রাত পেরোলেই ভোর।ঘোর অমানিশার অন্ধকার কাটিয়ে ছড়িয়ে পড়ুক চতুর্দিকে নুতন সূর্যোদয়ের এক উজ্জ্বল সোনালী কিরণ।মুক্ত হোক সমস্ত বিদেশী শক্তির কালো ছায়া। একুশের নির্বাচন হোক বিদেশি শক্তির বিরুদ্ধে শুভ শক্তির প্রতিষ্ঠা করতে ।
একুশের নির্বাচন শুধুমাত্র রাজনৈতিক দল,বা ব্যক্তি পরিসরের নির্বাচন নয়।
একুশের নির্বাচন সমগ্ৰ হিন্দু সমাজের হিন্দুত্বের অস্তিত্ব লড়াইয়ের নির্বাচন। একুশের নির্বাচন স্বামীজী, রবীন্দ্রনাথ,বিদ্যাসাগর, ভগৎ সিং,ক্ষুদিরাম বসু,শিবাজী মহারাজ,ঝাঁসীর রানী লক্ষ্মী বাঈ,মাতঙ্গীনি হাজরা,ও নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোসের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে নির্বাচন।
আজ কোথায় গেল নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোস ও স্বামী বিবেকানন্দের সেই সোনার বাংলা? যে সোনার বাংলা তাঁহারা গড়ে ছিলেন।
বিগত ৩৪ বছর বাম শাসন রাজত্ব করার পর বাংলার মানুষ চেয়েছিল পরিবর্তন।চেয়েছিল উন্নয়ণ ও শান্তির পরিবর্তন আনতে।স্বাধীনভাবে মাথা উঁচু করে বাঁচতে চেয়েছিল। সেই দরুণ সকল ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে জনগনের ভোটে জয়যুক্ত হয়ে ক্ষমতার সিংহাসনে আসীন হন বর্তমান শাসক দলের তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তিনি ক্ষমতায় এসে কি করলেন? না ! মুসলিম তোষন ও ধর্মের রাজনীতি শুরু করলেন।যা বিগত ২০১১সাল থেকে ক্ষমতায় আসার পর দেখে আসছি। শুধুমাত্র ভোট ব্যাঙ্কের জন্য।
আজ ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ এই নয় সংখ্যাগুরু সমাজের প্রতি উদাসীন থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাছের লোক হয়ে ওঠা।এই বাস্তববোধ আমাদের প্রায় সকল বিরোধী রাজনৈতিক দল বিশেষকরে এই রাজ্যের শাসক দলের কাছে অপ্রিয় ছিল। আজ হিন্দু হয়ে নিজের আরাধ্য দেবতা জয় শ্রীরামের নাম নিলেও এই রাজ্যে আমাদের তিরস্কৃত ও গ্ৰেফতার হতে হয়। যেখানে আসাউদ্দিন অবৈসি বা আব্বাস সিদ্দিকীর মতো ধর্মগুরুরা রাজনীতিতে থেকে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে ধর্মীয় মৌলবাদের প্রচার করলেও কিংবা রাজ্যকে মিনি পাকিস্তান বলার দুঃসাহস দেখালেও কেউ কোন প্রতিবাদ করে না। কেউ কোন টুঁ শব্দ করে না।
আজ আমরা বিগত দশ বছরে দেখে আসছি, কিভাবে বর্তমান শাসক দল এক শ্রেনীর সম্প্রদায়ের শুধুমাত্র ভোট ব্যাঙ্ক পাওয়ার লোভে কিভাবে হিন্দু সংস্কৃতি কে ভূলুণ্ঠিত করে এসেছে।
আজ আমরা বিদ্যালয়ে বিদ্যার দেবী সরস্বতী আরাধনা করতে পারি না। কিন্তু শিক্ষাকেন্দ্রে নবী দিবস পালন করা হচ্ছে। বাঙালীর শ্রেষ্ট পূজো দূর্গোৎসব।সেই দূর্গা পূজোর দশমীর বিসর্জন বন্ধ করে মহরমের তাজিয়া বের করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে শাসক দলের পুলিশ প্রশাসন থেকে। কিভাবে বিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকে মুসলিম তোষনের নামে ইতিহাস কে বিকৃত করার কুচক্রান্ত রচা হয়েছে। যেখানে পাঠ্য পুস্তকে প্রার্থনা নমস্কারের ভঙ্গিমাতে ছিল সেখানে আজ শাসক দল নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রার্থনা কে কিভাবে নামাজের ভঙ্গিমাতে পরিণত করে শুধু মাত্র হিন্দু ধর্মকেই বার বার আঘাত করা হচ্ছে।এটাই কি বাংলার সম্প্রতি?এটাই কি সাম্প্রদায়িকতা? যদি সেটা হয়, তাহলে হিন্দুর রক্ষার্থে হিন্দুর স্বার্থে হুম আমরা সাম্প্রদায়িক।
