আদ্যাত্বিকতা এর মধ্যে নেই, ইসলামের স্বার্থে অমুসলমান হিন্দু কাপেরদের যে কোন ভাবে হত্যা করা, আক্রমন করা,লাঞ্ছিত করা, ভীত করা, লুণ্ঠন করা, ধর্ষণ করা, মন্দির বা দেব-দেবীদের মূর্তি ভাঙ্গাও জেহাদের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।
আরেকটা কথা বুঝতে হবে- জেহাদই কিন্তু ইসলামের প্রথম এবং সর্বোচ্চ অবশ্যিক কর্তব্য। কোনো মুসলমান ব্যক্তিগত জীবনে যত মহান হলেও বা সৎ জীবন যাপন করলেও সে কিন্তু স্বর্গ বা জাহান্নামে যেতে পারবে না যদি না সে, জেহাদে অংশগ্রহন করে। তাই মুসলমানরা স্বর্গ সুখ প্রাপ্তির জন্য জেহাদকেই নিজের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে বেছে নিয়েছে।
আমরা এর আগেও দেখেছি ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর ভারত কে জেহাদের নামে খন্ডিত করে সম্পূর্ণ একটা আলাদা রাষ্ট্র পাকিস্তান তৈরি করা হয়েছিল। পাকিস্তানের অধিকাংশের ইচ্ছানুসারে স্থির হয়ে গেছে পাকিস্তান হচ্ছে ইসলামিক রাষ্ট্র। সেই যুক্তি অনুসরণ করলে ভারত হিন্দু রাষ্ট্র হতে পারতো। কারণ এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ভারত সরকার করলো কি, অপর একটি যুক্তি অবলম্বন।ভারতের মতে সব ধর্মই সমান।সব ধর্মই সত্য।সংখ্যাগুরুর মুখ চেয়ে একটি ধর্মকেই রাষ্ট্রধর্মে পরিণত করলে আর সব ধর্মের উপর অবিচার করা হবে। সুতরাং সংখ্যাগুরু, সংখ্যালঘু নির্বিশেষে সর্বোদয়ের বিচারে সকলের প্রতি সমদর্শিতার খাতিরে ভারতকে হতে হবে সেক্যুলার রাষ্ট্র। যে রাষ্ট্র ধর্মের পক্ষে নিরপেক্ষ। যার মাশুল আজ ভারতের হিন্দুদের প্রাণের বিনিময়ে অত্যাচারিত হয়ে ভিটে মাটি থেকে উচ্ছেদ হয়ে দিতে হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গে ভোট মিটে যাওয়ার পর বিজয় উৎসবের নামে সবুজ আবীর মেখে তৃণমূল নেতা,কর্মী সমর্থক ও মৌলবাদীরা রাজ্য জুড়ে যে হিংসা ছড়িয়েছে ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, তা কি শুধুই মাত্র রাজনীতির হিংসা। মোটেও কিন্তু তা নয়। রাজনীতির নামে যে হিংসা ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড পুরোটাই কিন্তু পরিকল্পনা মাফিক। যেখানে বেছে বেছে হিন্দুদের হত্যা করা হচ্ছে। হিন্দু বি.জে.পি. সমর্থকদের ঘর বাড়ি ভেঙ্গে লুটপাট করে জ্বালিয়ে দিয়ে তাদের কে জন্ম ভিটে থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। কিন্তু কোথাও কি আমরা এটা দেখেছি যে, অহিন্দু মুসলমান বি.জে.পি সমর্থকরা তাদের অত্যাচারে আক্রান্ত হয়েছে? হয়নি ! কারণ তারা বেছে বেছে হিন্দুদেরই মারছে। হিন্দু মেয়েদের ভোগের পাত্র বানিয়ে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে কিংবা মুখে বিষ দেওয়ার মতন নির্মম পাশবিক অত্যাচারের নামে জেহাদ করা হচ্ছে। তাদের জেহাদ কে সম্পূর্ণ রুপে বাস্তবায়ন করার মূল কান্ডারী হচ্ছে কিন্তু আমাদের অবোধ, স্বার্থলোভী হিন্দু ভাইরাই। আজ ভোট পরবর্তী হিংসাত্মক ঘটনাকে নিন্দা জানিয়ে যেখানে বাংলাদেশ, কর্ণাটক, কেরালাসহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের প্রবাসী হিন্দু বাঙালিরা প্রতিবাদের ঝড় তুলে সরব হয়েছেন, সেখানে পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থলোভী হিন্দুরা তাদের লেলিয়ে দিচ্ছে আর একজন হিন্দু ভাইকে হত্যা করার জন্য।যাদের কাছে নিজের ধর্মের থেকেও অন্য ধর্ম বেশি প্রিয় ও মহান।সেই সব সেক্যুলার হিন্দুদের জন্যই বার বার হিন্দুত্ব ঘোর সঙ্কটের মুখে পড়েছে।
ভারতের এই স্বার্থ লোভী হিন্দুরা নিজের আখের গোছানোর তাগিদে কখন যে ভিটে মাটি থেকে উচ্ছেদ হয়ে যাবে ঘুনাক্ষরেও টের পাবে না।সেই সময় কিন্তু আর বেশি দূর নয়।যখন পশ্চিমবঙ্গকে দ্বিতীয় বাংলাদেশে পরিণত করবে তারা।
কারণ তাদের এই জেহাদের অন্তরালে লুকিয়ে আছে সমগ্ৰ ভারতকে হিন্দু শূন্য করে ইসলামিক সাম্রাজ্যে
কায়েম করা। তাই সময় বলে দিচ্ছে আজ, তাদের প্রতি উদার ও মহানুভবতা নয়, বরং স্বার্থ ত্যাগ করে ইসলামের জেহাদ কে প্রতিরোধ করতে সমগ্ৰ হিন্দু জাতি কে একত্রিত হয়ে এই লড়াইয়ে অংশীদার হতে হবে। কারণ দেশের ভবিষ্যৎ কখনো অহিংসভাবে রক্ষা করা যায় না? যদি করা যেত তাহলে, কাশ্মীরে সেনা জওয়ান না পাঠিয়ে শান্তির সৈনিক পাঠানো হতো। তাই ইসলামিক জেহাদ কে প্রতিরোধ করতে হলে নিরস্ত্র নয় বরং সশস্ত্র হাতে প্রতিরোধ করতে হবে। কারণ নিরস্ত্র হাতে অহিংসা ও শান্তির মাধ্যেমে হয়তো, কয়েক দিনের জন্য হিংসাত্মক পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে কিন্তু হিন্দুদের অস্তিত্ব কে ইসলামিক জেহাদের হাত থেকে রক্ষা করা যাবে না। তাই আমাদের হিন্দু স্বরাজ কে রক্ষা করতে হলে সকল কে একত্রিত হয়ে ইসলামের জেহাদ কে কড়া হাতে দমন করতে হবে। আর সেটা তখনই হবে যখন আমরা সকল হিন্দু একত্রিত হয়ে সংগঠিত হবো।
" সংগচ্ছধ্বং সংবদধ্বং সংবো মনাংসি জানতাম্।
দেবা ভাগং যথাপূর্বে সঞ্জানানা উপাসতে "।।
অর্থ :- একসাথে চলো, একই চিন্তা করো,একই কথা বলো,তোমাদের মন উত্তম হউক।এভাবেই পূর্বে দেবতারা সব কিছু জয় করেছে।
কৌশিক দাস