ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় ফের বড় সাফল্য, বায়ুসেনার শক্তি বাড়াবে নতুন প্রজন্মের ‘আকাশ’ এয়ার মিসাইল

একসঙ্গে অনেকগুলো লক্ষ্যভেদ করতে পারে। স্বল্পপাল্লা ও দূরপাল্লাতেও তীব্র বেগে ছুটে পারে এই মিসাইল। ভূমি থেকে একবার নিক্ষেপ করা হলে এর গতি রোধ করা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। আকাশসীমার সুরক্ষায় নতুন প্রজন্মের সারফেস-টু-এয়ার মিসাইলই দরকার ছিল ভারতীয় বাহিনীর। সেই চাহিদা মেটাতে এল আকাশ-এনজি। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পে দেশীয় সংস্থার কাছেই এমন মিসাইল তৈরির বরাত দিয়েছিল কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা তথা ডিআরডিও। ভারত ডায়ানামিক্স ও ডিআরডিও-র তৈরি আকাশ মিসাইলের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণে বড় সাফল্য এসেছে বলে খবর।

জয়সলমীর জেলার পোখরানের ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জ থেকে তির বেগে ছুটে গিয়ে লক্ষ্যে আঘাত করেছে এই ক্ষেপণাস্ত্র। ডিআরডিও জানাচ্ছে, ৪০ কিলোমিটার পাল্লায় নিক্ষেপ করা হয়েছে এই এয়ার মিসাইলটিকে। প্রয়োজনে নতুন প্রজন্মের আকাশ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা বাড়ানোও সম্ভব।

DRDO successfully tested Akash NG missile for IAF - DNP INDIA

আকাশ-এনজি হল মাঝারি পাল্লার সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল। ভূমি থেকে আকাশে নির্ভুল নিশানায় লক্ষ্যভেদ করতে পারে এই ক্ষেপণাস্ত্র। ডিআরডিও-র তত্ত্বাবধানে এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে ভারত ডায়ানামিক্স লিমিটেড। তবে এই ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে সহযোগিতা করেছে ভারত ইলেকট্রনিক্স, টাটা পাওয়ার স্ট্র্যাটেজিক ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশন এবং লারসেন অ্যান্ড টার্বো।

Akash-Next Generation to be tested in 2021 – Indian Defence Research Wing

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা যতটা তার চেয়েও বেশি দূরে ছুটে গিয়ে এয়ারক্রাফ্টকে টার্গেট করতে পারে। সর্বাধিক ৭০ কিলোমিটার অবধি নিশানায় আঘাত করতে পারে আকাশ। এই মিসাইল সিস্টেমে রয়েছে অ্যাকটিভ ইলেকট্রনিকালি-স্ক্যানড অ্যারে মাল্টিফাংশনাল রাডার সিস্টেম। বহুদূর থেকেও শত্রুসেনার এয়ারক্রাফ্টের সন্ধান পেতে পারে। দিনে ও রাতে, আবহাওয়ার যে কোনও পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারে।

Next Generation of Akash (NG) Missile System under Development" - BEL Chief  - Zittara

আকাশ ক্ষেপণাস্ত্রের ওজন ৭২০ কিলোগ্রাম। সুপারসনিক বেগে ছুটতে পারে এই মিসাইল। এতে আছে র‍্যামজেট-রকেট প্রোপালসন সিস্টেম। এই র‍্যামজেট টেকনোলজি নিয়ে গবেষণা করছে দেশের প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলি। মিসাইলের গতি বহুগুণে বাড়াতে হলে এই প্রযুক্তি দরকার। রকেটের মোটরকে দ্রুত চালনা করা যেতে পারে। আকাশ মিসাইলের অনেকগুলো ভ্যারিয়ান্ট আছে। ২০১৯ সালে আকাশ-১এস ভ্যারিয়ান্টের সফল নিক্ষেপ করেছিল ডিআরডিও। পরবর্তী ভ্যারিয়ান্ট হল আকাশ মার্ক-২। এটি দূরপাল্লার মিসাইল। ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপ করা যায়।

আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র এই মুহূর্তে ভারতের আকাশসীমা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি শুধু একটি ক্ষেপণাস্ত্র নয়, এটি এখন একটি পুরোদস্তুর আকাশসীমা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।  আকাশ পথে ধেয়ে আসা অনেক বড়সড় আক্রমণকেই রুখে দিতে সক্ষম আকাশ। একসঙ্গে ৬৪টি টার্গেটে নিশানা করতে পারে এই মিসাইল। যে কোনও আধুনিক ফাইটার এয়ারক্রাফ্ট, ক্রুজ মিসাইল ও ব্যালিস্টিক মিসাইলের আক্রমণ রুখে দিতে পারে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.