করোনা মোকাবিলায় মঙ্গলবার রবীন্দ্র সদনে স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সমস্ত সরকারি হাসপাতালের কর্তারা। ছিলেন পুর আধিকারিকরাও। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যে সেফ হোমের সংখ্যা বাড়ানো হবে। একইসঙ্গে হাসপাতালগুলিতে কোভিড বেডের সংখ্যা বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ মঙ্গলবার রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে কলকাতায় সম্ভাব্য সমস্ত উপায়ে করোনার বেড বৃদ্ধির নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই মুহূর্তে কলকাতা এবং রাজ্যে যে হারে করোনা বাড়ছে, তাতে যথেষ্ট উদ্বেগে রাজ্য সরকার। এই অবস্থায় আগেই বেসরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যসচিব। সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো কী অবস্থায় রয়েছে এদিন তার খোঁজ নেন তিনি। পাশাপাশি চিকিৎসা পরিকাঠামো কীভাবে ঢেলে সাজানো যায় তা নিয়েও আলোচনা হয় বৈঠকে।
এদিনের বৈঠকে জানানো হয়েছে চলতি সপ্তাহের শেষে ৮০০০ বেড কোভিডের জন্য বরাদ্দ হবে। ইতিমধ্যেই করোনা চিকিৎসায় বেসরকারি হাসপাতাল ২৫শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। বেড বাড়ানো হয়েছে ৩৪০০। ১০ টি ইএসআই হাসপাতালের প্রতিটিতে ৫০টি করে মোট ৫০০টি বেড কোভিডের জন্য রাখা হয়েছে। এই সপ্তাহের শেষে আরও ৯০০টি বেড রাখার ব্যবস্থা করা হবে। সমস্ত জেলাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নন সিরিয়াস পেশেন্টকে কলকাতায় রেফার করা যাবে না।
কয়েকটা জেলার হাসপাতালকে নিয়ে জোন তৈরি করা হয়েছে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান নিয়ে গঠিত একটি জোনের দায়িত্বে থাকবেন মনিশ জৈন। পূর্ব পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম নিয়ে গঠিত জোনের দায়িত্বে থাকছেন এমভি রাও। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলাকে নিয়ে গঠিত জোনের দায়িত্বে থাকছেন সুরেন্দ্র গুপ্তা।
অন্যদিকে এই প্রথম শম্ভুনাথ পন্ডিত হাসপাতালে কোভিড বেড এর ব্যবস্থা করা হল। এই হাসপাতলে ২২০টি শয্যা রাখা থাকবে। ১২টি পুলিস হাসপাতালে ৩৪০টি বেড রাখা হয়েছে। ২৮টি হোটেলে ৬৫৮টি রুম কোভিড আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে বরাদ্দ করা হয়েছে।
রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, যতটা সম্ভব রোগী রেফার করা বন্ধ করতে হবে। এক্ষেত্রে যদি কোনও সরকারি হাসপাতাল রোগীকে অন্য হাসপাতালে রেফার করে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট হাসপাতলে বেডের ব্যবস্থা রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করেই রেফার করতে হবে ৷ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বেড পাওয়ার আশায় হন্যে হয়ে ঘুরছেন করোনা রোগীরা ৷ নবান্ন মনে করছে, এই নির্দেশ কার্যকর হলে সাধারণ মানুষের হন্যে হয়ে হাসপাতালের বেড খোঁজা কিছুটা হলেও কমবে।