সংবাদপত্রের দর্পণে ১৩ থেকে ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯- যখন পশ্চিমবঙ্গ হয়েছিল পাকিস্তান― পর্ব ২ 13th to 15th December, 2019 in the light of the Newspaper Reports -When West Bengal Became Pakistan ― Part 2

পর্ব ২

১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ শুক্রবার, জুম্মাবার

দিনটা ছিল শুক্রবার বা জুম্মাবার। মুসলিম সম্প্রদায়ের সাপ্তাহিক ধর্মীয় দিন। সাধারণতঃ এই দিন দুপুরের (জোহরের) নামাজের পর মসজিদের ধর্মীয় নেতারা কিছু ভাষণ দেন একে বলে জুমা খুৎবা বা জুমা এ খুৎবা। সেদিন মসজিদে মসজিদে কি বলা হয়েছিল তা আমরা জানি না, কিন্তু দুপুরের নামাজের পরই রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে শুরু হল হিংসা ও বিশৃঙ্খলার ঘটনাবলী।

টাইমস অফ ইন্ডিয়া – ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, জানাচ্ছে বেলা ২টো নাগাদ কলকাতার কেন্দ্রে টিপু সুলতান মসজিদ থেকে মুসলমানদের একটি মিছিল বেরোয় যা সেন্ট্রাল এভেনিউ দিয়ে এগিয়ে মধ্য কলকাতায় যানজট ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। তিনটে নাগাদ মুসলমানদের মিছিল বেরোয় পার্ক সারকাস অঞ্চলে, এরপর আরো রাতে আনোয়ার শাহ রোডে ও নারকেলবাগানে। রাজাবাজারেও পথ অবরোধ হয়।

কিন্তু অনেক বেশী হিংসাত্মক ঘটনা শুরু হয় কলকাতার বাইরে, মুসলমান অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিতে। উলুবেড়িয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙ্গাতে আক্রমণ শুরু হয় রেল স্টেশনে।

উলুবেড়িয়াতে রেল স্টেশনে কয়েকশ মুসলমান জনতা বেলা ২টো নাগাদ রেল লাইন অবরোধ করে। তখন উলুবেড়িয়া স্টেশনে হাওড়া-চেন্নাই মেল ট্রেনটি আটকে পড়ে। এরপর এই মারমুখী মুসলমান জনতা ট্রেনের উপর কাশ্মীরি কায়দায় পাথর ছোঁড়া শুরু করে। ট্রেনের কামরার কাঁচ ভাঙ্গতে থাকে। একের পর এক বিভিন্ন দুরপাল্লার ট্রেনগুলি বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়ে। অনেক লোকাল ট্রেন বাতিল করা হয়।

আজকাল সংবাদপত্রের বিবরণঃ “অবরোধকারীরা উলুবেড়িয়া স্টেশনে এবং পশ্চিম কেবিনে ভাঙচুর চালান। রেল পুলিশ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। জনতার ছোড়া পাথরে রেল পুলিশের এক কর্মী আহত হন। তার পরেও দফায় দফায় জনতা ট্রেনটিকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে থাকে। হামলাকারীদের দখলে চলে যায় পুরো স্টেশন চত্বর। রেল লাইনের উপর টায়ার জ্বালানো হয়।

ওই ট্রেনের এস-৬ কামরায় সপরিবার ছিলেন অমিতাভ সেন নামে এক যাত্রী। তিনি ব্রহ্মপুর যাচ্ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘সাড়ে ৩টে নাগাদ ট্রেন যখন উলুবেড়িয়া পার হচ্ছে, তখনই একদল মানুষ ট্রেনে পাথর ছুড়তে শুরু করে। জানালা বন্ধ করে দিই। বৃষ্টির মতো পাথর পড়ছিল’।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “বিক্ষোভকারীরা উলুবেড়িয়া স্টেশনে ঢুকে অফিসের ৮টি কম্পিউটার, নগদ ৪ লক্ষ টাকা এবং সমস্ত ছাপা টিকিট লুট করে। করমন্ডল এক্সপ্রেসের একটি নতুন রেক ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে। এর জেরে ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়েছে।” অবরোধকারীদের কোনও নেতা না-থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি দাবি করেছেন জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তা”। (আজকাল ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৯)।

এই সময় পত্রিকা জানাচ্ছে –  “শুক্রবারের প্রতিবাদ সবচেয়ে আগ্রাসী ছিল উলুবেড়িয়ায়। ৬ নিম্বর জাতীয় সড়ক (বম্বে রোড), রেললাইন ও এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় অবরোধে এলাকা অশান্ত হয়ে ওঠে। কোনও ব্যানার ছাড়া একদল লোক এনআরসি এবং ক্যাব বিরোধী পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তার পরে অবরোধ করেন সড়ক ও রেলপথ। ফলে উলুবেড়িয়া মহাকুমার বিভিন্ন জায়গা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে দুপুরের পর থেকে। দুপুর পৌনে দুটো থেকে বিকেল সওয়া চারটে পর্যন্ত বম্বে রোড অবরুদ্ধ থাকায় হাওড়া ও কোলাঘাটের দিকে রাস্তায় অন্তত আট-ন কিলোমিটার পর্যন্ত সব গাড়ি আটকে যায়। আটকে পড়ে ডজনখানেক অ্যাম্বুল্যান্স ও দমকলের দুটি গাড়িও।

