তফিসিলিদের ভিখারি মনে করে তৃণমূল, দিদি আপনার এত অহঙ্কার? তোপ মোদীর

শনিবার সকালে প্রশান্ত কিশোরের টেপ ফাঁস হয়েছে। তাতে শোনা গিয়েছে পিকে বলছেন, বাংলার ২৭ শতাংশ তফসিলি ভোট নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মজবুত হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেই ভোট যেন তাঁর সঙ্গেই থাকে দুপুরে শিলিগুড়ির সভা থেকে সেটাই যেন নিশ্চিত করতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

চতুর্থ দফার ভোটের দিন বাংলায় প্রচারে এসে নাম না করে আরামবাগের তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল খাঁয়ের বক্তব্যকে হাতিয়ার করে দিদিকে নিশানা করলেন মোদী।

কী বলেছেন প্রধানমন্ত্রী?

এদিন প্রধানমন্ত্রী শিলিগুড়ির জনসভায় বলেন,“সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও দেখলাম। দিদির এক নেতা বলছেন, তফশিলী জাতিভুক্ত মানুষরা ভিখারি। দিদি…… আপনার এত অহঙ্কার? এই আপনার দলের চিন্তাভাবনা? পিছিয়ে পড়া মানুষকে তাঁরা ভিখারি বলছেন?”

সুজাতা কী বলেছিলেন?

আরামবাগে ভোটের দিন কী হয়েছিল তা ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল। তৃণমূল প্রার্থী সুজাতার ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে বাঁশ নিয়ে তাড়া করেছিলে বেশ কিছু গ্রামবাসী। পরে সুজাতা ক্ষোভ উগরে দিয়ে ক্যামেরার সামনে বলেছিলেন, সব শিডিউল কাস্ট লোকজন… আমি ওদের বললাম, তোমাদের তো মমতাদি অনেকে দিয়েছেন। তাও তোমরা ভিখারির মতো করছ কেন? আসলে যতই দিন, এদের পেট ভরে না! এখানে বলে রাখা ভাল, সুজাতা নিজেও তফসিলি জাতিভুক্ত। আরামবাগ কেন্দ্রটিই তফসিলি সংরক্ষিত আসন। দিদিও সব মিটিংয়ে বলছেন, ওরা আমার এসসি প্রার্থী সুজাতাকে মেরেছে। ওর সিকিউরিটির মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে।

অনেকের মতে, সুজাতা সেদিন এমন কিছু মন্তব্য করেছিলেন, যা কতটা সমীচীন তা নিয়ে সন্দেহ আছে। প্রথমে একজনকে ফোনে বলছিলেন, “সব মুসলমান ছেলেরা দাদা ভয় পাচ্ছে। আমি ওদের বললাম, তোরা ভয় পাচ্ছিস কেন? তোদের তো মমতাদি এত দিয়েছে! তাও ওরা এগিয়ে এল না দাদা। তুমি ভোট বয়কট করে দাও।” সুজাতা কাকে ফোন করছিলেন জানা যায়নি তবে সমস্ত কথা ক্যামেরাবন্দি হয়েছিল। বিজেপির এক মুখপাত্র বলেন, আসলে তৃণমূল কতটা সাম্প্রদায়িক দল তা সুজাতার বক্তব্যেই পরিষ্কার। এবং এটাও সেদিন স্পষ্ট হয়েছে, ভোট খোয়া গেলেই তৃণমূল সংখ্যালঘু এবং অনগ্রসর শ্রেণির মানুষদের কেমন এক মুহূর্তে ভিলেন বানিয়ে দিতে পারে।

বস্তুত তফসিলি ভোট নিয়ে বাংলায় এবার বিজেপি-তৃণমূল কাড়াকাড়ি তীব্র। প্রশান্ত কিশোরের টেপ যদি ঠিক হয়, তা হলে বুঝতে হবে তৃণমূল ধরে নিয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠ তফসিলি ভোট বিজেপির সঙ্গে থাকতে পারে। তাছাড়া দেখা যাচ্ছে, বিজেপি সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা থেকে শুরু করে অমিত শাহরা তফসিলি শ্রেণির মানুষের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ করছেন। তাঁদের কাছে টানতে চাইছেন। সেই পরিস্থিতি পাল্টা কৌশল নিচ্ছে তৃণমূলও। তফসিলিরা যাতে বিজেপির থেকে দূরে থাকে সেই চেষ্টা করছেন মমতা। এমনকি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার এক সভায় দিদিও এও বলেন, বিজেপি নেতারা তফসিলিদের হাতে খান না। বাইরে থেকে খাবার আনিয়ে খান।
তবে এ সবই চাপানউতোর এবং কৌশল-পাল্টা কৌশল। সামাজিক ভাবে অনগ্রসর শ্রেণির প্রকৃতপক্ষে কাদের দিকে যায়, তা জানা যাবে ২ মের পর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.