প্রথম দফার নির্বাচন: রামনগরে জোর লড়াই

আগামী ২৭ মার্চ রাজ্যের ৩০টি বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচন। এই ৩০টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রটি এবার রাজনৈতিক দিক থেকে উল্লেখ যোগ্য। কারণ পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকারী পরিবার এবার তৃণমূলের সঙ্গে নেই। তারা সপরিবারে বিজেপি শিবিরে নাম লিখিয়েছে। আর শুভেন্দু অধিকারী, তাঁর বাবা শিশির অধিকারী তৃণমূল ছাড়ার পর পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূলের যে নেতাটি অধিকারী পরিবারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন তিনি এবার রামনগরের তৃণমূল প্রার্থী ও পূর্বতন রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি। তাই এবার নির্বাচনের উত্তাপে রামনগর টগবগ করে ফুটছে।

অখিল গিরির সঙ্গে নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, “শুভেন্দু অধিকারী বা তাঁর বাবা শিশির অধিকারী তৃণমূল ছাড়ার জন্য পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের সংগঠনের কোনও ক্ষতি হয়নি। কাজেই রামনগর বিধানসভা কেন্দ্র যেমন তৃণমূলের ছিল তেমনি তৃণমূলের থাকবে।”

রামনগরে বিজেপি প্রার্থী হলেন স্বদেশ রঞ্জন নায়েক। সিপিএম প্রার্থী হলেন সভ্যসাচী জানা। অখিল গিরি তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর। তিনি নিশ্চিন্ত যে তিনি আবারও পাঁচ বছরের জন্য মানুষের রায় নিয়ে রামনগরের বিধায়ক হবেন। তবে এই কেন্দ্রের সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীর দল সিপিএম-এর বক্তব্য , মানুষ বিজেপি, তৃণমূলকে চিনে গেছে। সবাই জানে তৃণমূলের আস্তাকুড়ে হইয়াছে বিজেপি পার্টি। কাজেই মানুষ ভরসা রাখবে বাম প্রার্থীর ওপরই । তবে বিজেপি এই রামনগর কেন্দ্রে জল মাপছে। মুখে কোনও সারা না দিয়ে চুপচাপ জনসংযোগ করে চলেছেন স্বদেশ রঞ্জন নায়েক।

যাবে অখিল গিরির জন্য এবার রামনগর কেন্দ্রটি নজরে এসেছে। কারণ শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছাড়ার আগে থেকেই অখিল গিরির সঙ্গে ঠান্ডা লড়াই চলছিল। অখিল গিরি শুভেন্দু অধিকারীর তৃণমূলে থেকে ক্যাবিনেট মিটিং-এ না যাওয়া, মন্ত্রী হিসেবে কাজ না করার জন্য বলতেন, “শুভেন্দু দলটা ছাড়লেই তো পারে।
দলে থেকে কেন কাজ না করে সব নষ্ট করছে?” আবার শিশির অধিকারী যখন নির্বাচনের ৬দিন আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গেলেন রবিবার সেদিন অখিল গিরি বলেছেন, “শিশির অধিকারী তৃণমূল ছাড়লে তৃণমূলের কিছু এসে যায়না।” এই জেলার তৃণমূল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশ জানে এবার শুভেন্দু অধিকারী অখিল গিরিকে পরাজিত করার জন্য রাজনৈতিকভাবে লড়াই করবেন। কিন্তু এই জেলার মানুষের একটা বড় অংশ বলছে, “শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতায় শক্তিশালী ছিলেন। না হলে তাকে চেনে কে? তিনি যে মন্ত্রী থেকে শুরু করে অতগুলো সরকারি পদ পেয়েছিলেন সেটা তাঁকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া । তাই এই জেলার মানুষ শুভেন্দু অধিকারীকে বিশ্বাসঘাতক বলেই এখন জানে। তাই শুভেন্দু অধিকারীর ওপর রাগ হয়ে রাম নগরের বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে মানুষ ভোট দেবে। ফলে অখিল গিরির জয় নিশ্চিত। তবে বাস্তবে কী হবে সেটা বোঝা যাবে ২ মে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.