রাফালে ফাইটার জেটস চুক্তিতে ভারতীয় মধ্যস্থতাকারীকে এক মিলিয়ন ইউরো টাকা দিয়েছে ফরাসি বিমান নির্মাতা দাসো। ফরাসী দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষকে এনিয়ে কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারেনি ফ্রান্সের এই সংস্থা। রবিবার এই খবর প্রকাশিত হয়েছে। গত ২ বছরে রাফালে হল সেই যুদ্ধ বিমান যা ভারত কিনেছে।
২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে ফ্রান্সের দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষ এই লেনদেনের কথা জানতে পারে। এরপরই রাফালে প্রস্তুতকারক সংস্থা দাসোকে এ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা। ২০১৬ সালে ২৩ সেপ্টেম্বর রাফালে চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার পর দাসো ভারতের একটি সাব কন্ট্রাকটরকে এই টাকা দেয়। দাসোর তরফে জানানো হয়, ভারতীয় ওই সংস্থাকে এই টাকা দেওয়া হয়েছে ৫০টি রাফালের বড় রেপ্লিকা বানানোর জন্য। যদিও ফ্রান্সের এই সংস্থা এনিয়ে কোনও প্রমাণ দাখিল করতে পারেনি। এমনকী কেন এই রেপ্লিকা বানানোর প্রয়োজন পড়ল তার সদুত্তরও দিতে পারেনি দাসো।
ফ্রান্সের দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষ তদন্তে জানতে পারে দাসো ভারতকে যে উপহার দিয়েছিল তার জন্য ৫ লক্ষ ইউরো খরচ হয়েছিল। কিন্তু পরে দেখা যায় এর চেয়ে অনেক বেশি টাকা খরচ হয় এই প্রজেক্টে। যার অঙ্ক প্রায় দ্বিগুণ। তার উপর দাসো যে ভারতীয় সংস্থাকে এই বরাত দিয়েছিল তার নাম ডেফসিস সলিউশন। এর প্রধান সুষেন গুপ্তা। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে অগাস্টা ওয়েস্টল্যান্ড কাণ্ডে টাকা তছরুপের মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে ইডি। যদিও তিনি পরে জামিনে মুক্তি পান।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ৩৬টি রাফালে কেনার জন্য ফ্রান্সের সঙ্গে চুক্ত করে ভারত। ৫৯,০০০ কোটি টাকা দিয়ে এই চুক্তি করা হয়। সেই চুক্তির ভিত্তিতেই ভারতের হাতে রাফালে জেট তুলে দেয় ফ্রান্স। ২০২০-র ১০ সেপ্টেম্বর প্রথম ভারতীয় বিমান বাহিনীতে যখন ৫টি রাফালে আনা হয়েছিল সে সময় সেই অনুষ্ঠানে ৯.১৮ লক্ষ জিএসটি মিলিয়ে মোট খরচ হয়েছিল ৪১.৩২ লক্ষ টাকা। এই বিমানের কিছু বিশেষত্ব রয়েছে। এই যুদ্ধবিমানে একবার জ্বালানী ভরা হলে এটি ১০ ঘণ্টা একটানা হাওয়ায় উড়তে পারে। এছাড়া উড়তে উড়তেও জ্বালানী ভরতে পারে এই যুদ্ধবিমান। রাফালে সর্বাধিক গতি রয়েছে ২১৩০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা। যা সমস্যায় ফেলতে পারে অন্য যুদ্ধবিমানকে। রাফালের আকার এই যুদ্ধবিমানকে হাওয়ায় লড়াই করতে সাহায্য করে। রাফালে দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে যথাক্রমে ১৫.২৭ মিটার ও ১০.৮০ মিটার।