পাকিস্তানের বালাকোটে ভারতের বায়ুসেনার হানায় ঠিক কতজন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে? এই প্রশ্নে গত ক’দিন ধরেই সরকারকে চেপে ধরার চেষ্টা করছে বিরোধীরা। গত সোমবার জানা যায়, বালাকোটে যুদ্ধবিমান বোমা ফেলার আগে অন্তত ৩০০ মোবাইল সক্রিয় ছিল। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বিরোধীদের কটাক্ষ করে বলেন, ৩০০ মোবাইল কি গাছেরা ব্যবহার করছিল?
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, ভারতের যুদ্ধবিমান যেখানে বোমা ফেলে এসেছে, সেখানে জঙ্গল ছাড়া কিছু ছিল না। পাকিস্তান থেকেও সেকথা বলা হয়েছে। রাজনাথ সিং-এর বক্তব্য, সেখানে যদি শুধু গাছই থাকবে, তাহলে মোবাইল ব্যবহার করছিল কে? মোবাইল ব্যবহার হওয়ার অর্থ সেখানে জঙ্গিরা ছিল। এতেই প্রমাণিত হচ্ছে, বায়ুসেনার বোমায় বহু সংখ্যক জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলে সরকার যে দাবি করেছে, তা সত্যি।
ন্যাশনাল টেকনিক্যাল রিসার্চ অর্গানাইজেশন (এনটিআরও) নামে একটি সরকারি সংস্থা জানিয়েছে, ভারতের মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান যখন বালাকোটে বোমা ফেলেছিল, তার একটু আগেই জইশ ই মহম্মদের শিবিরে সক্রিয় ছিল ৩০০ টি মোবাইল। রাজনাথের প্রশ্ন, এনটিআরও ফোনে আড়ি পাততে পারে। সেই সংস্থা বলছে, বালাকোটে ৩০০ মোবাইল সক্রিয় ছিল। মোবাইলগুলি কি গাছেরা ব্যবহার করছিল? বিরোধীরা কি এখন এনটিআরও-কেও বিশ্বাস করবে না?
এদিন অসমের ধুবড়িতে বিএসএফের এক নজরদার সিস্টেমের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তারপর বলেন, কংগ্রেস যখন মৃতের প্রকৃত সংখ্যা জানার জন্য অত আগ্রহী, তখন নিজেরা বালাকোটে গিয়ে গুনে আসুক, ঠিক কতজন মারা গিয়েছে। তাঁর কথায়, এনটিআরও অত্যন্ত সম্মানীত সংস্থা। তারা যখন বলছে, বোমা ফেলার আগে বালাকোটে ৩০০ মোবাইল সক্রিয় ছিল, আর কোনও প্রমাণ দরকার আছে কি?
দু’দিন আগেই বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ গুজরাতে এক জনসভায় বলেন, বালাকোটে ২৫০ জন মারা গিয়েছে। এয়ার ফোর্সের প্রধান মার্শাল বি এস ধানোয়া বলেন, ঠিক কতজন বালাকোটে ছিল আমরা বলতে পারব না। আমরা মৃতদের সংখ্যা গুনি না। আমরা যেখানে আঘাত করার কথা সেখানে আঘাত করে আসি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বলেন, যেদিন বায়ুসেনা হানা দিয়েছিল সেদিনই বিদেশ সচিব বিজয় গোখলে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
গোখলে অবশ্য কতজন মারা গিয়েছে বলেননি। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বায়ুসেনা পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ঢুকে বোমাবর্ষণ করে আসে। তার এক সপ্তাহ আগে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী জঙ্গি হানায় ৪০ জনের বেশি সিআরপিএফ জওয়ানের মৃত্যু হয়েছিল।