উলুবেড়িয়া স্টেশনে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। অবরোধকারীরা রেললাইনের উপরে স্লিপার ফেলে জাতীয় পতাকা টাঙিয়ে দেন। উলুবেড়িয়া স্টেশনে দিঘাগামী তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস ও চেন্নাইগামী করমন্ডল এক্সপ্রেস দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয় ১ নিম্বর প্ল্যাটফর্মে আরপিএফের কিয়স্ক, রিজার্ভেশন কাউন্টার ও কংক্রিটের বেঞ্চ। অবরোধকারীদের ছোড়া পাথরে উলুবেড়িয়া জিআরপি-র কনস্টেবল রিন্টু পাত্র এবং তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেসের চালক আর বৈরাগী এবং এক মালগাড়ির চালক আহত হন। সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ অবরোধ উঠলেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়নি রাত পর্যন্ত”। (এই সময়, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৯)

উপরের বিবরণে দুটি বিষয় লক্ষ করবেন – এক, এই সব প্রতিবাদে কোন দল বা সংগঠনের পতাকা নেই। তাহলে এই জনতা কোথা থেকে এল। দুই – একটি ভয়ংকর সূচনা, জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে জাতীয় সম্পত্তি ধ্বংস। এ বিষয়ে আমরা পরে আলোচনা করব।

হিংসাত্মক আক্রমণের অন্য কেন্দ্র ছিল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ মুর্শিদাবাদ জেলা। এই বিক্ষোভ কোন রাজনৈতিক প্রতিবাদ নয়, ধর্মীয় জিহাদ। সব জায়গাতেই দুপুরের জুম্মার নমাজের পর পথে নেমেছে উন্মত্ত জনতা।  স্টেটসম্যান পত্রিকা (১৪ ডিসেম্বর) লিখছে – “Worst hit by the agitation was, Beldanga area where the protesters raided the Beldanga railway station, set fire at station premises and allegedly attacked the security personnel of Indian Railways. A number of personnel belonging to railway protection force were injured when they made an attedmpt to put up some resistance against violent mob streaming into the platform. Offices of the railways at Beldanga station were allegedly vandalised, sources informed. The mob also ransacked cars of security personnel, it was learnt.

The NH-34 at Barua crossing of Beldanga town witnessed rounds of blockades since yesterday. The protest on the national highway today spilled over to Beldanga railway stations. The state police personnel attracted wrath of the agitators when the local police were called in to serve as backup force of the beleaguered RPF on duty, said eyewitnesses. Such was the ferocity of the mob violence that the passengers as well as railway officials on duty at Beldanga railway station were found running away to save their lives. The agitators then moved on to the Beldanga police station and clashed with the police personnel there. The police allegedly resorted to lathicharge and blank firing to scare away the protesters who pelted brickbats at the security forces, sources said.

Similar protests broke out at Behrampore, Raghunathganj and other areas of Murshidabad district. Protest flared up at the hospital crossing at Sagardighi. The protesters burnt PM’s effigies and copies of CAB. “We do not want CAB. Why should we prove anew that we are Indian citizens? We would like to warn the union government of the severe consequences of NRC and CAB. The CAB must be revoked,” said a Muslim cleric who led a protest rally at Raghunathganj”. (The Statesman, 14 December, 2019).

এটি আমাদের কথা নয়, একটি সংবাদপত্রের শিরোনাম । শুক্রবার সারাদিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে এরকম ধ্বংসাত্মক আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল কোন সংগঠন? কাদের পরিকল্পনা ছিল এই রেল স্টেশনে হামলার? কেন কোথাও কোন সংগঠনের নাম ছিল না? কোন সংগঠন বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির আহ্বান ছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে প্রায় একই সময়ে  শয়ে শয়ে লোক জমায়েত করে একই ধরণের হিংসাত্মক আন্দোলন কি সম্ভব?  এটি কি হঠাত আবেগপ্রসূত কিছু মানুষের একদিনের কিছু হটকারিতা?

না, তা নয়। তাহলে তা একদিনেই শেষ হয়ে যেত। সেজন্যই এই জেহাদী আক্রমণ চললো পরের দিনও।

