পর্ব ১
পটভূমি
১০ ডিসেম্বর ২০১৯এ লোকসভায় পাস হয় নাগরিকত্ব সংশোধন বিল। পরদিন ১১ ডিসেম্বর ২০১৯এ সেই বিল পাস হল রাজ্যসভায়। ১২ই ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি সেই বিলে স্বাক্ষর করলেন ও নাগরিকত্ব সংশোধন আইন চালু হল। এই আইন তৈরী হল সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক পদ্ধতি অনুসারেই। যে কোন আইন প্রণয়নের ব্যাপারে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির ভিন্নমত থাকতেই পারে, গণতন্ত্রে সেটাই স্বাভাবিক। এ ব্যাপারে বিভিন্ন প্রতিবাদও করা যেতে পারে। ১৩ই ডিসেম্বর থেকে ১৫ই ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গে প্রতিবাদের নামে যে হিংসা নামিয়ে আনা হল এবং যারা এই কুকর্ম করলো তা আমাদের ১৯৪৬এর পাকিস্তান তৈরীর দিনগুলি স্মরণে নিয়ে এল। সেই কয়েকটি ভয়ংকর দিনের সংবাদপত্রের বিবরণ ও বিশ্লেষণ এই পুস্তিকার বিষয়। আগামী দিনগুলিতে ও ভবিষ্যতে পশ্চিমবঙ্গবাসী যাতে না ভুলে যায় সেই তিন দিন যখন পশ্চিমবঙ্গকে মিনি পাকিস্তানে পরিণত করা হয়েছিল।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন
মূল বিবরণে যাবার আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের কিছু কথা আলোচনা করা প্রয়োজনীয়। নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫৫কে চতুর্থবার সংশোধন করে এল নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, ২০১৯। এতে বলা হল – ৩১শে ডিসেম্বর ২০১৪ সালের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে অথবা আশঙ্কায় সেই দেশগুলির ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন ও পার্শি সম্প্রদায়ের মানুষ ভারতে এসেছেন, যাঁদের পাসপোর্ট আইন ১৯২০ ও বিদেশী আইন, ১৯৪৬ থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে – তাঁরা বেআইনি অনুপ্রবেশকারী বলে গণ্য হবেন না। এজন্য তাঁদের ভারতে প্রবেশের কোন প্রমাণপত্র যেমন পাসপোর্ট, ভিসা দেখানোর প্রয়োজন নেই। এই উদ্বাস্তুরা নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫৫-র ৫ নং ধারা – নিবন্ধীকরণ (Registration) অনুযায়ী বা ৬ নং ধারা – স্বাভাবিক করণ (Naturalisation) অনুযায়ী আবেদন করে নাগরিকত্ব পাবেন। তাঁকে ভারতে প্রবেশের পর পাঁচ বছর ভারতে থাকতে হবে।
এই নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের জন্য বিলটি প্রথম লোকসভায় পেশ করা হয় ১৯ জুলাই ২০১৬তে। সেখানে আলোচনার পর সেটিকে যৌথ সংসদীয় কমিটির কাছে পর্যালোচনার জন্য পাঠান হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, গণসংগঠন এই কমিটির সামনে তাদের বক্তব্য রাখে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় শাসকদল, পশ্চিমবঙ্গের উদ্বাস্তু সেলের পক্ষে ডঃ মোহিত রায় ও সুজিত সিকদার এই কমিটির সামনে বক্তব্য পেশ করেন। যৌথ সংসদীয় কমিটি তাদের মত ৭ জানুয়ারী ২০১৯এ লোকসভায় জানায় এবং ৮ জানুয়ারী ২০১৯এ লোকসভায় বিলটি পেশ করা হয় এবং বিলটি পাস হয়। এর কিছুদিন পর ১৬তম লোকসভার মেয়াদ শেষ হয়ে যায় ও রাজ্যসভায় বিল পেশের সময় পাওয়া যায় নি।
এরপর ২০১৯এর মে মাসে দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ও ভারতীয় জনতা পার্টি ও তার সহযোগী দলের জোট আগের নির্বাচনের চেয়ে আরো বেশী বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নির্বাচিত হয়ে কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করে। মনে রাখতে হবে কেন্দ্রীয় শাসক দলের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। ভারতের জনসাধারণ কেন্দ্রীয় শাসক দলকে আগের থেকেও বেশী আসনে, একক ও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়ে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠিয়েছে তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলি বাস্তবায়নের জন্য। নবনির্বাচিত ১৭তম লোকসভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ ৯ই ডিসেম্বর ২০১৯এ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করেন। লোকসভায় ১০ ডিসেম্বর ২০১৯এ এই বিল ৩১১ বনাম ৮০ ভোটে পাশ হয়। পরদিন ১১ ডিসেম্বর ২০১৯এ রাজ্যসভায় দীর্ঘ বিতর্কের পর গভীর রাতে ১২৫ – ১০৫ ভোটে বিল পাশ হয়। ১২ ডিসেম্বর ২০১৯, রাষ্ট্রপতি শ্রী রামনাথ কোভিন্দ এই বিলে স্বাক্ষর করলে বিলটি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে পরিণত হয়।
এই নাতিদীর্ঘ প্রস্তাবনাটির কারণ যে
১) আইনটির সংশোধনীর তৈরীর জন্য আলাপ- আলোচনা- বিতর্ক চলেছে তিন বছর ধরে,
২) সমস্ত গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে,
৩) এই সময়ের মধ্যে দেশব্যাপী সাধারণ নির্বাচন হয়েছে এবং এই আইনের প্রস্তাবক ভারতীয় জনতা পার্টিকে ভারতের জনসাধারণ বিপুল ও আগের থেকে বেশী সমর্থন দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করতে পুনঃনির্বাচিত করেছে।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, ২০১৯ কাদের জন্য ? আপনি বা আপনার পরিবার যদি পাকিস্তান, বাংলাদেশ বা আফগানিস্তান থেকে এসে থাকেন তবে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, ২০১৯ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। আইনটির সুফল প্রায় ৯০ শতাংশ পাবেন বাংলাদেশ থেকে আসা পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী হিন্দু উদ্বাস্তুরা। ১৯৭১এর আগে পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা উদ্বাস্তুরা উদ্বাস্তু স্বীকৃতি, নাগরিকত্ব, সরকারি সাহায্য ও পুনর্বাসন (সীমিত হলেও) পেয়েছেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ যুদ্ধের সময়ে ভারত সরকার একটি সারকুলার জারী করে (চিঠি নং – ২৬০১১/১৬/৭১-১০, তাং- ২৯/১১/১৯৭১) পূর্ববঙ্গ থেকে আসা উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব আবেদন নেওয়া বন্ধ করে। ফলে ১৯৭২এর পর ভারতে আসা ১ কোটি বাংলাদেশী হিন্দু উদ্বাস্তুরা নাগরিক হতে পারে নি। এখন সে সমস্যা মিটে গেল। এই আইনের সঙ্গে ভারতের কোন মুসলমানের কোন সম্পর্কই নেই।
কিন্তু হিন্দু উদ্বাস্তুদের সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ও পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেছে অন্ততঃ দেড় কোটি বাংলাদেশী মুসলমানরাও। এরা অনুপ্রবেশকারী। পশ্চিমবঙ্গ গঠিত হয়েছিল বাংলার হিন্দুপ্রধান অঞ্চল নিয়ে, পশ্চিমবঙ্গের অস্তিত্বের ভিত্তি – যথেষ্ট হিন্দু গরিষ্ঠতা, হিন্দুদের নিরাপত্তা এবং ভারতীয় ধর্ম ও সংস্কৃতির অবাধ চর্চা। বাংলাদেশী অনুপ্রবেশ ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম জনসংখ্যা ১৯ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশের বেশী করে যথেষ্ট হিন্দু গরিষ্ঠতার ভিত্তিকে নড়বড়ে করে দিয়েছে। এই মুসলমান অনুপ্রবেশকারীদের ভোটের, পেশী ও অস্ত্রের শক্তির জোরের উপর অবলম্বন করে আগে কমিউনিস্ট ও এখন রাজ্য শাসক দল নষ্ট করেছে পশ্চিমবঙ্গের ভারতীয়দের নিরাপত্তা – আগুন জ্বলেছে ধুলাগড় থেকে কালিয়াচকে। দুর্গা পূজা, সরস্বতী পূজার উপর আক্রমণ, লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে বিতাড়ন ভারতীয় ধর্ম ও সংস্কৃতির অবাধ চর্চাকে করেছে বিঘ্নিত। এইসব দলগুলি বাংলাদেশী মুসলমান অনুপ্রবেশকারীদের দিয়ে পশ্চিমবঙ্গকে পশ্চিম বাংলাদেশ করবার ইসলামি পরিকল্পনায় মদত দিচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু (কিছু বৌদ্ধ) উদ্বাস্তুরা নাগরিকত্ব পেলে এই অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা সহজ হবে এবং আইনী পথে তাদের ভূয়া নাগরিকত্ব তথা সুযোগসুবিধা পাওয়ার পথ বন্ধ করে পশ্চিমবঙ্গের ধর্মীয় জনসংখ্যায় ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা যাবে। এই বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে নাগরিকত্ব আইনে আগে থেকেই রয়েছে জাতীয় নাগরিক পঞ্জীকরণ বা National Registration of Citizens (এন আর সি)-র ব্যবস্থা।
