কমিউনিস্ট প্রার্থীর একজনেরও ফেসবুক প্রোফাইল বা পেজ থেকে সেই ঘটনার নিন্দা করে, মাওবাদীদের হাতে নিহত জওয়ানদের শোকজ্ঞাপন করা হয়নি

মীনাক্ষী মুখার্জী, ঐশী ঘোষ, চন্ডীচরন লেট, পৃথা তা, সৃজন ভট্টাচার্য্য, দেবদূত ঘোষ, প্রতিক উর রহমান, মধুজা সেনরায়, দেবজ্যোতি দাস, লাহেক আলী, সুশান্ত বেসরা, সুতনু মাইতি, মোনালিসা সিনহা, শতরূপ ঘোষ।

সিপিএমের এই চোদ্দজন ক্যান্ডিডেট। যাঁদের নিয়ে প্রচার আর হাইপ সবথেকে বেশি। সিপিএমের এই চোদ্দজন নতুন মুখ নাকি একদম পৃথিবী পাল্টে দেওয়া তরুণ তুর্কি। সবাই সর্বহারা। সবাই বিরাট উচ্চশিক্ষিত।

অবশ্য বাম-আব্বাস-কংগ্রেস জোটের বাকি ২৮০ জন প্রার্থীকে নিয়ে সেরকম কোন উচ্চবাচ্য নেই। সিপিএম এই চোদ্দ দিয়েই ২৯৪কে বোঝাবার মার্ক্সীয় গণিততত্ত্বের প্রয়োগ করেছে।

কিন্তু দেখার বিষয় হল, আজ দুপুরে ভারতবর্ষে একটা মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেছে। ছত্রিশগড়ে মাওবাদীদের হামলায় ভারতের অন্তত ২২ জন জওয়ান নিহত হয়েছেন, ৩২ জন আহত। শেষ পর্যন্ত আহত-নিহত জওয়ানদের সংখ্যাটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে এখনো কেউ বলতে পারছে না।

এবার এই চোদ্দজনের একজনেরও ফেসবুক প্রোফাইল বা পেজ থেকে সেই ঘটনার নিন্দা করে, মাওবাদীদের হাতে নিহত জওয়ানদের শোকজ্ঞাপন করা হয়নি। আমি রিপিট করছি। একজনের ফেসবুক প্রোফাইল বা পেজ থেকেও না। একটা পোস্টও না। কেন? এঁরা যদি সত্যিই সিপিএমের নতুন মুখ হবেন, তাহলে মাওবাদীদের জওয়ান মারার ঘটনার নিন্দা করবেন না কেন? ও এক মিনিট, এক মিনিট। এঁদের কয়েকজন তো আবার জেএনইউ ফেরত। সেখানে তো আবার বছর পাঁচেক আগে, এইরকমই এক মাওবাদী হামলায় ভারতীয় জওয়ানদের মৃত্যুতে উল্লাস করে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছিল। আবার এখানকার যারা নাম করা নকশাল, তাঁদের অনেকের সাহায্য তো এবারের আব্বাস ব্রিগেডের সময় থেকেই সিপিএম নিয়েছে, নিচ্ছে। তারমানে শুধু মুখগুলোই নতুন। নীতি সেই পুরনো। ভারতের বিরোধিতা। ভারতের কোন ক্ষতি এঁদের পিতৃভূমি কমিউনিস্ট চীনের ভারতীয় এজেন্টরা করলে, সেটা নিয়ে উল্লাস করা। নেহাত ভোটের সময়। এঁদের সায়লেন্ট পার্টনার নকশাল-মাওবাদীদের হাতে ভারতীয় জওয়ান মরা নিয়ে নাচানাচি করলে ইমেজটা পাঞ্চার হয়ে যাবে। তাই নীরব থেকেই মনে মনে আনন্দ করো। তবে ভুলেও শোকপ্রকাশ করো না। তাহলে “আমাদের চেয়ারম্যান, চীনের চেয়ারম্যান” রেগে যাবে। ভুলে যেও না, সিপিএম তৈরিই হয়েছিল চীন-ভারত যুদ্ধের সময় চীনকে সমর্থন করার জন্য। চীনের প্রতি লয়ালটির সেই ভিত্তি যাতে অক্ষুন্ন থাকে, সেটা সাদা চুল কমরেড থেকে আজকের চোদ্দজন নতুন কমরেড সবাইকেই দেখতে হবে। তবেই চীনের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য, যাকে অশিক্ষিত দেশভক্তরা চীনের দালালি বলে, সেটা বজায় থাকবে। মাওবাদীরা চীনের সরাসরি প্রতিনিধি। আর এঁরা, সিপিএমরা বিপ্লবের প্রয়োজনে কমিউনিজমের মূলধারা থেকে একটু আলাদা হয়ে ভারতের মূলধারায় ঢুকে গেছেন। কিন্তু তাই বলে তো আর আনুগত্য পাল্টায়নি। উদ্দেশ্য এক, লক্ষ্য এক, ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামো ধ্বংস করে, কমিউনিস্ট চীনের কলোনি বানানো। সেই লক্ষ্যে সবদিক দিয়েই যাতে কাজ করা যায়, তাই শুধু পথটা একটু আলাদা করা। অতএব মাওবাদীরা ভারতীয় জওয়ান মারলে সিপিএমের মেকওভারের নতুন মুখরাও চীনের দালালির সেই চিরাচরিত নীতিই অনুসরণ করেন। সামনের মেকওভারের এই মুখোশটার, এই পর্দাটার বাইরে কিছুই পাল্টায় নি। সিপিএম ভারতবিরোধী কমিউনিস্ট চিনের দালাল ছিল, আছে, থাকবে।

লিখেছেন – Deep Chatterjee

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.