মেদিনীপুরে তৃণমূল সব বুথে এজেন্টই দিতে পারেনি, দাবি শুভেন্দুর

বুথে বিজেপির এজেন্ট দেওয়া নিয়ে তৃণমূল যখন ইস্যু করছে, তখন রবিবার শুভেন্দু অদিকারী দাবি করলেন, মেদিনীপুরে তৃণমূল সব বুথে এজেন্টই দিতে পারেনি।

রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথর প্রতিমা ও সাগরে প্রচারে গিয়েছিলেন শুভেন্দু। নন্দীগ্রামের ওপারেই সাগর। শুভেন্দু বলেন, “ওপারে আপনাদের আত্মীয়, কুটুমরা রয়েছেন। সবাইকে বলে দিয়েছেন তো আমাকে ভোট দিতে। কালকে ৩০ টি সিটে ভোট হয়েছে। আমার এলাকায় ভোট হয়েছে, তৃণমূল নেই। এজেন্ট দিতে পারেনি। তৃণমূল ভোকাট্টা”।

নন্দীগ্রামের গণ আন্দোলনের নেতা ছিলেন শুভেন্দু। কিন্তু সেখানেই থেমে থাকেননি তিনি। বরং তৃণমূলের অনেকেই স্বীকার করেন, গোটা জঙ্গলমহল ও দুই মেদিনীপুরে তৃণমূলের সংগঠন তৈরির নেপথ্য কারিগর তিনিই। বস্তুত মাওবাদী সমস্যা দীর্ণ জঙ্গলমহলের মানুষকে রাজনীতির মূলস্রোতে আনার জন্য এক সময়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র পি চিদম্বরম ও তৎকালীন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ খোলাখুলিই শুভেন্দুর প্রশংসা করতেন।
এ হেন নেতা তৃণমূল ছাড়লে সেখানে শাসক দলের সংগঠনে যে বড় ধাক্কা লাগতে পারে সেই আশঙ্কা ছিলই। অনেকের মতে হয়েছেও তাই। প্রকাশ্যে না বললেও তৃণমূলের একাংশ নেতার কথায়, নন্দীগ্রামেও একটা অবিশ্বাসের বাতাবরণ রয়েছে। তৃণমূলের সঙ্গে যাঁরা প্রচারে বা রোড শোতে ঘুরছেন, তাঁদের মধ্যে কতজন সত্যিই সঙ্গে রয়েছেন, কতজন শুভেন্দুর অনুগামী সেই সন্দেহ রয়েছে। এখন প্রচারের সময়ে বাইরে থেকে নেতা কর্মী নিয়ে সেখানে কাজ চালানো হচ্ছে। কিন্তু ভোটের দিন তাঁরা এলাকায় থাকতে পারবেন না। স্থানীয় নেতা কর্মীর উপরেই ভরসা করতে হবে।
শনিবার প্রথম দফার ভোটে পূর্ব মেদিনীপুরে ৭ টি আসনে ভোট হয়েছে। শুভেন্দু এদিন দাবি করেন, ওই ৭ টি আসনেই হারতে চলেছে তৃণমূল। প্রথম দফার ভোটে স্যুইপ করতে চলেছে বিজেপি।

প্রসঙ্গত, বুথে এজেন্ট বসানোর বিষয় নিয়ে তৃণমূল নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে। নির্বাচন কমিশন লোকসভা ভোটের মতোই এ বারও জানিয়েছে, কোনও বুথে সেই এলাকার ভোটারকেই এজেন্ট হতে হবে তার কোনও মানে নেই। ওই বিধানসভার ভোটার হলেই কেউ সেই আসনের যে কোনও বুথে প্রার্থীর এজেন্ট হিসাবে বসতে পারবেন। কিন্তু তৃণমূলের দাবি, কোনও বুথের পোলিং এজেন্টকে ওই বুথেরই ভোটার হতে হবে।

তৃণমূলের এই দাবি অবশ্য কমিশন মানতে চায়নি। তাৎপর্যপূর্ণ হল, তৃণমূল এ ব্যাপারে বিজেপি-কমিশনের আঁতাতের কথা বলছে ঠিকই, কিন্তু এ ব্যাপারে বাম, কংগ্রেসও তাঁদের পাশে নেই। বরং অধীর চৌধুরীদের কথায়, বুথে বিরোধীদের এজেন্ট বসলে তৃণমূলের ছাপ্পা দিতে অসুবিধা হচ্ছে। হয়তো সেই কারণেই কান্নাকাটি করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.