শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে নিহতদের নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিটি জনসভায় অমিত শাহের তীব্র সমালোচনা করছেন। দাবি করছেন, মানুষ মারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইস্তফা দিন! পঞ্চম দফা ভোটের আগে সোমবার বর্ধমানের জনসভা থেকে ওইদিন সকালেই ইসলামপুরে বিহারের পুলিশ অফিসারকে পিটিয়ে মারার ঘটনা তুলে মমতার বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এদিন মোদী বলেন, “আপনারা দেখেছেন তো কী হয়েছে! বিহারের পূর্ণিয়া জেলার এক পুলিশ অফিসার বাংলায় এসেছিলেন তদন্তের কাজে। তাঁকে পিটিয়ে মেরে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর মায়েরও মৃত্যু হয়েছে। মা-ছেলের চিতা জ্বলছে একসঙ্গে। আর দিদি… আপনি এত কঠোর, এত নির্মম? এই আপনার বাংলার আইনশৃঙ্খলা?”
চতুর্থ দফায় ভোটের সকালে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে যায় উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে। বিহার পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্তাকে পিটিয়ে খুন করা হয় গোয়ালপোখর থানার পান্তাপাড়া গ্রামে। বিহারের কিষাণগঞ্জ থানার স্টেশন হাউস অফিসার (এসএইচও) অশ্বিনী কুমারের (৫০) মৃত্যুতে তোলপাড় পড়ে যায়। খবর পেয়েই ছুটে আসেন বিহারের পদস্থ পুলিশকর্তারা।
মোটরবাইক চুরির একটি চক্রকে ধরতে তদন্ত চালাচ্ছিলেন পুলিশ কর্তা অশ্বিনী কুমার। অপরাধীরা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলায় ঢুকে পড়েছে বলে খবর ছিল। উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে ওই চক্রের কয়েকজন পান্ডা লুকিয়ে আছে এমন খবর পেয়ে রাতেই নিজের টিম নিয়ে পৌঁছে যান অফিসার। তারপরই গ্রামবাসীদের গণপিটুনিতে মৃত্যু হয় এই পুলিশ আধিকারিকের।
অনেকের মতে, মোদী বোঝাতে চেয়েছেন মমতা জমানায় পশ্চিম বাংলা অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। এখানে আইনশৃঙ্খলা বলে কিচ্ছু নেই। মোদী এদিন বলেছেন, “দিদি কী করেছেন? ১০ বছর ধরে পুলিশের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছেন। তাঁদের দলের ক্যাডার বানিয়ে তোলবাজ, কাটমানিবাজদের সবা করতে বলেছেন। আর আইনশৃঙ্খলা শিকেয় উঠেছে।”
চতুর্থ দফার ভোটের দিনই শিলিগুড়ির সভা থেকে মোদী বলেছিলেন, মমতার উস্কানিতেই শীতলকুচির ঘটনা ঘটেছে। এদিন ফের একবার মমতাকে নিশানা করে মোদী বলেন, “কোচবিহারে যাঁরা মারা গেছেন, তাঁরাও মায়ের ছেলে। দিদি মায়ের কোল থেকে তাঁদের সন্তানদের কেড়ে নিয়েছেন।” সেইসঙ্গে মোদী ফের একবার নিমতার সেই বৃদ্ধার কথা তুলে ধরেন। বিজেপি কর্মীর সেই বৃদ্ধা মাকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তাঁর কালশিটে পড়া, রক্ত জমাট বাঁধা মুখের ছবির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মোদী বলেন, “সেই মায়ের মুখ চোখ বুজলেও মনে পড়ছে! কী নর্মম! কী হিংস্র এই তৃণমূল!”