আব্বাসিপিয়েমরা এখন মাননীয়ার শুভেন্দু, শিশিরের ওপর নন্দীগ্রামের চক্রান্তের আংশিক দায় চাপানোয় যারপরনাই আনন্দিত, তারা এখন সর্বত্র যেকোনো সংযুক্ত মোর্চা সম্পর্কিত খবরে মন্তব্য করে আসছে যে আমরা দুঃখিত কমরেড, আপনি জিতে গেছেন বুদ্ধ বাবু, ভামফোন জিতে গেছে, রাজ্যবাসী হেরে গেছে ইত্যাদি কিন্তু নিন্দুকেরা বলছে যে এখন তৎকালীন শত্রু বুদ্ধবাবুকে বেকসুর বলে বর্তমান শত্রু শুভেন্দুর ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করাটা আসলে আব্বাসিপিয়েমকে অক্সিজেন প্রদান করারই সমতুল্য আর আব্বাসের জোরাজুরির সামনে নতিস্বীকার করে ওকে ২৩ শে ফেব্রুয়ারি নন্দীগ্রাম আসন ছাড়ার পরেও শুভেন্দু ৬ই মার্চ নন্দীগ্রাম থেকে মাননীয়ার বিরুদ্ধে লড়ার ঘোষণা করার পর শান্তি সমর্থন কাটাকাটি হয়ে শুভেন্দুর সুবিধা হয়ে যাবে বুঝে সিপিয়েম যে ১০ই মার্চ নন্দীগ্রামে মীনাক্ষীকে দাড় করালো সেটা বুঝে মাননীয়া প্রতিদান হিসাবে যে বর্তমান শত্রু শুভেন্দুকে হারাতে নন্দীগ্রামের দায় কিছুটা বুদ্ধবাবুর ঘাড় থেকে সরিয়ে শুভেন্দুর ঘাড়ে ফেলে সিপিয়েমের পক্ষে সহানুভূতির হাওয়া তৈরি করে তৃণমূলবিরোধী ভোটের কিছুটা সিপিয়েমকে পাওয়ানোর ব্যাবস্থা করেও দেবেন সেটা আন্দাজ করা যায় আর একইসাথে নির্বাচনপরবর্তী জোটের বার্তা দিয়ে রাখাও যায় কারণ কিছুদিন আগেই আবু হাসেম খান চৌধুরী ওরফে ডালু বাবু বলেছিলেন যে নির্বাচনের পরে দরকার পরলে তৃণমূলকে সমর্থন দেবেন এবং কোনও এক বামনেতা নাম গোপন রাখার শর্তে বলেছিলো বৃহত্তর বিপদ বিজেপিকে রুখতে যা করার করতে হবে, এখন তৃণমূলবিরোধী ভোটের কিছুটা বিজেপির থেকে সংযুক্ত মোর্চার দিকে চলে গেলে তৃণমূলেরই লাভ, এগুলো বুঝতে বিশাল রাজনীতি বিশেষজ্ঞ হতে হয় না
এবার যেহেতু আব্বাসিপিয়েমরা এখন মাননীয়ার বক্তব্যকে একমাত্র সত্য ও শ্রেষ্ঠ মানছে তাই তাদের জানাই যে এর মধ্যে মাননীয়া তিনটা বক্তব্য রেখেছেন
১) বুধবার লালগড়ের সভা থেকে একই সঙ্গে সিপিএম এবং বিজেপিকে আক্রমণ করলেন মমতা। তিনি এদিন বলেন, ‘মাওবাদী আন্দোলনের সময় থেকে এখানে আসছি। লড়াই এর ময়দানে আমি সব জায়গায় আঘাত পেয়েছি। আমার মাথায় মেরেছিল- গুলি করেছিল সিপিএম। হাত-পেট-মাথায় ওরা আঘাত করেছিল, শুধু বাকি ছিল পা। এবার সেখানেও আঘাত করল ওরা। আমার সব জায়গায় আমার অপারেশন হয়েছে।’ ‘ তবে এই ‘ওরা’-র মধ্য়ে মমতা সিপিএম-বিজেপি দুই দলকেই নিশানা করেছেন। এদিন মমতা বলেছেন, ‘সিপিএমের হার্মাদরা যারা আজকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছে, তাঁরাই নেতাইতে গণহত্যা করেছিল। যারা খুন হয়েছিলেন, আমি সেসময় সকলের বাড়ি বাড়ি গিয়েছি। তাঁদের পরিবার পরিজনকে কাজের ব্য়বস্থা করে দিয়েছিলাম এবং আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। তাই আমার কাছে লালগড়, নেতাই,ঝাড়গ্রাম, গোপীবল্লভপুর নতুন নয়। গোপীবল্লভপুরে একসময় আবার বামপন্থীদের একটা বড় কাণ্ডকারখানা ছিল। গোপীবল্লভপুরের সকলকে বলব এবং আমার বামপন্থী বন্ধুদের আমি বলব, যারা সত্যিই বিজেপির সঙ্গে লড়াই করতে চান, তাঁরা আমাদের ভোটটা দিন, সিপিএমকে ভোটটা দিন। ভোটটা নষ্ট করবেন না।’
২) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেওয়াপাড়ার সভায় উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে এ দিন বলেন, “আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আসছে, পুলিশের পোশাক পরে অনেকে গুলি চালিয়েছিল। হাওয়াই চটি পরে এসেছিল। এবারেও সেসব কেলেঙ্কারি করছে। এই বাপ-ব্যাটার পারমিশান ছাড়া সেদিন পুলিশ নন্দীগ্রামে ঢুকতে পারত না, আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি।” রাজনৈতিক মহলে একটি প্রশ্ন অবশ্য উঠছে, কেন এতদিন বলেননি মমতা! মমতা তার উত্তর নিজেই বললেন, “ফেয়ার এনাফ, ভদ্রলোক বলে কিছু বলিনি। সহ্য করে গিয়েছি।”
৩) এরপর আজ ঠাকুরচকের সভা থেকে নন্দীগ্রাম (Nandigram) আন্দোলন ও সেই সংক্রান্ত মামলা নিয়ে সিপিআইএম (CPIM) ও অধিকারী (Suvendu Adhikari) পরিবারের মধ্যে ‘আঁতাত’-এর অভিযোগে সুর চড়ালেন মমতা। এদিন তৃণমূল নেত্রী বলেন, “নন্দীগ্রামে ভূমি আন্দোলনে জড়িতদের বিরুদ্ধে কেস হয়। সেই কেসে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল আদালত। পরে ওরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে কেস শুরু করে। এখন সুপ্রিম কোর্টে সেই কেস চলছে। একমাত্র অধিকারী পরিবারের নামেই কোনও কেস নেই। কেন অধিকারী পরিবারের বিরুদ্ধে কোনও কেস নেই? সবার বিরুদ্ধে CPIM কেস দিলেও গদ্দারদের বিরুদ্ধে দেয়নি, কেন?” তার ব্যাখ্যাও দেন মমতা। বলেন, “সেদিন সিপিআইএম-কে ডেকে আনে শুভেন্দু। পুলিসকেও ডেকে আনে শুভেন্দুই। আর ঘরে ঢুকেছিলেন বাপ-বেটা। সব ঠান্ডা হয়ে গেলে তারপর ১৫ দিন পর বের হয়। কিছুই নাকি করেনি ওরা! তাই ওদের বিরুদ্ধে কোনও মামলাও হয়নি!”
