কোভিড যুদ্ধে বন্ধুতা! ভারতকে ১০ হাজার রেমডেসিভির পাঠাল বাংলাদেশ

মারণ ভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কায় বিপর্যস্ত ভারত। দেশজুড়ে লণ্ডভণ্ড পরিস্থিতি। রোজকার রেকর্ড হারে মানুষজন করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। থেমে নেই মৃতের সংখ্যাও। এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবিলায় এদেশে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে উপযুক্ত স্বাস্থ্য কাঠামোর অভাব। নেই পর্যাপ্ত অক্সিজেনের যোগান, হাসপাতালে মিলছে না শয্যাও। ভারতের এহেন সংকটকালে ইতিমধ্যেই সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে আমেরিকা, ব্রিটেন সহ একাধিক বিদেশী ‘বন্ধু’ রাষ্ট্র। এবার সেই তালিকায় জুড়ল ভারতের অন্যতম প্রতিবেশী বাংলাদেশের নাম।

করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতকে রেমেডেসিভিরের দশ হাজার ‘ভায়াল’ উপহার হিসেবে দিয়েছে ঢাকা। সে দেশের বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, ভারতের করোনা পরিস্থিতিতে সেদেশের জনগণের সাহায্যার্থে বাংলাদেশের ওষুধ ও স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রীর এটি প্রথম চালান। কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার তৌফিক হাসান পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে এই উপহার হস্তান্তর করে। রেমডেসিভিরের এই ইনজেকশন গুলি প্রস্তুত করেছে সেদেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা বেক্সিমকো। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সেদেশের জনগণের পক্ষ থেকে ভারতের জনগণের জন্য এই উপহার।

এই উপহার গ্রহণের পর ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী টুইট করে জানিয়েছেন, ‘সাগরপথে, আকাশ পথে এবং এখন জলপথে। করোনা মোকাবিলায় জরুরি ওষুধের একটি চালান বাংলাদেশ থেকে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলায় প্রবেশ করেছে। আমাদের অন্যতম প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের এই সহযোগিতা এবং সৌজন্যের জন্য ধন্যবাদ। এটি দুই দেশের মধ্যে অনন্য সম্পর্কে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।’ জানিয়ে দি, গত ২৯ এপ্রিল এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতকে জরুরি ওষুধ এবং চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে পিপিই কিট, জিংক, ওরাল অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিভাইরাল ইনজেকশন, ভিটামিন সি সহ অন্যান্য ওষুধ।

এদেশের মারণ ভাইরাসের করালগ্রাসে এসে মৃত্যু মিছিল দেখে ওপার বাংলার সরকার গভীর দুঃখ এবং শোকপ্রকাশ করার পাশাপাশি সহমর্মিতা নিয়ে ভারতের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এবং সম্ভাব্য সব ধরণের সহযোগিতার জন্য সেদেশ প্রস্তুত আছে বলে জানা যায়।

প্রসঙ্গত, এপ্রিল মাসে ভারতের সেনা প্রধান এমএম নারাভানে বাংলাদেশ সফরে গিয়ে ১ লক্ষ ডোজ করোনার টিকা উপহার হিসেবে দিয়ে এসেছিলেন। এর আগে মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশকে ১২ লক্ষ ডোজ করোনার টিকা উপহার দিয়েছিলেন। এছাড়াও প্রথম চালানে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছিল ২০ লক্ষ ডোজ করোনার টিকা। উপহার হিসেবে সেদেশে এখনও পর্যন্ত ভারত ৩৩ লক্ষ ডোজ করোনা ভ্যাকসিন পাঠিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.