১৪ ডিসেম্বর, শনিবার

১৩ তারিখের এই ধ্বংসাত্মক ঘটনার পর ভাবা গিয়েছিল পরদিন সব শান্ত হবে। কিন্তু ঘটল উল্টোটাই। ইসলামী জনতা বুঝে গিয়েছিল পুলিশ প্রশাসন কিছু করবে না কারণ রাজ্যের সরকার তাদের সঙ্গেই আছে। রাজ্যের স্বঘোষিত বুদ্ধিজীবিরাও শান্তির আহ্বান ছাড়া আর কিছু বলেন নি, হিংসাকারীদের বিরুদ্ধে কোন কঠিন বাক্য তাঁরা ব্যয় করেন নি। ফলে রাজ্যের বিভিন্ন মুসলমান প্রধান অঞ্চলগুলিতে জেহাদী জনতা পথে নামল আরো উদ্যমের সঙ্গে জাতীয় সম্পত্তি ধবংস করতে এবং পশ্চিমবঙ্গ যে আদতে ইসলামী শক্তিই চালায় তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে। আনন্দবাজার (১৫ ডিসেম্বর) লিখছে – “নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে শনিবারও অশান্ত থাকল রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চল। মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়ার বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা এবং রেল লাইন অবরোধ করে একাধিক ট্রেনে একের পর এক আগুন ধরানো হয়, বিভিন্ন স্টেশনে চলে ভাঙচুর। আগুন ধরানো হয় টোল প্লাজায় এবং অনেক বাসেও। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর স্টেশনে ভাঙচুর চালিয়ে ট্রেনে পাথর ছোড়া হয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাসনাবাদ, লালগোলা-কৃষ্ণনগর শাখার ট্রেন চলেনি। সব মিলিয়ে ভোগান্তি হয় সেই সাধারণ মানুষের”। (আনন্দবাজার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯)।

পাঁড় সেকুলার আনন্দবাজার চেপে গেলেও অন্যান্য সংবাদপত্র সত্যি খবর কিছু দিল। রেল স্টেশনের পর এবার মুক্ত জেহাদী জনতা শনিবার সকাল থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়ল কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে। লক্ষ একটাই নাগরিকত্ব আইন বিরোধিতার নামে পশ্চিমবঙ্গের সব মানুষ ও রাজনৈতিক দলকে দেখিয়ে দেওয়া পশ্চিমবঙ্গে জেহাদী শক্তির ক্ষমতা ও মূলতঃ জাতীয় সম্পত্তি ধ্বংস করা। বর্তমান (১৫ ডিসেমবর) সেদিনের ঘটনা নিয়ে লিখছে – “নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়াঃ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে কেন্দ্র করে শনিবার রণক্ষেত্রের চেহারা নিল কোনা এক্সপ্রেসওয়ে। গড়ফার কাছে সকাল থেকে অবরোধের পর আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হল অন্তত ১৯টি গাড়িতে। এর মধ্যে ন’টি গাড়ি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায়। ভাঙচুর চালানো হয় ৩০-৪০টি বাসে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিস ব্যাপক লাঠিচার্জ করে ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। কিন্তু, তা সত্ত্বেও উত্তেজিত জনতাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সারাদিন বেগ পেতে হয় পুলিসকে। এদিন কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে গড়ফার কাছে এই অবরোধ করে লোকজন। পুলিস অবরোধ তুলতে গেলে ওপর দিয়ে যাওয়া আমতা লাইনের কাছ থেকে পুলিস ও সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়ে অবরোধকারীরা। তার ফলে পুলিসকে অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে সথেষ্ট বেগ পেতে হয়। এই ঘটনায় হাওড়া সিটি পুলিসের ডিসি (সাউথ জোন) স্বাতী ভাংগালিয়া সহ বেশ কয়েকজন পুলিস কর্মী জখম হয়েছেন। পরে বিশাল পুলিস বাহিনী গিয়ে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনে। আর এর জেরে এদিন সকাল থেকে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে থাকল কোনা রোড। নাকাল হলেন হাজার হাজার মানুষ। গাড়ির লাইন একদিকে যেমন দ্বিতীয় হুগলি সেতু পর্যন্ত চলে গিয়েছিল, তেমনই অন্যদিকে তা অঙ্কুরহাটি মোড় পর্যন্ত চলে যায়”। (বর্তমান ১৫ ডিসেমবর, ২০১৯)।

শনিবার জেহাদী আক্রমণ নিয়ে এই সময় (১৫ ডিসেম্বর) লিখছে – “পুড়ে খাক ৭ বাস  – কিছুক্ষণের মধ্যে রাস্তার মাঝখানে টায়ারে আগুন ধরানো হয়। গোল করে ঘিরে খড়, কাঠের টুকরো, গাছের গুঁড়ি ফেলে বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল আগুনের তীব্রতা। জাতীয় সড়ক দিয়ে কলকাতার দিকের সব বাস-গাড়ি রেলব্রিজের আগে আটকে যায়। আর কলকাতা থেকে দক্ষিণবঙ্গগামী গাড়ি থেমে যায় সাঁতরাগাছি স্টেশনের কাছে। সে সময় পুলিশ ছিল সংখ্যায় কম। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিভিন্ন থানা থেকে প্রচুর কর্মী নিয়ে আসে সিটি পুলিশ। এতে আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠে বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের পক্ষ থেকে অবরোধ তুলতে সময় দেওয়া হয়েছিল দশ মিনিট। কোনও কাজ না হওয়ায় লাঠি উচিয়ে জনতাকে তাড়া করেন পুলিশকর্মীরা। পৌনে ১১টা নাগাদ জন-বিক্ষোভ কার্যত চলে যায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে। শুরু হয় দফায় দফায় জনতা-পুলিশ খন্ডযুদ্ধ। তখন পুলিশের তাড়া খেয়েও পালটা তাড়া করছে মারমুখী লোকজন। পুলিশের দিকে উড়ে আসছে ইট-পাথর। গড়ফা রেলব্রিজের সামনে লাইন থেকে পাথর ছুড়তে থাকে অনেকে। তখনই পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ।

