ভারতে আরও ঊর্ধ্বমুখী দৈনিক করোনা-সংক্রমণের সংখ্যা। শনিবার সারাদিনে ভারতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ৫২ হাজার ৮৭৯ জন, এই সংখ্যাই এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি। বিগত ২৪ ঘন্টায় সমগ্র দেশে করোনা কেড়ে নিয়েছে ৮৩৯ জনের প্রাণ। টিকার রসদ ফুরিয়ে আসায় টিকাকরণের গতিও কমে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠে আসছে একাধিক রাজ্য থেকে। তার মধ্যেই দেশে দৈনিক নতুন সংক্রমণ দেড় লক্ষের কোটা পেরিয়ে গেল। তার ফলে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১ কোটি ৩৩ লক্ষ। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৩৯ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তাতে মৃতের সংখ্যাও বেড়ে ১ লক্ষ ৬৯ হাজার হল।রবিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে সংক্রমণ ধরা পড়েছে ১ লক্ষ ৫২ হাজার ৮৭৯ জনের শরীরে, আগের দিনের তুলনায় যা ৭ হাজার ৪৯৫ জন বেশি এবং দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে সর্বোচ্চ। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ১ কোটি ৩৩ লক্ষ ৫৮ হাজার ৮০৫ জন কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এই মুহূর্তে দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১১ লক্ষ ৮ হাজার ৮৭।করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় যে ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে, তাতে রবিবার থেকে আগামী ৪ দিন দেশে ‘টিকা উৎসব’ পালনের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান বলছে, আগের দিনের তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় টিকাকরণ কমই হয়েছে। শনিবার ৩৭ লক্ষ ৪০ হাজার ৮৯৮ জনকে প্রতিষেধক দেওয়া হয় বলে জানিয়েছিল কেন্দ্র। সেই তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ লক্ষ ১৯ হাজার ৯৮৭ জন প্রতিষেধক পেয়েছেন। অর্থাৎ ২২ হাজার ৯১১ জনের ফারাক। সব মিলিয়ে দেশে এখনও পর্যন্ত ১০ কোটি ১৫ লক্ষ ৯৫ হাজার ১৪৭ জনকে প্রতিষেধক দেওয়া গিয়েছে।রবিবার মৃতের সংখ্যাও ৮০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই ৩০৯ জন করোনা রোগী মারা গিয়েছেন। ১২৩ জন মারা গিয়েছেন ছত্তীসগঢ়ে। পঞ্জাবে ৫৮ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ৪৯ জন মারা গিয়েছেন গুজরাতে। উত্তরপ্রদেশ এবং দিল্লিতে যথাক্রমে ৪৬ ও ৩৯ জন করে মারা গিয়েছেন। ভোটের মরসুমে বাংলায় পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলায় নতুন করে সংক্রমণ ধরা পড়েছে ৪ হাজার ৪৩ জনের। মৃত্যু হয়েছে ১২ জন করোনা রোগীর। সব মিলিয়ে করোনার প্রকোপে দেশে এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ৬৯ হাজার ২৭৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন।তবে আগের তুলনায় করোনা পরীক্ষা বেড়েছে দেশে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ লক্ষ ১২ হাজার ৪৭টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে দেশে। আগের দিন সংখ্যাটা ছিল ১১ লক্ষ ৭৩ হাজার ২১৯। প্রতিদিন যতগুলি নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে যতগুলির রিপোর্ট পজিটিভ আসছে তাকে সংক্রমণের হার বলা হয়। আগের দিন এই সংক্রমণের হার ১২.৩৯ থাকলেও রবিবার তা কমে ১০.৮৩ হয়েছে। এখনও পর্যন্ত গোটা দেশে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৫ কোটি ৬৬ লক্ষ ২৬ হাজার ৮৫০টি।করোনার প্রকোপে এই মুহূর্তে মহারাষ্ট্রের অবস্থাই সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৫৫ হাজার ৪১১ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। ১২ হাজার ৭৪৮ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে উত্তরপ্রদেশে। দিল্লিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৮৯৭ জন। কর্নাটকে নতুন করে ৬ হাজার ৯৫৫ জন সংক্রমিত হয়েছেন।
2021-04-11