গরমের চোটে আমরা বেশির ভাগ সময় শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরের মধ্যে বসে থাকি। অথচ সেখান থেকেই মাঝে মাঝে গরমে বেরচ্ছি, ঢুকছি। স্নান করে ভেজা গায়েও অনেক সময়ে ঢুকে পড়লাম ঠান্ডা ঘরে। এতে শরীর খারাপ হয়ে সর্দিজ্বর হওয়াটা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু যে হারে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঘায়েল করছে সকলকে, যে একটু কাশি হলেও আমরা এখন আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ ফ্লু ভাইরাস আর করোনা ভাইরাসের উপসর্গগুলো অনেকটাই এক রকম। কী করে বুঝবেন আপনার কোনটা হয়েছে?
সংক্রমণ
ফ্লু ভাইরাস ছড়ায় হাওয়ায়। আর করোনা ভাইরাস মূলত ছড়ায় মানুষের সংস্পর্শে এলে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, করোনাও হাওয়ায় ছড়াচ্ছে। ফ্লু সাধারণত কয়েক দিনের মাথায় সেরে যায়। এবং এর প্রভাব খুব একটা গুরুতর নয়। কোভিড অনেক বেশি মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে এবং এই রোগের প্রভাবও দীর্ঘকালীন।
উপসর্গ
মুশকিলের বিষয়, দু’টো রোগেরই উপসর্গ প্রায় এক। গলা ব্যথা, জ্বর, কাশি, গায়ে ব্যথার মতো কিছু উপসর্গ আছে যেগুলো এক। তবে করোনার ক্ষেত্রে স্বাদ-গন্ধ চলে যাওয়াটা একটা বড় উপসর্গ, যা ফ্লুয়ের ক্ষেত্রে আপনি পাবেন না। বমি বমি ভাব হওয়া, শরীর অত্যধিক ক্লান্ত হয়ে যাওয়া— এগুলিও করোনার ক্ষেত্রে বেশি চোখে পড়ে। সাধারণত ফ্লু ভাইরাস সংক্রমণের ১ থেকে ২ দিনের মাথায়ই উপসর্গগুলি টের পাবেন আপনি। কিন্তু করোনার ক্ষেত্রে সেটা ৩ থেকে ৫ দিন পর বুঝবেন। আবার ১৪ দিন পরেও উপসর্গগুলি দেখা যায়।
কী করণীয়
নিজের শরীর ভাল করে বোঝার চেষ্টা করুন। একটু গলা ব্যথা বা জ্বর জ্বর ভাব হলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়বেন না। দু’দিন বোঝার চেষ্টা করুন শুধু গলা ব্যথা, ঠান্ডা লাগা এবং জ্বর ছাড়া কোভিডের অন্য কোনও উপসর্গগুলো চোখে পড়ছে কি না। গরম জলে গার্গল করুন। তুলসিপাতা-মধু ফুটিয়ে খান। ভেষজ চা খান বার বার। ২-৩ দিনের মধ্যে যদি দেখেন অবস্থার কোনও রকমই উন্নতি হচ্ছে না, অবশ্যই কোভি়ড পরীক্ষা করাবেন।
সাবধানের মার নেই। তাই যে ক’দিন আপনি উপসর্গগুলো বোঝার চেষ্টা করছেন, বাড়ির অন্য সদস্যদের থেকে আলাদা থাকুন। মাস্ক ব্যবহার করুন। পারলে আলাদা বাথরুম ব্যবহার করুন। আলাদা বাথরুম না থাকলে আপনি ব্যবহার করার পর বাথরুম স্যানিটাইজ করে তবেই বাকিদের ব্যবহার করতে বলুন। আলাদা বাসনে খান। দিনে দু’বার করে ভাপ নিন।