খোদ কলকাতার বুকে “পশ”বালিগঞ্জের চিত্র! শুধুমাত্র একটা বিধানসভায় ৪৫% হওয়াতেই এই অবস্থা। ভাবুন, ভাবতে শিখুন বাঙালি


খোদ কলকাতার বুকে “পশ”বালিগঞ্জের চিত্র! শুধুমাত্র একটা বিধানসভায় ৪৫% হওয়াতেই এই অবস্থা। ভাবুন, ভাবতে শিখুন বাঙালি।

গত ৪দিন ধরে বালিগঞ্জ বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী অত্যন্ত ভদ্র মানুষ আইনজীবী শ্রী লোকনাথ চ্যাটার্জী র সমর্থনে এই বিধানসভা জুড়ে প্রচার এবং নির্বাচনী নানা কাজ দলের হয়ে করে চলেছি।এই বিধানসভার অনেকটা অঞ্চল জুড়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাস। বিধানসভার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৫% সংখ্যালঘু(অধিকাংশই মুসলিম সম্প্রদায়)সম্প্রদায়।যারা প্রত্যেকেই আশা রাখি ভারতীয় এবং পশ্চিমবঙ্গের বৈধ ভোটার।কিন্তু এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাস যেই অঞ্চল গুলোতে সেখানে দলের হয়ে প্রচার করা বেশ কঠিন হচ্ছিল।আর সেটা একেবারেই কোন রাজনৈতিক কারণে নয়।(তবে বলতে দ্বিধা নেই বেশ কিছু ব্যতিক্রম ও আছে)
গত কালকেও প্রচারের শেষ লগ্নে আমাদের খড়্গপুরের বিজেপির প্রার্থী ছিলেন অভিনেতা হিরণ এবং বালিগঞ্জ এর বিজেপি প্রার্থী লোকনাথ চ্যাটার্জী কে নিয়ে মল্লিক বাজার থেকে প্রচার(মিছিল)শুরু হয় বিকেল ৪:৩০টে নাগাদ।তারপর ৬১নং ওয়ার্ডের জান নগর রোড ধরে আমাদের মিছিল এগোতে থাকে।এই অঞ্চলটি বেনিয়াপুকুর থানার অন্তর্গত।।।আমাদের মিছিলের সাথে উর্দিধারী ও উর্দি ছাড়া মোট ৪জন পুলিশ ছিল।যদিও পুলিশ আধিকারিকদের বক্তব্য আরো পুলিশ ছিল কিন্তু আমরা কেউ দেখতেই পেলাম না তাদের।আমাদের মিছিলে সব মিলে ৮০-৯০জন কর্মী ছিল।কেউই ৪জনের বেশি পুলিশ দেখতে পায় নি।যাইহোক মিছিল জান নগর রোড দিয়ে এগিয়ে চলেছে।শান্তি এবং সুশৃঙ্খল ভাবে।সেভাবে কোন স্লোগান দেওয়াও হয় নি ।বিজেপি জিন্দাবাদ,লোকনাথ চ্যাটার্জী আপনাদের কাছে এসেছে ,আপনারা আশীর্বাদ করুন।এইটুকুই।মিছিলে পুরোভাগে আমরা দু একজন ছিলাম।আমাদের সাথে দক্ষিণ কলকাতা জেলার লড়াকু সহ সভাপতি অনুপম ভট্টাচার্য্য দা ছিলেন।নজর রাখছিলাম আমাদের কোন কর্মী যেন শৃঙ্খলার বাইরে না যায়।যদিও আমাদের পূর্ন বিশ্বাস আমাদের কর্মীদের উপর আছে।কিন্তু জান নগরের সংখ্যালঘু ভাইরা বাইকে করে সেই মিছিলে ঢুকে পড়তে লাগলো।হর্ন বাজাতে লাগলো।অরাজকতা তৈরি করতে লাগলো।আমরা তাদের রাস্তা ছেড়ে দিলেও ঘুরে চলে আসে আবার।তারপর শুরু হলো আশীর্বাদের বদলে দোতলা বাড়ির ছাদ থেকে ইট বৃষ্টি,পঁচা ডিম ছোড়া আর অশ্রাব্য গালাগালি।কারণ আমরা হিন্দু।কেন আমার বাবা মা হিন্দু?কি ভাবে আমার হিন্দু র ঘরে জন্ম হলো?কবে এবং কি ভাবে আমাদের মা, বোনেদের কি করবে,কি ভাবে হিন্দু দের শেষ করবে তার ফিরিস্তি।আমার তখন প্রায় জান নগর রোডের মাঝখানে চলে এসেছি।এবং আমাদের কেটে ফেলবে তার ধমকি চলতে লাগলো।এই মহল্লায় নাকি হিন্দুদের প্রবেশ নেই।দিনের আলোতেই ধারালো অস্ত্র বেরিয়ে পড়েছে ততক্ষনে।