আমরা দেখে এসেছি, গত বছর ২০২০কোলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় কিভাবে এক শ্রেনীর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোক হিন্দুদের প্রবিত্র ধর্মগ্ৰন্থ গীতার ওপর পা রেখেছিল।সেই একই কাজ যদি হিন্দুরা করতো তাদের ধর্মীয় গ্ৰন্থের ওপর তাহলে এতদিনে রাজ্যে আগুন লেগে যেত।কারণ রাজ্যের সাধারণ মানুষ দেখেছে কিভাবে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতায় রাস্তায় নেমে জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে প্রতিবাদের নামে জ্বলেছিল অসংখ্য ট্রেন, বাস,এছাড়াও বিভিন্ন যানবাহন। রাজ্যজুড়ে এই আইনের বিরোধিতার নামে কিরকম যথেচ্ছাচার চলেছে।এতে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিঘ্নিত হয়েছে। কোটি কোটি টাকার সরকারী সম্পক্তি ধ্বংস করে দেখিয়েছিল তাদের চরম উগ্ৰবাদীর পরিচয়। যেখানে যেখানে খুন,সন্ত্রাস, বোমাবাজি বিস্ফোরণের নামে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে সেখানেই জড়িত আছে এই এক সম্প্রদায়ের মানুষ। এগুলো আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। আজ যেখানে যেখানে সংখ্যালঘু সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েছে সেখানে সেখানেই হিন্দুদের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আজ আমাদের নিজের ঘরে আগুন লাগেনি তাই আমরা বুঝতে পারিনি।যেদিন নিজের ঘরে আগুন লাগবে সেদিন কিন্তু আমাদের বাঁচানোর জন্য আমাদের পাশে কাউকে পাবো না।
কালিয়াচক, মালদা,মুর্শিদাবাদ,ধূলাগড়,খড়গপুর ও চন্দ্রকোনাতেও দেখেছি হিন্দুদের বিভিন্ন মঠ-মন্দিরে ঢুকে দেব দেবীর বিগ্ৰহ ভাঙা হয়েছে। ফেলে রাখা হয়েছে গো-মাংসের টুকরো।শুরু হয়েছে বেছে বেছে হিন্দুদের বাড়িতে অত্যাচার।কিন্তু শাসক দল ও পুলিশ প্রশাসন দেখেও নির্বাক শিশুর মতন চুপটি করে গদি বাঁচানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন।আর এই নিয়ে কোন হিন্দু রাজন প্রতিবাদ করতে গেলে আর এক হিন্দু ভাই তার বিরোধিতা করছে।কারণ আমরা হিন্দুরাই হিন্দুত্বের ধ্বংসের মূল কারণ।তাই হিন্দুত্ব আজ ঘোর সংকটে।
এক হিন্দু ভাই আমাকে একদিন বলে,আমরা কিসের জন্য রামনবমীর শোভাযাত্রায় এত অস্ত্র বের করি। শুধুমাত্র কি কোন এক সম্প্রদায় কে ভয় দেখানোর জন্য? সেই ভাইয়ের প্রশ্নের প্রত্যুত্তরে আমি সেই ভাই কে বলি।কে বললো আমরা রামনবমীর মিছিলে অস্ত্র বের করি। কারণ তুমি জানো না, অস্ত্র কাকে বলে? তখন সেই হিন্দুভাই আমাকে বলে,অস্ত্র বলতে যেটা দিয়ে আমরা কোন কিছু আঘাত করি।আমি তখন বলি একদম ঠিক।যেটা দিয়ে কিছু আঘাত করি সেটাই অস্ত্র।তাহলে তুমি কি করে বলছো আমরা রামনবমীর শোভাযাত্রায় অস্ত্র বের করি?