জাতীয় সড়ক থেকে কলকাতার দিকে ঢোকার সময় সেতুর মুখে আটকে ছিল সার দেওয়া বাস। অশান্তি দেখে বাস থেকে নেমে ফের জাতীয় সড়কের দিকে হাটতে শুরু করেন বেশির ভাগ যাত্রী। তবে কারও কারও দাবি, মারমুখী জনতা জোর করে বাস থেকে নামতে বাধ্য করে তাঁদের। বেশ কিছু জিনিসপত্র ছিনিয়েও নেয়। খালি বাসে আগেই কয়েক দফা ভাঙচুর চলেছিল। পুলিশের তাড়ায় পর পর অন্তত ১৫টি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় জনতা। পুড়ে খাক হয়ে যায় ৭টি বাস। তার মধ্যে রয়েছে দুটি সরিকারি আর পাঁচটি বেসরকারি দূরপাল্লার রুটের বাস। তবে কাঁদানে গ্যাসের চোটে পিছু হটে জনতা। ঘটনাস্থলে এসেও দমকলকর্মীরা প্রথম দিকে ইটের ভয়ে জ্বলন্ত বাসের ধারেকাছে ঘেঁষতে পারেননি। ইটের ঘায়ে আহত হন বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী।

রাস্তায় দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় খন্ডযুদ্ধের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন আলম খান। তিনি বলেন, ‘দাউ দাউ করে জ্বলছিল সার দেওয়া বাস। ধোঁয়া-আগুনে ভরে গিয়েছিল গোটা চত্বর। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’ যদিও হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি সাউথ সাথী ভাঙ্গালিয়ার দাবি, ‘পুলিশ লাঠিচার্জ করেনি। বিক্ষোভকারীদের তাড়া করে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ অবরোধের ছবি তুলতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হন কয়েক জন সাংবাদিক। বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের এক কর্মীর মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ছুড়ে ফেলা হয় মাটিতে”। (এই সময়, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯)।

এতো গেল কোনার রাজপথের কথা। একই সময়ে হাওড়ার সাঁকারাইল রেল স্টেশনেও চলছে মুসলমান জনতার তাণ্ডব। এইসময় (১৫ ডিসেম্বর) লিখছে – “বিক্ষোভ-অবরোধে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে যখন উত্তাল, তখন সাঁকরাইলের চাঁপাতলাতেও জ্বলছিল টায়ার। ১১টা ১০ নাগাদ শুরু হয় সাঁকরাইল স্টেশনে উন্মত্ত জনতার তান্ডব। ১৩ নম্বর লেভেল ক্রসিংয়ে রাবারের স্তর উপড়ে দেওয়া হয়। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় লেভেল ক্রসিংয়ের বুম ব্যারিয়ার। তছনছ করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় টিকিট কাউন্টারে। কেবিনে ঢুকে ভেঙে দেওয়া হয় কন্ট্রোল প্যানেলও। ফলে পুরোপুরি ভেঙে পড়ে সিগন্যাল ব্যবস্থা। কংক্রিটের চেয়ার পড়েছিল লাইনে। প্ল্যাটফর্মের চায়ের স্টলও রোষ থেকে রেহাই পায়নি। চেঙ্গাইলে স্টেশনে টিকিট কাউন্টার, ট্রেনের কামরা, প্ল্যাটফর্মের দোকানেও চলে ভাঙচুর। লেভেল ক্রসিংয়ে আগুন জ্বালানোয় তৈরি হয় ক্ষত। বাউড়িয়া স্টেশনে রেললাইনের উপর টায়ার জ্বালায় বিক্ষোভকারীরা। নলপুর, বাঁকড়াবাজার স্টেশনেও আটকে দেওয়া হয় ট্রেন। দক্ষিণ-পূর্ব শাখায় স্তব্ধ হয়ে যায় রেল চলাচল”। (এই সময়, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯)।