আব্বাসিপিয়েমরা এই ৩ টা বক্তব্যই একসাথে হয় সত্যি বলুক নয় মিথ্যা বলুক কিন্তু দ্যাখা যাচ্ছে যে তারা তাদের রাজনৈতিক সুবিধার্থে স্রেফ মাঝের বক্তব্যটা নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে যেটা বেশ মজাদার, আব্বাসকে ২৩ শে ফেব্রুয়ারি নন্দীগ্রাম আসন ছাড়ার পরে শুভেন্দু ৬ই মার্চ নন্দীগ্রাম থেকে মাননীয়ার বিরুদ্ধে লড়ার ঘোষণা করার পর শান্তি সমর্থন কাটাকাটি হয়ে শুভেন্দুর সুবিধা হয়ে যাবে বুঝে সিপিয়েম যে ১০ই মার্চ নন্দীগ্রামে মীনাক্ষীকে দাড় করালো সেটা বুঝে মমতা ব্যানার্জি প্রতিদান হিসাবে যে বর্তমান শত্রু শুভেন্দুকে হারাতে নন্দীগ্রামের দায় কিছুটা বুদ্ধবাবুর ঘাড় থেকে সরিয়ে শুভেন্দুর ঘাড়ে ফেলে সিপিয়েমের পক্ষে সহানুভূতির হাওয়া তৈরি করে তৃণমূলবিরোধী ভোটের কিছুটা সিপিয়েমকে পাওয়ানোর ব্যাবস্থা করে দেবেন সেটা আন্দাজ করা যায়, এখন তৃণমূলবিরোধী ভোটের কিছুটা বিজেপির থেকে সংযুক্ত মোর্চার দিকে চলে গেলে তৃণমূলেরই লাভ, এগুলো বুঝতে বিশাল রাজনীতি বিশেষজ্ঞ হতে হয় না 😄
এছাড়াও নন্দীগ্রামের হত্যাকাণ্ডের পর অনেক ঘটনা ঘটেছে যা হঠাৎ করে মাননীয়ার কোনও বক্তব্যে উড়িয়ে দেওয়া যায় না, আর যদি শুভেন্দুবাবু, শিশিরবাবুই নন্দীগ্রাম কাণ্ডের মূল দোষী হন তাহলে
ক) কেন বুদ্ধবাবু ২০০৭ সালের ১৭ই মার্চের খবর অনুযায়ী প্রথমে গুলি চালানোকে ন্যায্য বলেন, তারপর দলীয় শরীকরা বিরোধিতা করায় উনি গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে হত্যাকাণ্ডের দায় গ্রহণ করেন বোঝা গেলো না ?
The chief minister, who had justified police firing in Nandigram on the floor of the assembly barely two days ago staged the climb down following the CPI, RSP and the Forward Bloc’s threat that they would pull out their ministers from the cabinet unless Buddhadeb owned up responsibility of the carnage, withdrew police from Nandigram and declare that the SEZ would not be set up there. They had also demanded an end to the “CPI(M)’s one-party-rule” and condemnation of the police firing.
“I am the head of the government. It (firing in Nandigram) was my decision. Whatever happened there is my responsibility,” the chief minister said in the Left Front meeting attended also by CPI(M) patriarch Jyoti Basu.
খ) কেন বুদ্ধবাবু ২০০৭ সালের ১৩ ই নভেম্বরের খবর অনুযায়ী নিজে নন্দীগ্রাম পুনর্দখলের সময় এই কথা বলেছিলেন যে বিরোধীদের ওদের ভাষাতেই উত্তর দেওয়া হয়েছে সেটা বোঝা গেলো না কারণ সাংবিধানিক প্রধান হিসাবে ওনার কর্তব্য ছিল ইটের বদলে পাটকেল না মেরে আইন শৃঙ্খলা রাখা ?
In what may be described as a blatant support of the recent violence in Nandigram by his own party workers, the Chief Minister of West Bengal Buddhadeb Bhattacharya has said that the people who caused so much violence in Nandigram have been paid back in their own coin.
http://archive.indianexpress.com/news/buddha-says-we-paid-opposition-back-in-same-coin–these-mothers-and-kids-agree/238967/
http://archive.indianexpress.com/news/buddha-says-we-paid-opposition-back-in-same-coin–these-mothers-and-kids-agree/238967/
গ) কেন বুদ্ধবাবু ওনার বিরোধীদের ওদের ভাষাতেই উত্তর দেওয়ার বক্তব্য নিয়ে প্রচুর বাওয়াল হওয়ার পর ২০০৭ সালের ৪ঠা ডিসেম্বরের খবর অনুযায়ী সেই কথা বলা ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করলেন ?
Apologising for having said that those opposing land acquisition in Nandigram had been paid back in the same coin, West Bengal Chief Minister Buddhadeb Bhattacharya conceded on Tuesday that the Left Front government had failed administratively and politically in handling the issue there, while adding that it had now learnt its lessons.