এবার আমরা দেখবো পশ্চিমবঙ্গে এই আইন পাশের ও এন আর সি-র বিরোধিতা কারা করলো, কিভাবে করলো, কারা তাদের সাহায্য করলো ইত্যাদি।
১২ ডিসেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার
১১ ডিসেম্বর রাতে রাজ্যসভাতে নাগরিকত্ব বিল পাশ হবার পর কিছু জায়গায় প্রতিবাদ মিছিল হয়। পরদিন ১২ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় নাগরিকত্ব বিল বিরোধীরা প্রতিবাদ করে। বর্তমান পত্রিকা জানাচ্ছে যে “বোলপুর-রাজগ্রাম রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ। পুলিসের অনুরোধে সেখানে প্রতীকী বিল পুড়িয়ে এনআরসি বিরোধী প্রতিবাদ শেষ হয়। এনআরসি বিরোধীরা এদিন মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের বরজ থেকে জাতীয় সড়ক ধরে মিছিল করেন। ওমরপুরে গিয়ে শুরু করেন রাস্তা অবরোধ। পোড়ানো হয় অমিত শাহের কুশপুতুল। সৃষ্টি হয় যানজটের। এরপর সেই মিছিল যায় দাদাঠাকুর মোড়ে। সেখানে শুরু হয় বিক্ষোভ। এদিন বিকেলে বিক্ষোভ দেখানো হয় বেলডাঙা ও সালারে। ……. মেদিনীপুর শহরে মিছিল ও বাঁকুড়ার সোনামুখীতে হয় সভা। এনআরসি সংশোধনী ফায়দা তুলতে মরিয়া গেরুয়া শিবিরও নামে ময়দানে। বিলকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে বিভিন্ন এলাকায় ‘বিজয় মিছিল’ বের করে। বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি, তালডাংড়া, নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর, শান্তিপুর, কল্যাণীতেও”। (বর্তমান – ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০)।
লক্ষণীয় যে ১২ই ডিসেম্বরের এই প্রতিবাদ পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ রাজনৈতিক প্রতিবাদের মতনই ছিল। কিছু কুশপুত্তলিকা পোড়ানো, মিছিল – যেমন প্রতিবাদ হয়। পাশাপাশি বিজেপিও বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করে। পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংবাদপত্র ‘এই সময়’ এ এই প্রতিবাদ সংক্রান্ত কোন সংবাদই ছিল না। ১২ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার এমন কিছু ঘটে নি যাতে পরবর্তী কোন বিপদের সঙ্কেত পাওয়া যায়।
#ক্রমশঃ
© মোহিত রায় , সুজিত সিকদার
Part – 1
Background
The Citizenship Amendment Bill (henceforth CAB) was passed in the Lok Sabha on 10th December 2019. On the very next day, i.e. 11th December 2019, the bill was passed in the Rajya Sabha. On 12th December, the president signed the bill; and the Citizenship Amendment Act came into force. The law was brought into existence through completely democratic and constitutional means. It is absolutely normal for the political parties in the opposition to hold different views when a particular law is enacted in a democracy. Even protests against the law at various levels can be lodged as a democratic way of dissent. However, the violence that took place during 13th to 15th December in West Bengal in the name of protest, and those who perpetrated atrocities, reminded us of the days preceding the formation of Pakistan in 1946. The newspaper accounts and analyses of those terrible days are recorded in this booklet so that in the days to come, the people of West Bengal do not forget those three days when West Bengal became a mini-Pakistan.
