অতিথি দেশ হিসেবে জি-৭ সম্মেলনে থাকছে ভারত সহ ৪ দেশ

সম্পর্কের নতুন সমীকরণ তৈরি হচ্ছে। ব্রিটেন ও ভারত আরও কাছাকাছি। আগামী জুন মাসে ব্রিটেনে আয়োজিত জি৭ সামিটে অতিথি দেশ হিসেবে যোগদান করতে চলেছে ভারত। সেই সঙ্গে অতিথি দেশ হিসেবে বৈঠকে থাকার কথা রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা সহ অন্যান্য দেশ গুলির। মঙ্গলবার রাতে সরকারি ভাবে একটি বিবৃতি দিয়ে এই কথা জানিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী।

যদিও গত জানুয়ারি মাসেই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের তরফে জি৭ বৈঠকে অংশগ্রহণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেই ডাকেই সাড়া দিয়ে মঙ্গলবার জি৭ সামিটে অংশগ্রহণকারী দেশ গুলির সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী তথা জি৭ এবং জি২০ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে সহযোগিতা করার জন্য নিযুক্ত ‘শেরপা’ সুরেশ প্রভু।

এই বিষয়ে মঙ্গলবার বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী একটি টুইট করে জানিয়েছেন, চলতি বছর জি-৭ সামিট হতে চলেছে জুন মাসে ব্রিটেনের কর্ণওয়েল রিজিয়নে। জি-৭ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলো হল ব্রিটেন, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। একযোগে বিশ্বের জলবায়ু পরিস্থিতি, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ও মুক্ত বাণিজ্য নীতি নিয়ে আলোচনা চলবে এবারের সম্মেলনে।

তিনি আরও জানান, তার আগে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার শেরপা সুরেশ প্রভুর সঙ্গে অতিথি দেশ গুলির ভার্চুয়ালি বৈঠক আয়োজিত হল।তবে এবছর বিশ্বের করোনা পরিস্থিতি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের শীর্ষ সম্মেলন নিয়েও আলোচনা করা হবে জি৭ সামিটে।

উল্লেখ্য, চলতি বছর ২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে। প্রতি বছর বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়কদের দিল্লিতে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়ে থাকে। এটাই রীতি। সেই রীতি মেনেই প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বরিস জনসনকে। আমন্ত্রণ পত্র গ্রহণও করেছিলেন তিনি। নির্দিষ্ট দিনে তিনি ভারতে আসবেন এটাই ঠিক ছিল।

তবে তাল কাটে করোনার নয়া স্ট্রেনের হদিশ মেলায়। ব্রিটেনে করোনার নয়া স্ট্রেনের খোঁজ মেলায় ভারত সফর বাতিল করেন তিনি । তাঁর ভারতে না আসতে পারা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও কথা বলেন বরিস জনসন। মোদীর সঙ্গে ফোনে দুঃখপ্রকাশও করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।

যদিও বর্তমানে ভারত ও ব্রিটেনের করোনা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হওয়ায় চলতি বছর এপ্রিল মাসে ভারত সফরে আসতে পারেন ব্রিটেনের দ্বিতীয় বারের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন৷

চলতি মাসেই প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ডাউনিং স্ট্রিট অফিসের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে যে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে যেতে পারেন। যদিও এর থেকে বেশি কিছু এখনও নিশ্চিত ভাবে জানানো হয়নি।

শুধু তাই নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটাই প্রথম ভারত সফর হতে চলেছে বরিস জনসনের। এর আগে করোনার কাঁটায় জানুয়ারি মাসে সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি হয়ে আসার সফর বাতিল করতে হয়েছিল তাঁকে।

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার পর প্রথম আন্তর্জাতিক সফর হিসেবে ভারতের সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্ক কোন দিকে এগোয় সেই দিকে তাকিয়ে গোটা বিশ্ব।

এদিকে ফেব্রুয়ারি মাসেই ব্রিটেন ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিও (সিপিটিপিপি) ও প্রগতিশীল চুক্তিতে যোগদানের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। এছাড়াও ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য ও প্রভাবের নতুন পথ খোলার জন্য ১১ টি দেশের সদস্যপদ গ্রহণের অনুরোধও জানিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, চলতি বছর বরিস জনসন ভারত সফরে আসলে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ২৭ বছর কেউ ভারত সফরে আসছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.