বহুযুগ ধরে চলে আসা হিন্দু সনাতন পরম্পরায় শস্ত্র পূজনের মাধ্যেমে রামনবমীর শোভাযাত্রা শুরু করা হয়।যেটা কিনা বিজয়ের প্রতীক।তাই শস্ত্র ও অস্ত্র দুটোর মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য আছে। আমি আরও বলি, আচ্ছা মহরমে কি বের করা হয় শস্ত্র না অস্ত্র? তখন আমার সেই হিন্দু ভাই একদম চুপ।কারণ সে নিজেও জানে আমার প্রশ্নের উত্তর তার কাছে নেই।কারণ মহরমের শোভাযাত্রায় শস্ত্র না বরং অস্ত্র বের করা হয়।যেটা দিয়ে মুসলিম সম্প্রদায় হাসান-হোসেন নাম নিয়ে নিজেদের মধ্যে আঘাত করে।তাই সবার আগে আমাদের নিজেদের ধর্ম ও সংস্কৃতির জ্ঞান অর্জন করতে হবে। কিন্তু আমরা সেটা না করে অপর ধর্ম নিয়ে মাতামাতি করি।তাই আমাদের নিজেদের মধ্যে এত বিভেদ।নেই কোন একতা। আজ আমাদের গায়ে হাত দিচ্ছে,মা-বোন তুলে গালিগালাজ করছে কিন্তু আমরা চুপ করে বসে আছি।কারণ পুলিশ প্রশাসন তাদের গোলামে। প্রতিবাদ করতে গেলে আমাদের এ্যারেষ্ট করা হচ্ছে।এতটাই তাদের ষাঁড়ের মতন ছেড়ে দেওয়া হয়েছে সমস্ত রকম প্রশাসনিক সুযোগ সুবিধা দিয়ে।তাই বাংলায় পরিবর্তন দরকার।কারণ বর্তমান শাসক দল চাই বাংলাকে বাংলাদেশে পরিবর্তন করতে।যেটা আমরা কোনদিন হতে দেব না। কারণ এই বঙ্গভূমি স্বামী বিবেকানন্দের ভূমি। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভূমি।রাজা রামমোহন রায়, মাতঙ্গীনি হাজরা,ক্ষুদিরাম বোস,লোকমাতা রানী রাসমনির ভূমি। তাই যতদিন দেহে আছে প্রাণ। নিজের রক্ত দিয়েও রাখিব ভারতমাতার মান।না হলে কিন্তু হিন্দুদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।
বর্তমান শাসক দলের দাবী বাংলায় নাকি দশ বছরে আগের তুলনায় অনেক বেশি উন্নয়ন হয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্প চালু হয়েছে। রাস্তা ঘাট আগের তুলনায় অনেক বেশি উন্নত।মানুষ আজ সস্তায় দুটাকা কিলো চাল পাচ্ছে। মেয়েদের জন্য চালু করা হয়েছে কন্যাশ্রী প্রকল্প।চালু হয়েছে ফ্রীতে স্বাথ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা এছাড়াও ইত্যাদি ইত্যাদি। এগুলোই কি আমরা উন্নয়ন বলবো?এগুলো কোন উন্নয়ন না! বরং এগুলো উন্নয়নের নামে ভিক্ষে দেওয়া হচ্ছে।চাই না আমরা এমন উন্নয়ন।যে উন্নয়ণ আজ মানুষ কে বেকার থেকে আরো বেকারত্বের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
আজ আমরা যদি নিজের স্বার্থ ভুলে একটু ইতিবাচক চিন্তাধারা করি তাহলে ঠিক বুঝতে পারবো ফ্রীতে দেওয়া দুটাকা কিলো চাল মানুষের কতটা ক্ষতি করছে। আজ আমরা দুটাকা কিলো চাল পাচ্ছি বলে, আমাদের বেশি টাকা উপার্জন করার ইচ্ছা শক্তি টুকু মরে যাচ্ছে। আমরা যারা একদম গরীব শ্রেনীর মধ্যবিত্ত মানুষ তারাই বেশি এই প্রকল্পের শিকার হচ্ছি। যেখানে আমাদের বর্তমান বাজারে ৫০০টাকা উপার্জন করার চেষ্টা সেখানে আমরা ১০০থেকে ২০০টাকা উপার্জন করে বাড়ি ফিরে আসছি।কারণ আমাদের ফ্রীতে চাল আছে।তেল,ডাল,আলুর টাকা টুকু উপার্জন করলেই আমাদের সংসার শান্তিতে কোন রকমে চলে যাবে।একবারের জন্যও কি আমরা কেউ ভেবেছি এই প্রকল্পের জন্য আমরা কতটা দিনের পর দিন বেরোজকার হয়ে যাচ্ছি।