সাঁকরাইল স্টেশনে জেহাদী তাণ্ডব নিয়ে বর্তমান পত্রিকার খবরের শিরোনাম ও বর্ণনা – সাঁকরাইল স্টেশনে ভাঙচুর, ধরানো হল আগুন, গুঁড়িয়ে দেওয়া হল প্যানেল, ব্যাহত পরিষেবা – পাপ্পা গুহ উলুবেড়িয়া – স্টেশন মাস্টারের ঘর ভাঙচুর। টিকিট কাউন্টার দাউদাউ করে জ্বলছে। জ্বলছে পূর্ব কেবিন। ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে প্যানেল রুম। কার্যত এক লহমায় বদলে গিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সাঁকরাইল স্টেশন। শুক্রবার বিকেলের পরেও শনিবার বিপর্যস্ত হয়ে পড়ল দক্ষিণ-পূর্ব রেলের পরিষেবা। এদিন বাউড়িয়া, নলপুর ও সাঁকরাইল স্টেশন সংলগ্ন একাকায় রেল অবরোধ হয়। উলুবেড়িয়ার কালীগনগর, গরুহাটা মোড়, কলেজ মোড়, শ্যামপুর, বাগনাননের একাধিক জায়গায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ হয়। উলুবেড়িয়া মহকুমা কার্যত বন্‌ধের চেহারা নেয়। তবে বিক্ষোভ সবচেয়ে বেশী হিংসাত্মক হয়ে ওঠে সাঁকরাইলে। স্টেশন ভাঙচুর করার পাশাপাশি স্টেশন মাস্টারের ঘরও ভেঙে ভেওয়া হয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় টিকিট কাউন্টার ও কেবিনে। লেবেল ক্রশিং ভাঙচুর করে প্যানেল ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীদের রোষের আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে একের পর এক সরকারি সম্পত্তি। বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকাতে। রেললাইনের পাশাপাশি চাঁপাতলায় রাস্তার উপরে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে বিক্ষোভকারীরা। এমনকী আশেপাশের বাড়িতেও ইট ছোঁড়ার অভিযোগ ওঠে। শনিবার দুপুরে  গিয়ে দেখা গেল গোটা স্টেশনটাই নিজের পরিচয় হারিয়ে ফেলেছে। চারিদিকে পোড়া জিনিসপত্র, স্টেশন জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আছে ভাঙা চেয়ার ও আসবাবপত্র। দূরে দাঁড়িয়ে রেলপুলিশ ও রাজ্য পুলিশ। স্টেশনের কাছে গিয়ে দেখা গেল টিকিট কাউন্টার থেকে স্টেশন মাস্টারের ঘর কোনকিছুরই অস্তিত্ব নেই। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক রেল কর্মী জানান, যেভাবে উত্তেজিত জনতা স্টেশনে হামলা চালিয়েছে, তাতে আমরা যে প্রাণে বাঁচতে পেরেছি সেটাই অনেক। অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দা অর্পণা কাঁড়ার জানান, বিক্ষোভকারীরা যেভাবে তাদের বাড়ি লক্ষ করে ইট ছুঁড়েছে তাতে তারা যথেষ্ট অতঙ্কিত। শনিবার সকাল থেকে পুনরায় ট্রেন চলাচল স্তব্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। কলকাতার রাজাবাজারের বাসিন্দা সন্ধ্যা ঘোষ জানান, শনিবার সকালে বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। এদিন স্টেশনে এসে জানতে পারি ট্রেন চলাচল বন্ধ। এদিন সকালে পাশকুড়া-হাওড়া লোকালে করে হাওড়ার ফুল বিক্রি করতে আসা ফুল ব্যবসায়ীরা উলুবেড়িয়া স্টেশনে আটকে পড়ায় বাধ্য হয়ে সমস্ত ফুল ট্রেনলাইনে ফেলে দেয়। ফুল ব্যবসায়ী গৌতম হাজরা জানান, যেভাবে ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ চলছে তাতে সঠিক সময় বাজারে ফুল না নিয়ে গেলে বিক্রি হবে না। তাই সমস্ত ফুল ফেলে দিলাম। অন্যদিকে শিক্ষক উমাশঙ্কর গুচ্ছাইত জানান, সকালে স্টেশনে আসলেও ট্রেন বন্ধ থাকায় স্কুলে যেতে পারলাম না। এদিকে শনিবার সাঁকরাইল স্টেশনে ভাঙচুর অগ্নিসংযোগের পর পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে পড়ে রেল পরিষেবা। সাঁকরাইল স্টেশন মাস্টার নির্মাল্য চট্টোপাধ্যায় জানান, যেভাবে প্যানেলে ভাঙচুর করা হয়েছে তাতে রেল পরিষেবা স্বাভাবিক করার কাজ খুবই কঠিন। আমরা চেষ্টা করছি সেটাকে সারিয়ে ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক করার। অন্যদিকে সাঁকরাইল স্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা সর্ম্পকে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ জানান, প্রতিক্রিয়া দেওয়ার মত কোনও ভাষা নেই। (বর্তমান, ১৫ ডিসেম্বর ২০২০)।

ক্রমশঃ

© মোহিত রায় , সুজিত সিকদার

Part – 2

Friday, 13th December 2019, Jumma

The next day was a Friday, or the jumma – the day of religious congregation for the Muslims. Usually, after the noon-time prayer(the namaz of Zuhr) on Fridays, congregations are held, where the religious heads of the mosques preside over the programmes. Their speeches are called khutba-e-juma. We do not know what was being preached on that day in different mosques. But, right after the noon time namaz, innumerous violent and chaotic occurrences erupted in various parts of the state.

Times of India – 14th December, 2019 reported that a rally of Muslims starting from the Tipu Sultan Mosque and then moving along Central Avenue at the very heart of Kolkata, caused disorder on the road due to massive traffic jams. About 3 pm, another rally of Muslims was taken out in the Park Circus area, and later in the night at Anwar Shah Road and Narkelbagan. There was a road blockade at Rajabazar as well.

But in the Muslim majority areas outside Kolkata, the incidents of violence was much more serious. Attacks took place at the rail stations of Uluberia and Murshidabad district’s Beldanga.

