মারণ ভাইরাস করোনা যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে তাতে জল্পনা তৈরী হচ্ছিলো যে বাতাসের মাধ্যমে ছড়াচ্ছে না তো এই ভাইরাস? এবার সেই জল্পনাকে সত্যি বলে দাবি করলো বিশ্ব বিখ্যাত মেডিকেল জার্নাল ল্যান্সেট।নয়া গবেষণায় উঠে এল একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য। গবেষকদের দাবি অন্যান্য মাধ্যমের পাশাপাশি বাতাসের মাধ্যেমেও দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে মারণ ভাইরাস করোনা।
সম্প্রতি আমেরিকা, কানাডা, ইংল্যান্ডের ছয় গবেষকের রিসার্চেই এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে বলে জানা গিয়েছে। যাতে দাবি করা হয়েছে কোভিড-১৯ বায়ুবাহিত হয়ে কিংবা অ্যারোসল বা জলকনার মাধ্যমে বাহিত হয়ে সর্বোচ্চ গতিতে ছড়াচ্ছে। বিশেষ করে জনাকীর্ণ, আবদ্ধ জায়গা যেখানে সঠিকভাবে বায়ুচলাচল করতে পারে না সেখানেও সংক্রমণ ছড়াতে সক্ষম এই করোনা ভাইরাস ।বিশেষ করে ঘরের বদ্ধ বায়ু থেকে বেশি সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আগে প্রাথমিক ভাবে দাবি করেছিল কোভিড-১৯ ভাইরাস প্রাথমিকভাবে সংক্রমিত ব্যক্তির নাক এবং মুখ থেকে বহিষ্কৃত ছোট ছোট জলের ফোঁটার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে স্পর্শ, হাঁচির মাধ্যমে তা অন্যান্য ব্যক্তির শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু বর্তমানে রিপোর্ট বলছে এই রাস্তা ছাড়াও বড়সড় পরিসরে বায়ুপথেও সংক্রমণ ছড়াচ্ছে কোভিড-১৯ ভাইরাস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকেও এই বিষয়ে গবেষণা এখন চলছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন বায়ু মাধ্যম ছাড়া ভাইরাসের এই দ্রুত গতির সংক্রমণ কার্যত অসম্ভব বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।কারণ তাদের বেশিরভাগই একে অপরের সংস্পর্শে আসেননি। বা এক অপরের সাথে দীর্ঘ সময়ও কাটাননি। তবে এই বিষয়ে আরও প্রমাণ সংগ্রহ এবং গবেষণার দরকার যে রয়েছে। যে সমস্ত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশি নেই অর্থাৎ লক্ষণহীন সংক্রমিত ব্যক্তিরা নীরবে এই ভাইরাস ছড়াচ্ছে। প্রায় ৪০ শতাংশ এইভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন।
সম্প্রতি রিপোর্টে জানা গিয়েছে,করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশে এবার ১ হাজার ৭৫০ জনের প্রতিদিন মৃত্যু হতে পারে। সংখ্যাটা বাড়তে-বাড়তে জুনের প্রথম সপ্তাহে ২৩২০ জনের কাছাকাছি পৌঁছতে পারে। চাঞ্চল্যকর এই রিপোর্ট জমার পাশাপাশি করোনা রুখতে এখনই কেন্দ্রীয় সরকারকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত হলেন ২ লক্ষ ১৭ হাজার ৩৫৩ জন। এই সময়ে মৃত্যু হয়েছে ১১৮৫ জনের।অন্যদিকে এই সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৩০২ জন। এত সংখ্যক মানুষ সুস্থ হওয়ার পরেও দেশে অ্যাক্টিভ আক্রান্তের গ্রাফ ক্রমেই বাড়ছে।