নন্দীগ্রাম ঘুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন শুভেন্দু অধিকারীকে নিশানা করছেন তখন প্রচারের লাস্ট ল্যাপে শুভেন্দুও নিশানা করলেন দিদির পরিবার ও তৃণমূলের দুর্নীতিকে।
সোমবার বিকালে নন্দীগ্রামের একটি প্রচার সভায় শুভেন্দু বলেন, “মাননীয়া এত কথা বলছেন, বিনয় মিশ্রর কথা বলছেন না কেন? মাননীয়া এত কথা বলছেন ম্যাডাম নারেলাটা কে বলছেন না কেন? আর বলছেন না কেন তোলাবাজ ভাইপোর বহুতল বাড়ি শান্তিনিকেতনে কেন সিবিআই গেছিল?”
শুভেন্দু কত প্রতিপত্তি করেছে এদিন তার হিসাব দিতে চেয়েছেন মমতা। তারই পাল্টা হিসাবে হরিশ মুখার্জি স্ট্রিটের ছবিটা দেখাতে চেয়েছেন শুভেন্দু। কয়লা, বালি চুরি নিয়ে খোঁচা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকে।
কয়লা ও গরু পাচার কাণ্ডে যুব তৃণমূল নেতা বিনয় মিশ্রকে হন্যে খুঁজছে সিবিআই। তাঁর ভাই বিকাশ মিশ্রকে গ্রেফতার করেছে তদন্ত এজেন্সি। এই তদন্তেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা নারুলাকে জেরা করতে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন সিবিআই কর্তারা। এদিন সেসবই তুলে ধরেন শুভেন্দু।
নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা বাংলায় এসেও মমতার বিরুদ্ধে সরাসরি দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন। এদিন প্রায় একই কায়দায় দিদিকে দুর্নীতির তিরে বিঁধতে চাইলেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, “আপনাদের শুভেন্দুর কোনও পরিবর্তন হয়েছে? দুটো সিকিউরিটি বেড়েছে। আগে রাজ্য দিত এখন কেন্দ্র দেয়। কিন্তু এগারোর আগে মাননীয়ার চটির ব্র্যান্ড যা ছিল, বদলে গেছে। শাড়ির কোয়ালিটি বদলে গেছে। শুনে রাখুন, টাইগার হিল থেকে দিঘা পর্যন্ত ৪০টি প্রাসাদ করে রেখেছে এই লেডি হিটলার। আর কতগুলো মিডিয়ার পেটোয়া সাংবাদিককে রেখে দিয়েছে, যাঁদের স্ত্রীরা তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের পে রোলে রয়েছে। নামের তালিকা বের করে দিলে কাল থেকে ঘর থেকে বের হতে পারবে না।”
মমতা নন্দীগ্রামের প্রায় সব মিটিংয়েই অভিযোগ করছেন, শুভেন্দু অধিকারী হিন্দু-মুসলমান করে মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ করতে চাইছেন। এদিন পাল্টা শুভেন্দু বলেন, “আমি কোনও মেরুকরণ করছি না। মাননীয়া যে ভাবে তুষ্টিকরণ চালিয়েছেন তার বিরুদ্ধে কথা বলছি। মাননীয়া ২৭ শতাংশ দুধেল গাইয়ের দুধ দুইতে গেছিলেন। তাঁর অলক্ষে কখন যে ৭৩ শতাংশ এক হয়ে গেছে বুঝতেও পারেননি।” এদিন ইমাম ভাতা, হিজাব টেনে নামাজ পড়া-সহ একাধিক ইস্যু তুলে মমতার বিরুদ্ধে তোপ দাগেন শুভেন্দু।
নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী আরও বলেন, “দার্জিলিং সুইৎজারল্যান্ড হয়নি, দিঘা গোয়া হয়নি, কলকাতা লন্ডন হয়নি। কিন্তু এবার যদি বেগমের পার্টি জেতে তাহলে জানবেন পশ্চিমবঙ্গটা বাংলাদেশ হয়ে যাবে।” বলেই শুভেন্দু স্লোগান দেন, ‘বলছে দেখো নন্দীগ্রাম’… জনতা চিৎকার করে ওঠে ‘জয় শ্রীরাম জয় শ্রীরাম।