পয়সাওয়ালা celebrity; যারা আমাদের সমাজে বাঁচে না, যাদের জীবনধারার সঙ্গে এই দেশের জনসাধারণের জীবন খাপ খায় না তাদের কোনো অধিকার নেই আমাদেরকে আমাদের জীবন নিয়ে জ্ঞান ঝাড়ে

বিজেপির বিরোধীতায় মূলত সোচ্চার কারা? সাধারণ মানুষ? হলে তাদের বক্তব্য কই? তাদের বক্তব্য কি আর বড় বড় channelএর studioতে মেলে? নাকি ফটর ফটর করে ইংরিজিতে লেখা twitter-facebookএ?
এই সাধারণ লোকেদের বক্তব্য জানতে বাসে/ট্রেনে/অটোয় ঘামতে ঘামতে দুটো কথা বলুন, দোকানে কিছু কেনার সময় দুটো কথা বলুন, এমনি বাজারে দরদাম করা থেকে ঝগড়া করার সময় দুটো কথা বলুন, কলতলায় বা রেশনের দোকানের লাইন দেওয়ার সময় দুটো কথা বলুন; বুঝে যাবেন বর্তমানের আবহাওয়া কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে।
ঠাণ্ডা ঘরে ল্যাধ খেয়ে শোয়া বা cafeতে একটু ঠাটে আয়েস করে দরকারের চেয়ে বেশি দাম দিয়ে খাবার ঠোসা সোনামণি আর বাবুদের কি আর এই মেঠো কর্মঠ ভারতবর্ষ নিয়ে কোনো ধারণা আছে?
No Vote to BJP campaignএর মুখগুলো দেখেছেন? এক কথায় celebrity ও তাদের ধামাধরা বড়লোক একটা গোষ্ঠি বাদে কাউকে দেখেছেন?
এদের বিজেপি নিয়ে ভয় কেন? কারণ বিজেপি সুশীল নয়। সুশীলদের প্রধান গুণ তারা হাজার অশিক্ষিত হলেও পণ্ডিতের সম্মান চায়। সে চায় না সমাজে তার উঁচু নাককে কেউ পাত্তা না দিক। সে চায় সবসময় যেন লোকে তার পুজো করুক। গেরুয়া ঝড় এই কাগুজে দেবতাগুলোকে জুতোর নিচে রাখছে; অতএব তারা সইবে কেন? মাতালের মদের রসদ যদি বন্ধ করেন সে কি আর আপনার বন্ধু থাকবে?
সাধারণ রাজ্যবাসীদের এই সুশীলরা অনেক বাজে বাতেল দিয়ে ওস্কাবার চেষ্টায় থাকে। বিদ্যে তো তিলমাত্র নেই, এদিকে বকবকের বহর দেখলে ভারতবর্ষের ঋষি থেকে গ্ৰীকদের পণ্ডিতরা অবধি দাঁত কেলাবে। যদি এদের কোনোরূপ বক্তব্য শোনেন তো ওই এক থোড়-বড়ি-খাড়া খাড়া-বড়ি-থোড় পাবেন। যেমন-
নজরুলের একইবৃন্তে দুটি কুসুম….. রবীন্দ্রনাথের কিছু মানবতা নিয়ে বাণী, নেতাজী আর গান্ধিজীর কয়েকটা ভাষণের অংশ, হিন্দুদের কেন উদার হওয়া উচিত তা সে যতই মার খাক, রাম খারাপ, ব্রাহ্মণ খারাপ, দলিতদের আসল বন্ধু মুসলিম ইত্যাদি ইত্যাদি। আর থেকে থেকে ন্যাকা হেঁচকি “বাঙালি সমাজ কোথায় যাচ্ছে? ” কোনোদিনও দেখবেন না এরা এর বাইরে অন্য কিছু বলেছে। Internetএ পাওয়া সবচেয়ে common কিছু quote আর class 10এ পড়া কিছু generic কবিতা আর সাহিত্য দিয়েই এদের ভাষণ চালিয়ে দেয়! এরা বুদ্ধিমান নয়, অশিক্ষিত ধূর্ত।
বস্তুতঃ বঙ্গসমাজ এই মাতাল, লম্পট, বড়লোকী সমাজের জ্যাঠামশাইদের হাতে ১৯৭০থেকেই গাধার গাঁ* গেছে! এদের রাজনৈতিক দলেরা পুষে এসেছে আর এরা প্রভুর দেওয়া pedigree গিলে লম্বা লম্বা ঘেউ তুলে বাঙালী সমাজ নিয়ে একটা সংকীর্ণ আর অহংকারী ছবি তৈরী করেছে। বাস্তবে যদি জেলা বা গ্ৰামে যান তো দেখবেন যে রাজ্যবাসী বড় একটা বাঙালী মনিষী নিয়ে খোঁজ রাখে না। এদের কাছে রবীন্দ্রনাথ কি বিবেকানন্দর পরিচিতি হয় সরকারী ছুটি, সামাজিক উৎসব, ছেলেবেলায় এদের নিয়ে কিছু পড়া আর সিনেমা সিরিয়াল। এর বাদে তারা বড় একটা এসব মনিষী নিয়ে অবগত নয়। কারণ তারা পড়ে না। পড়বেই বা কেন? তাদের সময় কই? সুশীল বাবুরা যে থেকে থেকে instagramএ “reading this new novel. Must read. ” এর মত কেলোয়াতি post দেয়, অত সময় বা ঠাটের অবকাশ রাজ্যবাসীর আছে?