Uluberia witnessed demonstrations by hundreds of Muslims blocking the railway line around 2 pm. As a result, the Howrah-Chennai Express was delayed at the Uluberia station. Right after, a belligerent Muslim mob began pelting stones on trains, as it is typically witnessed in Jammu & Kashmir. They went on to shatter the glass window panes of the train compartments. In quick succession, a number of long-distance trains were laid over at different stations. Many suburban trains too were cancelled.

Description of the incident in the Bengali daily Aajkal:

“The demonstrators wreaked havoc at Uluberia railway station and its West Cabin even as the railway police attempted to stop them in vain. Also, a police personnel sustained injury when he came in the line of assault of a stone pelting mob. Even after this incidence, the vandalizers kept on throwing stones aimed at trains. The entire railway station compound at the moment was under the control of the violent mob. On the railway tracks, tyres were being set on fire.

In the S-6 compartment of the above-mentioned train, a passenger named Amitabha Sen was travelling with his family, headed for Brahmapur. According to Mr. Sen, ‘’Around half past three in the afternoon, when the train was passing through Uluberia, a mob began hurling stones at the train. We decided to close the windows. It was practically raining stones!’’

Mr. Sanjay Ghosh, the chief of public relations at South-East Railway issued a statement: ‘’The protesters entered into the Uluberia Station office and looted 8 computers, Rupees 4 lakh in cash, and a stack of printed rail tickets. They also ransacked a new rake on the Coromandel Express. Railway traffic was much affected due to this.’’

‘;Since the demonstrators were not led by anybody in particular, the situation could not be brought under control’’, claims an officer of the district police (rural).”

(Aajkal 14th December, 2019)

The Bengali daily EiSamay reported:

“The most aggressive protests in Uluberia took place on Friday. Unrest grew in the area as blockade continued on the National Highway 6 (Bombay Road), railway lines, and many roads in the town. A group of men without any banners started protesting by flashing anti-NRC and anti-CAB posters. Next, they blocked the highway and the rail tracks. As a result, post noon, various areas in the Uluberia division became inaccessible. Due to the blockade on the Bombay Road from 1:45 pm to 4:15 pm, all Howrah and Kolaghat-bound traffic within 8-9 km came to a standstill. A dozen ambulances and a couple of fire brigade vehicles too got held up in the jam.

Massive destruction of public property took place at Uluberia station. The demonstrators threw railway sleepers on the tracks and hoisted the national flag. The Digha-bound Tamralipta Express and the Chennai-bound Coromandel Express were halted at the Uluberia station. The RPF-kiosk on platform no 1, the reservation counter, and concrete benches at the station were ransacked. People injured in the stone pelting incident include Rintu Patra, a GRPF-constable, Mr. R. Bairagi – the driver of the Tamralipta Express and a goods-train driver also sustained injuries. Though the blockade on the railway tracks was lifted by 7 in the evening, railway traffic wasn’t normal until late night.”  

(EiSamay, 14th December, 2019)

In the description above, note two important observations: Firstly, there were no political or organisational banners in these incidents of protest. Where did this mob come from? Secondly, it saw the beginning of a terrible trend: rampant destruction of public property with the national flag in hand. We shall take this up later.

The other epicenter of these violent attacks was the Muslim-majority district of Mushirdabad. This unrest was no political protest, it was a religious war, a Jihad. It’s immediately after the afternoon jumma namaz that the frenzied mobs took to the streets everywhere. The Statesman (14th December edition) observed,

“Worst hit by the agitation was Beldanga area where the protesters raided the Beldanga railway station, set fire at station premises and allegedly attacked the security personnel of Indian Railways. A number of personnel belonging to railway protection force were injured when they made an attempt to put up some resistance against violent mob streaming into the platform. Offices of the railways at Beldanga station were allegedly vandalised, sources informed. The mob also ransacked cars of security personnel, it was learnt.

The NH-34 at Barua crossing of Beldanga town witnessed rounds of blockades since yesterday. The protest on the national highway today spilled over to Beldanga railway stations. The state police personnel attracted [the] wrath of the agitators when the local police were called in to serve as backup force of the beleaguered RPF on duty, said eyewitnesses. Such was the ferocity of the mob violence that the passengers as well as railway officials on duty at Beldanga railway station were found running away to save their lives. The agitators then moved on to the Beldanga police station and clashed with the police personnel there. The police allegedly resorted to lathicharge and blank firing to scare away the protesters who pelted brickbats at the security forces, sources said.

Similar protests broke out at Behrampore, Raghunathganj and other areas of Murshidabad district. Protest flared up at the hospital crossing at Sagardighi. The protesters burnt [the] PM’s effigies and copies of CAB. “We do not want CAB. Why should we prove anew that we are Indian citizens? We would like to warn the union government of the severe consequences of NRC and CAB. The CAB must be revoked,” said a Muslim cleric who led a protest rally at Raghunathganj”.

(The Statesman, 14 December, 2019).