এবং প্রায় কয়েকশো সখ্যালঘু মানুষ ঘিরে ফেলেছে।কোন রকম প্ররোচনা ছাড়াই কর্মীদের মারতে শুরু করলো।কারণ কেন আমরা এই গলিতে ঢুকেছি।আমার উত্তরীয় কেড়ে নিয়ে আমার মা বোন সবাইকে অশ্রাব্য গালিগালাজ করে হিন্দু হওয়ার অপরাধে আমায় কেটে ফেলবে বললো।হাত জোড় করে অনুরোধ করলাম যাই করো গেরুয়া উত্তরীয় টা ছেড়ে দাও ।শুধু আমায় নয় সবাই কেই এই ধরণের আপত্তিকর অশ্রাব্য নোংরা ভাষার প্রয়োগ এবং মার শুরু করলো।হাতে ব্লেড নিয়ে মারতে লাগলো।কারন আমরা বিজেপি করি বলে নয় বক্তব্য একটাই আমরা হিন্দু।পুলিশ নিশ্চুপ দর্শক।আমাদের দলের মহিলাদের জন্য চিন্তা বাড়তে থাকলো।দলীয় পতাকা ছিঁড়ে দিলো।কোনক্রমে প্রাণ হাতে করে সবাই কে ওই অঞ্চল থেকে বের করে আনতে পারলাম।লোক সংখ্যায় ওরা আমাদের থেকে অনেক বেশি ছিল।তারপর বেনিয়াপুকুর থানার বড় বাবু কে দেখলাম দূরে দাঁড়িয়ে আছেন।এবং পারকসার্কাস জুড়ে কয়েকশো সংখ্যালঘু মানুষ বেরিয়ে পড়েছে।তাদের মুখের ভাষা শারীরিক ব্যবহারের বহিঃপ্রকাশ ভাষায় বর্ণনা করা যাবেনা।বুঝতে পারলাম সত্যি মিনি পাকিস্থান তৈরি করার কাজ বেশ ভালো করেই চলছে।পশ্চিমবঙ্গের বুকে হিন্দু হওয়া যে অপরাধ সেটা কাল জান নগর রোডে গিয়ে বুঝলাম।আরো অনেক কিছুই বুঝলাম।অনেক কিছু ইচ্ছে হচ্ছিল।রাগে অপমানে মাথায় আগুন জ্বললেও নিজেকে এবং সকল কে সংযত রেখেছিলাম আমরা।স্বাভিমানে লেগেছিল কিন্ত সেই মুহূর্তে উপায় ছিল না।
শুধু বুঝলাম না কেন এই মহল্লায় আমরা হিন্দুরা ঢুকতে পারবে না??কেন ভোট প্রচার করা যাবে না??কেন ভারত বিরোধী আওয়াজ শোনা যাবে?কেনই বাআমাদের মা বোনেদের ইজ্জত নিয়ে নেওয়ার কথা শুনতে হবে???
আমি আগেও বলেছি আজ বলছি মুখে যে যাই বলুক বেশির ভাগ মানুষই কমিউনাল।শুধু হিন্দুরা তাদের কথা বললে বেশি সাম্প্রদায়িক হয়ে যায় এই যা।
কালকের এই ঘটনার তীব্র নিন্দা হওয়া উচিত।জানি হবে না।
ঠিক যে ভাবে বুদ্ধিজীবীদের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর কিছু না হলেও প্রাণ কেঁদে ওঠে সে ভাবে নিশ্চয়ই আজ কান্না পাবে না।জানি।
হ্যাঁ,আমি হিন্দু…আমি গর্বিত।হিন্দু আমার সম্মান,আমার পরিচয়।তার জন্য যদি আমি সাম্প্রদায়িক হই আমি গর্বের সাথে তা মেনে নিচ্ছি।।।
আর এত কিছুর পরেও একটি কথা বলি-আমার শিক্ষা,আমার সংস্কৃতি আমায় বিশ্বাস করতে শিখিয়েছে-ব্যতিক্রম আছে।কালকের আমার এই ভয়াভয়ো অভিজ্ঞতা সামগ্র ভারতীয় সংখ্যালঘু ভাই বোনদের প্রতিচ্ছবি নয় বলেই আমার বিশ্বাস।।যে মানুষটি আমায় সাহায্য করেছিল কাল ওই পরিবেশে থেকে সকলকে বার করার জন্য সেও কিন্তু সংখ্যালঘু ভাই ছিল।
আমাদের বিশ্বাস সবার সাথে সবার বিকাশ।
বাহবা জানাই ভাতৃপ্রতিম লোকনাথ চ্যাটার্জী কে তার নির্ভিকতা ও তার কর্মী দরদী মানসিকতার জন্য।।
জয় শ্রী রাম।।। 🚩🚩🚩
ভারত মায়ের জয় হোক।।।

Arunava Majumder এর দেওয়াল থেকে।
🙏🏻🙏🏻🙏🏻

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.