বাম আমল থেকে লোকেদের উস্কে একের পর এক বন্ধ ডেকে হাজার হাজার কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনু আমলে ভিখিরির মত ভাতা পাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে, যেটা আবার দল করলে পাওয়া যায় নচেৎ নয়। বিশেষ সম্প্রদায় যতই শহর জেলায় আগুন জ্বালাক আর ভাঙচুর করুক তাদের শান্তিপ্রিয় বলে বাহবা দেওয়া হয়। ধর্ম হোক চাই জীবিকা, এই রাজ্যবাসীর কাছে উপায় আছে কোথাও একটু স্বস্তি পায় যে সুশীল বাবুদের মত একটু পড়াশোনার বাই দেখিয়ে নাম করবে? গত ৪০বছর ধরে রাজ্যটা ভিখিরি হয়েছে। মুম্বাই থেকে বেঙ্গালুরুর আয় থেকে পরিকাঠামোর উন্নতি দেখার মত আর আমাদের রাজ্যে আজো লোকের আয় এমনই যে একজন এক মাস কাজ থেকে বসে গেলে তার সংসার অন্ধকারে চলে যাবে। এই রাজ্যবাসীর সুশীলবাবুদের মত ঠাট মারার সুযোগ কই?
বিবেকানন্দ এর জন্যই বলেছিল যে দরিদ্র মূর্খ ভারতবাসী আমার ভাই। একদম। এই দেশবাসীদের কপালে সুখ সেরম জোটে না কিন্তু আজো নিজেদের সংস্কৃতি ও দেশের মান রাখতে জানে।
পয়সাওয়ালা celebrity; যারা আমাদের সমাজে বাঁচে না, যাদের জীবনধারার সঙ্গে এই দেশের জনসাধারণের জীবন খাপ খায় না তাদের কোনো অধিকার নেই আমাদেরকে আমাদের জীবন নিয়ে জ্ঞান ঝাড়ে। অল্প কাজ করে গুচ্ছের টাকা কামানো সুশীল বাবু কখনই ১৮ঘন্টা খেটে যৎসামান্য কামিয়ে ভবিষ্যতের চিন্তা করা দিন মজুর চাষাদের জীবন নিয়ে ধারণা রাখে না। দামি রেস্তোরাঁয় ২০০০টাকা হেলায় খরচা করা বাবু বেবিরা জানেনা যে ২০০টাকায় পেটভরে পাতি মাংসভাত খেতেও একজন সাধারণকে কতটা হিসেবনিকেশ করতে হয়।
সুশীলরা আমাদের সম্মানের যোগ্য নয়। এদের জুতোর নিচে রাখুন। এরা মূলত মান আর টাকার লোভী। অবজ্ঞা করুন এদের। দেশটা আমরা চালাই। আমরা ভোটব্যাঙ্ক। আমরা সরকার ঠিক করি। এই বড়লোকি অর্বাচীনগুলো নিজেদের স্বার্থ বাদে কারুর হয় না। থুতু দিয়ে দূর ছাই করুন এই ইতরদের।
এলিট সমাজ হয় আমাদের শুনবে নয় শেষ হয়ে যাবে।
They are not our masters, we are their gods.

সায়ন মন্ডল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.