সারা দেশে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে পালা দিয়ে কমেছে অক্সিজেনের জোগান (Oxygen Supply)। অক্সিজেনের অভাবে দিল্লিতে গত সপ্তাহে ২৫ জন ও শনিবার ১২ নিয়ে মোট ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই অবস্থায় সোমবার কেন্দ্রকে কড়া নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) । ওই নির্দেশে বলা হয়েছে, সোমবার মধ্যরাতের মধ্যে দিল্লির হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেনের জোগান নিশ্চিত করতে হবে।
এই প্রসঙ্গে একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়ে বলেছে, দেশের সব রাজ্যের সঙ্গে কথা বলে যেন অতিরিক্ত অক্সিজেনের জোগান মজুত করে রাখে় কেন্দ্র। অর্থাৎ যাতে জরুরি প্রয়োজন পড়লে অক্সিজেনের মজুত ভান্ডার থেকে সংশ্লিষ্ট রাজ্যে অক্সিজেন সরবরাহ করা যায়।
করোনা ও অক্সিজেনের ঘাটতির জন্য দিল্লির একাধিক হাসপাতালের আবেদনের শুনানির পরে ৬৪ পাতার একটি রায়ে বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি এলএন রাও ও বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভট্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। রায় ঘোষণার সময় বিচারপতিরা বলেন, “অনেক হয়েছে। যতটা বরাদ্দ করা হয়েছে, তার থেকে বেশি কেন্দ্রকে দিতে বলা হচ্ছে না। কিন্তু বরাদ্দ অনুযায়ী দিতে হবে। যদি সোমবার মধ্যরাতের মধ্যে অক্সিজেন না দেওয়া হয়, তা হলে আমরা ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।”
তবে শুধু অক্সিজেনই নয়, করোনার টিকার দাম নিয়েও কেন্দ্রকে কটাক্ষ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই প্রসঙ্গে বিচারপতিরা বলেন, “গরীব বা প্রান্তিক মানুষরা হাসপাতালে গিয়ে টিকার জন্য ৬০০ টাকা দিতে পারবে না। আপনাদের দাম ভেবে দেখা উচিৎ।” সেই সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তির ক্ষেত্রে একটি কেন্দ্রীয় নীতি তৈরি করার জন্যও কেন্দ্রকে দু’সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।
শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশ প্রমাণ করছে, করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রের যে ভূমিকা নেওয়া উচিত ছিল সেটা তারা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। যার ফলে শীর্ষ আদালতের এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে। শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশ মেনে কেন্দ্র সোমবার মধ্যরাতের মধ্যে দিল্লির হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেনের জোগান স্বাভাবিক করবে এটা ধরে নেওয়া যায়।
তবে এর পরেও যদি সেটা কোনও ভাবে সম্ভব হয়ে না ওঠে তবে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালত কী ব্যবস্থা নেয় সেটাই দেখার। তবে অক্সিজেনের জোগান স্বাভাবিক না হলে দিল্লির হাসপাতালগুলিতে করোনা রোগীরা আরও বিপন্ন হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।