ঘ) কেন ২০০৯ সালের ২২ শে এপ্রিলের খবর অনুযায়ী ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা অশোক ঘোষ সাংবাদিক বৈঠকে বুদ্ধবাবুর গুলি চালানোর আদেশ দেওয়ার স্বীকারোক্তি সম্পর্কে বলার পর বুদ্ধবাবু সে কথার বিরোধিতা করেননি, বাম ফ্রন্টও ওনার সঙ্গ দেয়নি ?
ঙ) কেন বুদ্ধবাবু ২০০৯ সালের ১১ ই মের খবর অনুযায়ী নন্দীগ্রাম হত্যাকাণ্ড নিয়ে আবার ক্ষমা চান ?
চ) কেন বুদ্ধবাবু ২০১১ সালের ১৯ শে এপ্রিলের খবর অনুযায়ী বলেন যে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম ওনার সবচেয়ে বড়ো ভুল ছিল ?
ছ) এরপর ২০১৪ সালের ৩০ শে জানুয়ারির খবর অনুযায়ী কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা বুদ্ধবাবুকে নির্দোষ বলে, এই ক্ষেত্রে একটা ব্যাপার মনে রাখতে হবে যে নন্দীগ্রামের ঘটনার পরের এক বছর কিন্তু কংগ্রেস সিপিয়েম কংগ্রেসের সহযোগী ছিল, সেই সময়ে শুরু তদন্তের ফলাফলে বুদ্ধবাবুকে নির্দোষ বলা যারা মানতে পারছে তারা নরেন্দ্র মোদীর সম্পূর্ণভাবে বিজেপিবিরোধী কংগ্রেসের আমলে হওয়া মাননীয় সর্বোচ্চ আদালতের তত্ত্বাবধানে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দ্বারা গুজরাট দাঙ্গার তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়া মানতে পারে না কেন ?
জ) কেন বুদ্ধবাবু নেতাইয়ের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দলীয় কর্মীদের দোষ স্বীকার করেন ?
“Incidents like Netai are wrong. Our boys had done wrong at Netai,” Bhattacharjee said, regretting the incident which had created an uproar, at a public rally organised by the Left Front here.
ঝ) কেন সিপিয়েম বুদ্ধবাবুকে এতো ভালোবেসেও ২০১৬ সালের ১ লা সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ আদালত সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ অবৈধ বলে রায়ের পরে ওই ঘটনার পুরো দায় বুদ্ধবাবুর ওপরেই চাপিয়েছিলো আর আব্বাসিপিয়েমরা যেহেতু বলছে যে বুদ্ধবাবুর বিরুদ্ধে তথাকথিত চক্রান্ত যারাই করেছে তাদের শাস্তি হোক সেক্ষেত্রে তারা কি সিপিয়েমের শাস্তির দাবী জানাবে ??
ঞ) এখন বুদ্ধবাবু অসুস্থ ওনার কথা জড়িয়ে যাচ্ছে আর উনি আরেকটা ধর্মনিরপেক্ষ দল বলতে গিয়ে ইতস্তত করলেন বলে মনে হোলো, আব্বাসিপিয়েম যদি বুদ্ধবাবুকে এতোই ভালোবেসে তাহলে সঠিকভাবে বুঝিয়েছে তো যে এমন একজন ভাইজানের সাথে জোট হচ্ছে যে আবার প্রকাশ্য জলসায় বুদ্ধবাবুকে গালাগালি করে বলেছে যে বুদ্ধবাবু নাকি খারিজি মাদ্রাসার বিরুদ্ধে বলে দাদাগিরি দেখিয়েছিলো কিন্তু তারা পাশ থেকে সরে গেছে তাই ভামেরা এখন আর সেই দাদাগিরি দ্যাখাতে পারবে না আর আরও বলেছে যে একুশের পরে ওদেরও পোতিশোধ লেবো আমরা আর সাথে এসব শোনার পরেও জোট হচ্ছে নাকি দলীয় আবেগ দিয়ে বিবৃতি নিয়েছেন 🙂 ??
এই বিষয়ে আরও কিছু আলোচনা থাকলো
Ajeya biswas