যেখানে নেই কোন কর্মসংস্থান। আজ যদি রাজ্যে শিল্পাঞ্চল থাকতো তাহলে কেউ কর্ম সংস্থানের অভাবে দুমুঠো অন্নের জন্য ভিন দেশে পাড়ি দিতে যেত না।আজ রাজ্যে দশবছরে একটাও শিক্ষক নিয়োগ নেই। বেকারত্বের সংখ্যা দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে অন্য রাজ্যে তুলনায় এ রাজ্যে।এটাই নাকি বাংলার উন্নয়ন। এদিকে বাংলায় মেয়েদের কন্যাশ্রী দিচ্ছে অপরদিকে সেই বাংলায় বিগত দশ বছরে নারী নির্যাতন,অ্যাসিড হানা ও ধর্ষণের মতন পাশবিক অত্যাচারের হার তিনগুণ বেড়েই চলেছে।যে রাজ্যে একজন মহিলা মূখ্যমন্ত্রী হয়ে মহিলারা আজ সুরক্ষিত নয়। আজ লাভ জেহাদের নামে এক সম্প্রদায় হিন্দুবাড়ির মেয়েদের ফেসবুকে ভুয়ো প্রেমের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক নির্যাতন করছে কিংবা বিয়ের নামে ধর্মান্তরিত করে ভিনদেশে পাচার করে দেওয়ার চক্রান্ত করে চলেছে। কিভাবে দিনের পর দিন চোখের সামনে এত ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরও একজন মহিলা মূখ্যমন্ত্রী হয়ে বলছে বাংলায় নাকি বাংলার মেয়েকেই চাই।লজ্বা লাগে না আপনার। আপনার মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেছেন, খেলা হবে। হুম খেলা তো হবেই এবার বাংলায়।আর সেটা পরিবর্তনের খেলা হবে।
যে বাংলার জনগণ আপনাকে বাংলার মসনদে বসিয়েছিল সেই বাংলার জনগনেই এবার আপনাকে মসনদের সিংহাসন থেকে নীচে নামিয়ে উচিত শিক্ষা দিতে দিতে বলবে, এ রাজা তোর কাপড় কোথায়? আর সেই সময় বেশিদূর নয়।
সপ্তদশ লোকসভা শেষে ভারতের আকাশ বাতাস শ্রীরামের জয় ধ্বনীতে গৈরিক বিজয় পতাকায় সেজে উঠেছে,আগের থেকে আরও গাঢ়,আরও বিস্তৃত,আরও ঘন।স্বামী বিবেকানন্দ শ্রীরামচন্দ্র সম্পর্কে বলেছেন, “প্রাচীন বীর যুগের আদর্শ,সত্যপরায়ণতা,ও নীতির সাকার মূর্তি, আদর্শ তনয়, আদর্শ পতি, আদর্শ পিতা, সর্বোপরি আদর্শ রাজা।”
আবার কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরামচন্দ্রের বর্ণনা করেছেন, “কে লয়েছে নিজ শিরে রাজভালে মুকুটের সম/সবিনয়ে সগৌরবে ধরাধামে দুঃখ মহত্তম/ কহ মোরে সর্বদর্শী।হে দেবর্ষী,তাঁর পুণ্য নাম / নারদ কহিলা ধীরে অযোধ্যার রঘুপতি শ্রীরাম।”
সেই মর্যাদাপুরুষোত্তম শ্রীরাম চন্দ্র কে মূখ্যমন্ত্রী বলেছেন, শ্রীরামচন্দ্র বঙ্গ সংস্কৃতির অঙ্গ নয়।শ্রীরামচন্দ্র নাকি বহিরাগত। যে শ্রীরামচন্দ্রের নাম শুনে একজন হিন্দু মহিলা মূখ্যমন্ত্রী হয়ে আপনি ক্ষোভে ফেটে দলীয় সভা থেকে উঠে এসেছিলেন।
যে শ্রীরামচন্দ্রকে আপনার দলীয় কর্মীরা রাম পাঁঠার সাথে তুলনা করেছিল।সেই শ্রীরামের বীজমন্ত্র কন্ঠে ধারণ করে আজকের যুবসমাজ সমগ্ৰ ভারতবর্ষকে এক নুতন দিশা দেখিয়ে ভারতকে আবার বিশ্বগুরুর আসনে অধিষ্ঠিত করবে।
“পরং বৈভবং নেতুমেতৎ স্বরাষ্ট্রম্ /সমর্থা ভবত্বাশিষা তে ভৃশম্।।’
এটাই হবে আমাদের একুশের নির্বাচনে দৃঢ় সংকল্প।কারণ আমরা জানি ভারত মাতাকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করতে যে ক্রান্তিকারীরা হাসতে হাসতে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন তাদের হাতে ছিল,গীতা আর দুই শব্দের সংস্কৃত ধ্বনী ‘বন্দেমাতরম’।যা ব্রিটিশরা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিল।
