করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মহারাষ্ট্র। হাসপাতালে বেড নিয়ে সংকট দেখা দিতে শুরু করেছে। অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে এক ব্যক্তি বহু চেষ্টা করেও তাঁর করোনা আক্রান্ত বাবার জন্য কোনও বেডের সংস্থান করতে পারলেন না। শেষমেশ তিনি নিরুপায় হয়ে সরাসরি বলে বসলেন, “হয় ওনাকে হাসপাতালে বেড দিন বা ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলুন।”
মর্মান্তিক ঘটেছে সাগর কিশোর নাহারশেতিভারের সঙ্গে। করোনা আক্রান্ত বাবার জন্য তিনি মহারাষ্ট্র ও তেলাঙ্গানার একাধিক হাসপাতালে গিয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টা হাসপাতালের দোরে দোরে ঘুরেছেন তিনি। কিন্তু কোনও বেড পাননি। করোনা রোগীর সংখ্যা আচমকা বেড়ে যাওয়ায় স্থান সংকুলান হচ্ছে না। মুম্বই থেকে ৮৫০ কিলোমিটার দূরে চন্দ্রপুরে মিলছে না কোনও হেল্থকেয়ার ফেসিলিটি। ২৪ ঘণ্টা বন্ধ সেখানকার হাসপাতাল। স্থানীয় হাসপাতালের বাইরে অ্যাম্বুল্যান্সে রোগীদের অপেক্ষা করতে দেখা গিয়েছে। এমনি একটি অ্যাম্বুল্যান্সে সাগর কিশোরের বাবা ছিলেন। তিনি ক্রমাগত কাশছিলেন।
সাগর কিশোর বলেছেন, তিনি গতকাল বেলা ৩টে থেকে ঘুরছেন। প্রথমে তিনি ওয়ারোরা হাসপাতালে গিয়েছিলেন। এটি চন্দ্রপুরের একটি হাসপাতাল। সেখানে স্থান পাননি। তারপর তিনি প্রাইভেট হাসপাতালগুলিতে যান। সেখানেও স্থানাভাব। রাত দেড়চার সময় তিনি সোজা তেলাঙ্গানায় চলে যায়। সেখানে ভোর ৩টে পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে ঘোরাঘুরি করেন। কিন্তু সেখানেও কোনও বেড নেই। এরপর সকালে তিনি নিজের জায়গায় ফিরে আসেন। তারপর থেকে সেখানেই অপেক্ষা করছেন। এবার তাঁর বাবার অক্সিজেনে টান পড়তে শুরু করেছে। সাগর কিশোর তাই নিরাশ হয়ে বলছেন, “হয় ওনার জন্য বেডের বন্দোবস্ত করুন, নাহলে ওনাকে ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলুন।”
করোনার সেকেন্ড ওয়েভ তাণ্ডব চালাচ্ছে দেশজুড়ে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে মহারাষ্ট্রে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২ লক্ষ ছাড়িয়েছে। মৃত্যুহারও বেড়েছে। পরিস্থিতি সঙ্গীন।