“Who’s behind this organized violence? Sleuths investigate”

These words are not ours but the headline of a Bengali news daily. Throughout Friday, which organization had called for such destructive mass agitation at various parts of the state? Whose planning was behind the attacks on the railway stations? Why was no name of any political party or social or religious organization found among the protesting mob? Is it even possible to mobilise people in their hundreds at various parts of the state almost around the same time everywhere, to carry out a violent mass agitation, except at the bidding of an organization or an important personality? Is it really just a series of one-time, reckless actions by a few impulsive people?

No. Had it been so, the matter would have concluded in just a day or so. This is why the jihadist attacks continued through the next day as well.

Saturday, 14th December 2019

After the atrocities of 13th December, normalcy was expected to return over the next day. What actually happened was just the opposite. It had become clear to the Islamist mobs that the state police administration was not going to do anything about the atrocities, for the state government’s support lies very much with the Islamists. Even the self-proclaimed intellectuals of West Bengal did not spare a word except for homilies about the importance of peace, thus conveniently refraining from sending out a strongly worded caution to the aggressors. As a result, the jihad-driven people in various Muslim-majority localities took to the streets with renewed vigour to destroy public property and to point out in no uncertain terms that in West Bengal, the Islamist power has the last word. Anandabazar reports:

“In protest of the new Citizenship Act, unrest continued in various parts of the state even on Saturday. After blocking roads and rail lines in various parts of Murshidabad, North 24 Parganas, and Howrah, a number of trains were set ablaze in quick succession while many railway stations were ransacked. Fire was set to a toll plaza and a number of buses. At the railway station in Harishchandrapur of Malda district, stones were hurled at trains after a thorough ransacking of the station compound. Around the clock, scheduled trains on the Hasnabad, and the Lalgola-Krishnanagar routes remained cancelled. At the end of the day, the general public had to bear the brunt of it all.”

(Anandabazar, 15th December, 2019)

Though the staunch ‘Secularists’ at Anandabazar suppressed the truth of the incidents, other newspapers reported a fair bit of it. After targeting the railway stations, an unrestrained jihadist mob now descended on the Kona Expressway since Saturday morning. The singular aim behind these actions was to display the jihadist might before the people of West Bengal and its political parties and mainly the destruction of public property in the name of opposing the Citizenship Amendment Act. Bartaman(15th December) writes about the incident on Saturday:

‘‘Our Correspondent, Howrah: Tensions regarding the Citizenship Act on Saturday turned Kona Expressway into a veritable battle field. At least 19 vehicles were set ablaze near Garfa since morning when the blockading began. 9 out of these were completely reduced to ashes. There was also brutal ransacking of 30-40 buses. To bring the situation under control, cops resorted to widespread lathi-charge and teargas shelling. In spite of that, they faced difficulties throughout the day in bringing frenzied masses under control. Some people were found blocking the road near the Garfa region on the Kona Expressway. When cops attempted to lift the blockade, demonstrators pelted bricks aiming at journalists and police personnel from near the Aamta-line overhead. Consequently, cops had a tough time in bringing the situation under control. A number of police personnel had sustained injuries in the struggle, along with the DC of Howrah City Police (South Zone)- Swati Bhangaliya. Some time later, a huge police force was deployed, which brought the situation under control. Under such circumstances on this day, Kona Road remained practically shut since morning to the utter harassment of thousands. Cabs lined up upto the Second Hooghly Bridge at one end, and upto Ankurhati More on the other.”

(Bartaman 15th December 2019)

Regarding the jihadist atrocities on Saturday, EiSamay(15th December) reports:

“7 busses burnt to a cinder- Tyres were set ablaze in the middle of the road within just a short time. The fire was continuously being stoked by those surrounding it with pieces of straw, timberwood, and dry bark thrown into the flames. All Kolkata-bound traffic on the highway was stuck right before the rail bridge. And the southward bound traffic from Kolkata came to a halt right before the Santragachi railway station. At the time, there were only a few cops around. The City Police arrived at the location with a large number of cops gathered from various police outposts in the vicinity for the sole purpose of tackling the situation. The demonstrators were further incensed by this turn of events. The police gave them precisely ten minutes to lift the blockade. When this didn’t work, the cops charged at the mob with raised batons. At around quarter to 11, the mass-demonstration practically went out of control. A terrible series of skirmishes between the mob and the police force now ensued. The belligerent mob was then going for a counter attack at the charging police forces. Bricks and stones were being continuously pelted at the police. In front of the Garfa rail bridge, many were throwing pebbles picked up from the railway tracks. That is when the police allegedly began lathi-charging.

While entering Kolkata via the national highway, a long queue of buses got stuck at the mouth of the bridge. Fearing trouble, most passengers alighted at this point and started to walk towards the highway. However, some of them have claimed that it was an aggressive mob which forced the passengers out of the buses. The passengers were also robbed of their belongings. By then, the deserted bus was already ransacked several times. Chased by the police, the mob set ablaze at least 15 buses. Out of these, 7 buses – which include 2 state buses and 5 long-distance, private ones, were completely burnt to a cinder. Later, the mob retreated when the police fired tear-gas at them. The fire brigade, even after arriving at the spot, couldn’t go near the burning buses due to the continuous brick pelting. Coming under the attack with bricks, a number of police personnel also sustained injuries.

