নির্বাচন কমিশন নির্দেশ দিলে ফোন ট্যাপিং ঘটনার তদন্ত করবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। বাংলার দুই বিজেপি নেতার ফোন ট্যাপিংয়ের বিষয়টিকে কেন্দ্র অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েই দেখছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের শীর্ষ সূত্রের খবর। কিন্তু রাজ্যে এখন নির্বাচন চলায় আদর্শ আচরণবিধি বলবৎ রয়েছে। তাই কেন্দ্র স্বতঃপ্রণোদিতভাবে এই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করার রাস্তায় হাঁটতে চাইছে না। তবে কমিশন চাইলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এই ঘটনার তদন্ত করবে। কারণ এটি তাদের আওতাতেই পড়ে।
রাজ্যের দুই বিজেপি নেতা মুকুল রায় ও শিশির বাজোরিয়ার ব্যক্তিগত ফোনালাপের অডিও ক্লিপ সামনে আসাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে। একদিকে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস দুই নেতার কথোপকথনকে কেন্দ্রের শাসক দলের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনকে নিয়ন্ত্রণ করার উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরছে। অন্যদিকে বিজেপি কথোপকথনের থেকেও বড় করে দেখাতে চাইছে ফোন ট্যাপিংকে। পালটা অভিযোগ করে রবিবার দোলের দিন খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) উষ্মা প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেছেন, “ফোন ট্যাপিং কে করেছে সেটাই সবথেকে বড় প্রশ্ন। বাংলায় কীভাবে ফোন চলছে? এটাই কি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া? নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি বলবৎ থাকাকালীন নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ছাড়া প্রশাসন কি ফোন ট্যাপিংয়ের অনুমতি দিতে পারে?” শাহর মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। ফোন ট্যাপিংয়ের বিষয় নিয়ে শাহ যেভাবে পালটা প্রশ্ন তুলেছেন তাতে আগামিদিনে বিজেপি বিষয়টিকে নির্বাচনী প্রচারের ক্ষেত্রে তুলে ধরার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই মত ওয়াকিবহালমহলের।
বাংলা বিধানসভা নির্বাচনকে বিজেপি তো বটেই শাহ ব্যক্তিগতভাবে যেভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন তাতে তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করার কোনও সুযোগই যে তাঁরা হাতছাড়া করবেন না তা স্পষ্ট। বিজেপি সূত্রের খবর, দ্বিতীয় দফার নির্বাচন পর্ব পার হয়ে গেলেই রাজ্যে ঘাঁটি গেড়ে থাকবেন শাহ। দেশের অন্য রাজ্যের নির্বাচন এপ্রিল মাসের ৬ তারিখের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। অসম, কেরল, তামিলনাডু ও পুদুচেরি এই চার রাজ্যের প্রচারপর্ব এপ্রিলের ৪ বিকেল পাঁচটার মধ্যেই শেষ। এই ক’দিন বাংলার সঙ্গে অন্য রাজ্যগুলিতে সময় দিলেও ৪ তারিখের পর থেকে শাহ যে তাঁর সমস্ত সময় বাংলাতেই দেবেন, সেকথা বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব সূত্রেই জানা গিয়েছে।
রাজ্যের প্রথম দু’দফার ভোটে যে সমস্ত আসনগুলি রয়েছে গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে তার অধিকাংশতেই বিজেপি এগিয়ে ছিল। মূলত তৃতীয় দফা থেকেই বিজেপির লড়াই শুরু বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। আর সে কারণেই তৃতীয় দফার আগে থেকেই রাজ্যে ঘাঁটি গেড়ে থেকে শাহ নিজের হাতেই নির্বাচনী রণকৌশল পরিচালনা করবেন। অতীতে উত্তরপ্রদেশের ক্ষেত্রেও তিনি একইভাবে ঘাঁটি গেড়ে থেকে বিজেপির জমি প্রস্তুত করেছিলেন এবং লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিপুল সংখ্যক আসন থেকে শুরু করে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় বিপুল সংখ্যক আসন পেয়ে দলকে জয়ের মুখ দেখিয়েছিলেন।