শীতলকুচির জোড় পাটকির ১৩৬ নম্বর বুথে সিএপিএফ -এর গুলিতে ৪ জনের মৃত্যু। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে গুলি চালিয়েছে সেনা বাহিনী। তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন এই ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের কাছে জবাব দাবি করেছেন। বলেছেন, “এই রক্ত উপত্যাকা আমার দেশ নয়, আমরা শান্তি চাই।” অভিযোগ মৃত ৪ জনই তৃণমূল কর্মী।
মৃতের আত্মীয়রা জানিয়েছেন, “এই জোড়া পাটকির ১৩৬ নম্বর বুথে শান্তিতেই ভোট হচ্ছিলো। ভোট হচ্ছিলো তৃণমূলের পক্ষে। তাই বিজেপি সেনা বাহিনীদের দ্বারা আমাদের ৪ জনকে গুলি করে মেরেছে ।
এই প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব বলেন, “এই গুলি চালনার ঘটনার নিন্দা করার ভাষা নেই। নির্বাচন ঘোষণার পর যেভাবে তৃণমূল ও বিজেপি ক্রমাগত যেভাবে হিংসাত্মক ভাষণ ফিয়ে যাচ্ছেন তার ফলেই এত ৪ জনের প্রাণ দিতে হলো। এটা কোনওভাবেই কাম্য নয়। বিজেপি, তৃণমূলের ভাষণের ভাষা, এলাকায় ভাঙচুরের ফলেই এই ঘটনা হয়েছে।”
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “আমরা সব শুনেছি। আমি এই গজোত্নার তীব্রই নিন্দা করছি। কেন্দ্রীয় বাহিনী বাড়াবাড়ি করছে বলে আমরা বার বার অভিযোগ করছিলাম। আগে সেটা প্রমাণ হলো।”
এদিকে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার সেনা বাহিনীর গুলি চালনার ঘটনায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণকেই দায়ী করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েকদিন ধরে দলের কর্মীদের সিআরপিএফ-এর বিরুদ্ধে উত্তেজিত করছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে তৃণমূলের সব স্তরের কর্মী, মহিলা কর্মীদের মঞ্চ থেকে বলছিলেন আক্রমণ করতে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এভাবে দেশ বিরোধী কাজ করেছেন। কেন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে আক্রমণ করার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উস্কানি দিচ্ছিলেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই জাতীয় বক্তব্যের ফলে ওই এলাকায় অঘটন ঘটতে পারে, সেটাই হলো।”
এদিকে নির্বাচন কমিশনের পুলিশ অবজার্ভার নির্বাচন কমিশনে এই ঘটনার যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে তাঁরা বলেছেন, প্রায় ১০০ মানুষ ওই বুথের সামনে ভোট দেওয়া নিয়ে বচসা চলছিল। তখন সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছলে উত্তেজনা বাড়ে। তার পরই আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য সেনা বাহিনী এই গুলি চালায়। কেন্দ্রীয় বাহিনীই গুলি চালায়। তাতে ৪ জনের মৃত্যু হয়।
এবার প্রশ্ন উঠছে, পুলিশ কী সেনা বাহিনীর পথ দেখানোর দায়িত্বে ছিল? কেন সেনা বাহিনী হাঁটুর নিচে গুলি না চালিয়ে এমনভাবে গুলি চালালো তার ফলে ৪ জনকে মারা যেতে হলো? কেন এই পরিমান সেনা মোতায়েন করেও শীতলকুচিতে শান্তিতে নির্বাচন করা গেল না? এর আগেই দিলীপ ঘোষের গাড়িতে শীতলকুচিতে হামলা হয়ে ছিল। তখনই কমিশনের কাছে শান্তিতে নির্বাচন করার আবেদন জানিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। তার পর এই ঘট না কী ভাবে ঘটলো? প্রশ্ন সেটাই । এদিকে এই ঘটনার জেরে তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, রাজ্যের হাতে এখন আইনশৃংখলা নেই এই পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী আসার পরও কেন এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটছে? আমরা শান্তি চাই।