শীতলকুচির ঘটনা মমতার ছাপ্পা ভোটের মাস্টারপ্ল্যানের ফল : প্রধানমন্ত্রী

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শীতলকুচির ঘটনার জন্য দায়ী করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর ফলে চতুর্থ দফার নির্বাচনের দিন শীতলকুচিতে সেনা বাহিনীর গুলিতে ৪ জনের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে লড়াই আরও জোরদার হলো।

শীতলকুচির গুলি চালানোর ঘটনায় তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কল্যাণীর জনসভা থেকে সরাসরি বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার নরেন্দ্র মোদী অভিযোগ করে বলেন, শীতলকুচির ঘটনা আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছাপ্পা ভোটের মাস্টারপ্ল্যানেরই অংশ। প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের দলিত, আদিবাসী, তফসিলি, মতুয়া, নমঃশূদ্র সবার ভোটাধিকার কেড়ে নিতে চান। সেজন্যই ছাপ্পার পরিকল্পনা করেছিলেন। আর তার ফলেই ঘটেছে শীতলকুচির ঘটনা।

কল্যাণীর সভা মঞ্চ থেকে নরেন্দ্র মোদী বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন রাজ্যের আদিবাসী, দলিত, তফসিলি, মতুয়া, নমঃশূদ্রদের ভয় দেখাচ্ছেন, ধমকাচ্ছেন, মারধর করছেন। কিন্তু দিদি, আপনি যতই ভয় দেখান, মোদীর প্রতি ওঁদের ভালভাসা কমাতে পারবেন না।”

প্রধানমন্ত্রীর দাবি, সোজা পথে বাংলার তফসিলি, মতুয়া, নমঃশূদ্রদের আটকানো যাবে না বুঝতে পেরেই মমতা এঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। ছাপ্পা ভোটের পরিকল্পনা করেছেন। মোদীর কথায় ,”মতুয়া-নমঃশূদ্রদের আটকানোর জন্যই দিদি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করার নিদান দিচ্ছেন। একটা দলকে বলছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করতে। আরেকটা দলকে বলছেন বুথে গিয়ে ছাপ্পা মারতে। এটাই দিদির ছাপ্পা মারার মাস্টারপ্ল্যান। শোনা যাচ্ছে, কোচবিহারের ঘটনাও সেই মাস্টারপ্ল্যানেরই অংশ। কিন্তু দিদি এভাবে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আপনি কেড়ে নিতে পারেন না। জয়-পরাজয় সব ভোটেই থাকে। দলিতদের অধিকার এভাবে কেড়ে নেওয়া যায় না। মতুয়া-নমঃশূদ্রদের অধিকার এভাবে কেড়ে নেওয়া যাবে না।”

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কল্যাণীর যেখানে বক্তব্য রাখেন সেটার একটা বড় অংশে মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোটার রয়েছেন। লোকসভার মতো বিধানসভাতেও সেই মতুয়া ভোটে যে বিশেষ নজর দিচ্ছে বিজেপি এই সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে । আর সেই জন্যই সোমবার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের ওড়াকান্দির সফর প্রসঙ্গ তুলে মমতাকে খোঁচা দিতে ছাড়লেন না। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বোঝাতে চাইলেন , মানুষের গণতন্ত্র রক্ষা করা মতুয়াদের ধর্মগুরু হরিচাঁদ ঠাকুরের জীবনের উদ্দেশ্য ছিল। আর সেই উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে অনুপ্রেরণা পেতেই বাংলাদেশের ওড়াকান্দি সফরে গিয়েছিলেন তিনি। এরপরই মমতাকে খোঁচা দিয়ে মোদী বলেন, “আমার ওড়াকান্দি যাওয়াটাই দিদির পছন্দ হয়নি। ওড়াকান্দিতে যাওয়াটা কী আমার ভুল ছিল? হরিচাঁদ ঠাকুরের কর্মভূমিতে মাথা ঠেকানো ভুল ছিল নাকি আমার?” এই কথা বলে প্রধানমন্ত্রী মতুয়াদের মন ছুঁয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.