The Citizenship Amendment Act
Before delving into newspaper reports, it is necessary to discuss the Citizenship Amendment Act first. The Citizenship Amendment Act 1955 was revised for the fourth time, to bring about the Citizenship Amendment Act 2019. Under this act, the religious minorities such as Hindus, Sikhs, Buddhists, Christians, Jains and Parsees from Bangladesh, Pakistan and Afghanistan, who entered into India on or before 31st December 2014 due to religious persecution or the apprehension thereof, are exempted from the Passport Act, 1920 and the Foreigners Act, 1946. In simple words, they shall not be treated as illegal migrants. It is not necessary for them to show any document of their coming to India, like a passport or visa. These refugees can receive citizenship on appeal through the 5th article under the Citizenship Act 1955 – ‘Registration’ or through the 6th article- ‘Naturalization’. For receiving citizenship, they will have to live in India for 5 years after entering the country.
The bill for the revision of the Citizenship Act was presented for the first time at the Lok Sabha on 19th July 2016. After due deliberation it was sent to a joint parliamentary committee for review. Various political parties and mass organizations presented their views before this committee. On behalf of the Refugee Cell for West Bengal, Bharatiya Janata Party, Dr. Mohit Ray and Sujit Sikdar spoke before this committee. The joint parliamentary committee presented its views to the Lok Sabha on 7th January, 2019. Subsequently, the bill was presented and then passed at the Lok Sabha on 8th January, 2019. A few days later, the tenure of the 16th Lok Sabha came to an end and consequently there was no time left to present the bill before the Rajya Sabha.
The general elections were held in the country in the month of April and May in 2019. The coalition of the Bharatiya Janata Party and its allied parties got re-elected by furthering its absolute majority, and thereby, they formed the government at the center once again. It is worth noting that the Citizenship Amendment Act was an electoral promise of the Bharatiya Janata Party. The Indian electorate elected the Bharatiya Janata Party (BJP) to the Lok Sabha with a singular and absolute majority, and also awarded it with more parliamentary seats than the last time so as to actualize BJP’s electoral promises. At the newly elected 17th Lok Sabha, the Home Minister Sri Amit Shah presented the Citizenship Amendment Bill on 9th December 2019. On 10th December 2019, this bill was passed at the Lok Sabha by 311 to 80 votes. On the next day – 11th December 2019, at the end of a prolonged debate, the bill was passed by a margin of 125 to 105 votes late at night. On 12th December 2019, the President Sri Ramnath Kovind signed the bill, whereby the bill became the Citizenship Amendment Act.
This brief preamble was necessary to highlight that:
1. Debate and deliberation regarding the amendment of the act has been going on for three years,2. All democratic and constitutional procedures have been duly followed in enacting this bill,3. Country-wide general elections have been conducted during this time, and Bharatiya Janata Party – the proponent of this act has been re-elected by a huge mandate from the Indian people and with greater support than before to form the government at the center.
Who are the targeted beneficiaries of the Citizenship Amendment Act 2019?