When walking down the street that day, Alam Khan had found himself in the midst of an ongoing skirmish. He said, ‘A row of buses were up in flames. The entire compound was filled with cinder and smoke. Only later, the police was able to control the situation with relentless lath-charging.’ However, the DC of Howrah City Police (South) Swati Bhangalia claimed that the police did not lathi-charge. The demonstrators were simply chased away. A few journalists too faced harassment that day when they went to take photographs of the situation. The mobile phone of a person among the crew of an electronic media house was snatched away by the demonstrators and smashed to the ground.”

(EiSamay, 15th December, 2019)

This was merely about what happened that day on the Kona Expressway. About the same time, Muslim mobs went on a rampage at Sankrail Railway Station in Howrah. EiSamay(15 December) writes:

“When tensions were at its peak on the Kona Expressway, tyres were also burning at Chanpatala of Sankrail. Around 11:10 am, a frantic mob started rampaging through Sankrail Station. The rubberized surface at level-crossing number 13 was torn out. The boom gate at the level crossing too was smashed to smithereens. The ticket counter was thoroughly ransacked and set to fire. Next, they entered the cabin and wrecked the control panel. As a result, the entire railway signalling system broke down. The cemented platform seats could be found lying about on the rail tracks. Even the tea stall at the platform was not spared from their wrath. A full-scale rampage was carried out at Chengail Railway Station by wrecking its ticket counter, train compartments, and shops on the platform. A fire set on the level crossing sparked an outrage among the general public. The set a few tyres ablaze on the railway line at Bauria station. Several trains were laid over at Nalpur and BankraBajar stations as well. Consequently, railway traffic came to a standstill on the South-East route completely.”

(EiSamay. 15 December, 2019)

Headline and reportage in the Bengali daily Bartaman, regarding the jihadist havoc wreaked at Sankrail Railway Sation:

Massive wreckage at Sankrail Rail Station, public property set on fire, railway panel smashed to smithereens, railway service badly hit

Pappa Guha, Uluberia-  The station master’s cabin has been ransacked. The ticket counter was up in flames. So was the East Cabin. The panel room has been razed to the ground. In the blink of an eye, Sankrail rail station of the South-east section of railways has transformed into a different place. After the fiasco of Friday afternoon, service at Sankrail Station in South-East Railway was disrupted once again on Saturday. Today demonstrators blockaded the rail line at Bauria, Nalpur, and Sankrail railway stations, and surrounding areas. Kalinagar, Garuhata More, College More, Shyampur, Bagnan, and various other areas of Uluberia witnessed massive agitation with burning tyres on the road. In effect, it was a bandh in the Uluberia subdivision. However, the agitation was at its most violent at Sankrail. Besides ransacking the station compound, the station master’s cabin too was wrecked. The ticket counter and its adjoining cabin were set ablaze. The level crossing was ransacked to the effect of having its panels crushed to bits. The burning fury of the demonstrators, caused irreparable damage to a large number of public property in its wake. Soon, the fire of rage spread to surrounding areas. In the Champatala area, right by the rail line, tyres were burnt on the road by demonstrators as a display of agitation. There were even such allegations of bricks being pelted at houses in the neighbourhood. By Saturday noon, the entire station compound seemed to have lost all its distinguishable features with charred objects all around, broken chairs and furniture strewn all over the station. The rail police and the state police stood at a distance all the while. On approaching the station it was found that there was no trace of anything left, starting from the ticket counter to the station master’s office. A railway employee unwilling to disclose his identity narrated to us, “Given the ferocity with which the frantic mob ransacked the station, we feel grateful just to come out of the trouble alive!” On the other hand, local resident Aparna Knadar told us that the pelting of bricks by the demonstrators to their homes had terrified them out of their wits. The disruption of railway traffic again since Saturday morning inconvenienced a great many people, starting from daily commuters to the general public. Sandhya Ghosh, a resident of Rajabazar, Kolkata said, “I was supposed to return home on Saturday. On arriving at the station I learned about the disruption of railway services.” The daily-commuting flower vendors of Panskura-Howrah Local who had come to sell flowers at Howrah, had to throw away all their flowers on the rail line, after getting laid over indefinitely at Uluberia. Flower vendor Goutam Hazra said, ‘In this situation of on-going rail line blockades, reaching the market after the appointed time will mean a setback in sales. So, I had to throw away all the flowers.’ In another instance of public harassment, UmashankarGuchhayit, a teacher, said, ‘Despite arriving at the station on time this morning, I could not make it to the school due to the cancellation of trains.’ Meanwhile, on Saturday, railway services were brought to a complete standstill after the incidents of vandalism and arson at the Sankrail Station. The station master at Sankrail, Mr. Nirmalya Chattopadhyay, informed us, “the manner in which the panel has been vandalised, it would be extremely difficult to bring the railway services back to normal. We are trying our best to normalise railway services by repairing it.” On the other hand, while commenting upon the incident of vandalism and arson, Mr. Sanjay Ghosh, the chief of public relations at South-Eastern Railway said that he was left without any word to comment on this issue.”

(Bartaman, 15 December 2019)

To be continue..

C: Mohit Ray and Sujit Sikdar

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.