১৮৭০সালে সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এই গানটি রচনা করেন যা পরবর্তীকালে উনি তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ দেশাত্মবোধক প্রবন্ধ আনন্দমঠে ব্যবহার করেন। ব্রিটিশ বিরোধী সকল বিপ্লবী, সে অহিংস হোন আর সহিংস-এই মন্ত্রটি থেকেই শক্তি আহরণ করতেন।তাই ব্রিটিশরা সমগ্ৰ আনন্দমঠ প্রবন্ধটিকে বেআইনি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়।কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে, এই বিশুদ্ধ মাতৃবন্দনাকেও সাম্প্রদায়িক রং লাগানো শুরু করে কংগ্ৰেসের কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি।আর তাতে সমর্থন যোগায় সমাজের আরেক শ্রেনীর মানুষ।দাবি ওঠে, ‘বন্দেমাতরম’ ইসলাম বিরোধী। মুসলমান এ গান গাইবে না।
১৯৩৭সালে জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনে ঠিক হয় বন্দেমাতরম এর প্রথম দুটি স্তবকই শুধু মাত্র গাওয়া হবে।বাকি অংশ গাওয়া হবে না।কারণ তাতে দেশ মা’কে মা দূর্গা,মা লক্ষ্মীর এবং বিদ্যার দেবী সরস্বতী সাথে তুলনা করা হয়েছে। কিন্তু তারা ভুলে গেলেন,ভারতের শাশ্বত সংস্কৃতির কথা।অস্বীকার করলেন হাজার বছরের মাতৃ আরাধনাকে।ইসলাম এদেশে প্রবেশের অনেক আগে থেকেই এখানকার মানুষ দেশকে মা রুপে পূজা করে এসেছে।তাই দেশ মা কখনো হয়েছেন শক্তিরুপী দশপ্রহরণধারিনী দূর্গা,কখনো বিদ্যাদায়িনী সরস্বতী,কখনো বা কমলদলবিহারিনী মা লক্ষ্মী। আমাদের গর্ভধারিনী মায়ের পরে যদি কোন মায়ের স্থান থাকে তা শুধু মাত্র ভারত মা। আর এই ভারতমাতা ও দুই শব্দের প্রাণ পুরুষ ‘জয় শ্রীরাম’ নামের বীজ মন্ত্র কন্ঠে ধারণ করেই বঙ্গদেশে আবার ফিরে আসবে স্বর্ণময় যুগের সূচনা। তাই আমাদের এই ঘোর সঙ্কটের সময় নিজেদের মধ্যেকার মনমালিন্য কে দূরে রেখে সকলকে একত্রিত হয়ে রাষ্ট্রহিতে ও হিন্দুর অস্তিত্ব রক্ষার্থে একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের সঠিক নির্বাচনের মাধ্যেমে ভোটদান করা।কারণ আমাদের এই একটা ভোট অনেক মূল্যবান। আগামী দিনে হিন্দু সংস্কৃতি বজায় রাখা ও আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে সুরক্ষিত রাখার ওপর নির্ভর করছে শুধু মাত্র এই একটি ভোট। তাই সকলে সকাল সকাল ভোট কেন্দ্রে যাবেন ভোট দিবেন। হয়তো অনেকে ভাবছেন, সরকার আসলে আমাদের কি ! কোন সরকার আমাদেরকে কি দিয়েছে? এটা কখনো ভাববেন না। কারণ আমাদের খাটতে হবে আর খেতে হবে। সরকার কাছ থেকে আমরা কোন কিছু পাওয়ার আশায় ভোট দিয় না।কারণ প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য ভোটাধিকারে অংশগ্ৰহণ করে সঠিক নির্বাচনের মাধ্যেমে সঠিক সরকার কে রাজ্যে আনা। এবং সমাজে যাতে উন্নয়ন হয় সেই দিকে সক্রিয় ভাবে নিজের ভূমিকা পালন করা। তাই শান্তিপূর্ণ ভাবে স্বাথ্য সচেতনতা বিধি মেনে সকলে হাতে স্যানিটাইজার ও মুখে মাস্ক লাগিয়ে দূরত্ব বজায় রেখে ভোট দিতে যাবেন।এবং স্বামীজি ও নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে হিন্দুত্ববাদী সরকারকে রাজ্যে এনে আপনার ভারতমাতার প্রতি কর্তব্য পালন করবেন। কারণ আজ হিন্দু সনাতন ধর্ম ঘোর সংকটে।তাই একটি কবিতার ভাষায়, ধর্ম যবে শঙ্খরবে করিবে আহ্বান।নিরব হয়ে নম্র হয়ে পন করিও প্রাণ।
*সমাপ্ত*
কৌশিক দাস