If you or your family have arrived from Pakistan, Bangladesh, or Afghanistan, then the Citizenship Amendment Act 2019 will be of critical importance to you. Approximately 90 per cent of the beneficiaries of this act will be the Hindu refugees living in West Bengal, who have come from Bangladesh. Before 1971, the migrants from East Pakistan did receive refugee-status, citizenship, government help, and rehabilitation (even if it was much limited). During the Bangladesh Liberation War in 1971, the Indian government issued a circular (letter no. 26011/16/71-10, Date- 29/11/1971) to stop receiving citizenship applications from the refugees arriving from East Pakistan. As a result, one crore Bangladeshi hindu refugees who had come to India after 1972, could not become Indian citizens. Now, this problem has been resolved. One may specifically note that this act does not have any bearing whatsoever on any Indian Muslim.
However, along with the Hindu refugees, at least 1.5 crores of Bangladeshi Muslims too have entered into West Bengal and India. They are trespassers. West Bengal was formed out of the Hindu-majority areas of Bengal. As a matter of fact, the bases for West Bengal’s existence were sufficient Hindu majority, security to the Hindu lives, and freedom of practice of the Indic religions and culture. The massive infiltration from Bangladesh has already shaken the basis of having sufficient Hindu majority by increasing the Muslim population from 19% to more than 30% in West Bengal. At first the CPI(M) and now the Trinamool Congress have compromised the security of Indian citizens in West Bengal while banking upon the power of vote, muscle power, and arsenal of these Muslim infiltrators. Consequently, from Dhulagarh to Kaliachak, West Bengal has been set ablaze. The recurring attacks on Durga Puja and Saraswati Puja, the expulsion of intellectuals like Taslima Nasrin have disrupted the climate of free thinking and practice of Indic religions and culture. The aforementioned political parties are lending their support to the Islamic scheme of turning West Bengal into West Bangladesh through infiltration by Bangladeshi Muslims. If Hindu (and also a few Buddhist) refugees arriving from Bangladesh are given citizenship, it would be easier to identify the infiltrators. By cancelling fake citizenships along with all its opportunities and benefits through legal process, India can restore balance in the religious demography of West Bengal. To facilitate identification of Bangladeshi infiltrators, the Citizenship Act can be accompanied with the existing ‘National Registration of Citizens’ (NRC).
Thursday, 12th December 2019
Now we shall turn our attention to those who protested against the passing of the law and NRC in West Bengal, how they did it, who they received help from, etc.
On the night of 11th December, after the Citizenship Bill was passed in the Rajya Sabha, protest marches were taken out at some places. On the very next day – 12th December, anti-Citizenship Bill demonstrators staged their protests at various places in West Bengal. The Bengali daily Bartaman reported:
“There was unrest and road blocking on the Bolpur-Rajgram Road. Here, on the request of the police, anti-NRC protest was concluded after a symbolic bill-burning. On this day, the anti-NRC protesters marched along the national highway from Baraj in Raghunathganj of the Murshidabad district. Upon their arrival at Omarpur, they started blocking the road. Amit Shah’s effigy was burnt. Traffic jams ensued. The rally then reached Dadathakur More. There, a full-scale demonstration took place. On the same afternoon, demonstrations were also held at Beldanga and Salar…a rally was organised in Midnapore City and a meeting at Sonamukhi, Bankura. Bent on reaping the benefits from the NRC amendment, the saffron camp also took to the field. Dubbing the bill ‘historic’, BJP took out ‘victory rallies’ at various places. The picture was the same also in Gangajalghati and Taldangra of Bankura, and in Krishnanagar, Shantipur, and Kalyani of the Nadia district.” (Bartaman – 13 December, 2019)
Please note that the 12th December protests were like any other common political protests in West Bengal. It was business as usual – burning effigies, rallies – the way one would expect protests to happen. The BJP too had taken out rallies at various places. ‘EiSamay’ – one of the leading Bengali dailies of West Bengal, featured no news regarding these protests. There were no incidents on Thursday, 12th December, to hint at any ensuing danger.
To be continue..
C: Mohit Ray and Sujit Sikdar