করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে ফ্রান্সে। মৃতের সংখ্যা প্রায় এক লক্ষ। হাসপাতালগুলিতে ঠাঁই নেই অবস্থা। এই পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে তৃতীয় দফার লকডাউন ঘোষণা করলেন ফ্রান্সের (France) প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকঁর (President Emmanuel Macron)। আগামী তিন সপ্তাহ দেশের সমস্ত স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
যে গতিতে টিকাকরণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করেছিল ফ্রান্স প্রশাসন, বাস্তবে তা থেকে বেশ কিছুটা কম গতিতে টিকাকরণ হচ্ছে। যা উদ্বেগ বাড়িয়েছে। তাই এর আগে অর্থনীতির স্বার্থে ফের লকডাউন না করার কথা ভাবলেও সে পথ থেকে সরে এসেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। টেলিভিশন বার্তায় মাকঁর বলেছেন, “এখনই সক্রিয় না হলে আমরা পরিস্থিতির উপর নিয়ন্ত্রণ হারাব।”
এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে প্যারিসের কিছু এলাকা-সহ দেশের উত্তর এবং দক্ষিণের কিছু অংশে বেশ কিছু নিয়ন্ত্রণ জারি রয়েছে। আগামী শনিবার থেকে একমাসের জন্য পুরো ফ্রান্সেই নিয়ন্ত্রণ বলবৎ করা হয়েছে। বিশেষ করে সংক্রমণ ঠেকাতে মানুষের চলাচল বা সমবেত হওয়ার উপর বিধিনিষেধগুলি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হবে। শনিবার থেকে তিন সপ্তাহ সব স্কুল বন্ধ থাকবে। অতিমারী থেকে পড়ুয়াদের রক্ষা করতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। হাইস্কুলের পড়ুয়াদের আপাতত একমাস অনলাইনেই পড়াশোনা করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, অর্থনীতির ক্ষতি স্বীকার করেও ভাইরাস রুখতে এর থেকে ভাল পথ নেই।
ফ্রান্সে প্রতিদিন প্রায় ৪০ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। গত বছর শেষ দিকে ছ’সপ্তাহের টানা লকডাউনে সংক্রমণের গতি অনেকটাই কমিয়েছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে চিকিৎসা পরিকাঠামো উন্নয়নের কথা জানিয়েছেন মাকঁর। দেশে আইসিইউ বেডের সংখ্যা বাড়িয়ে ১০ হাজার করার কথা বলেছেন। ফ্রান্সের অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুযায়ী গত বছরের লকডাউনে প্রতিমাসে ১১ বিলিয়ন ইউরো বা প্রায় ৯৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সরবরাহের সমস্যার জন্য দেশে টিকাকরণে গতি কম হওয়ায় উদ্বিগ্ন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। তিন মাসে মাত্র ১২ শতাংশ নাগরিককে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এপ্রিল থেকে টিকাকরণের গতি বৃদ্ধির কথাও বলেছেন তিনি।