নবান্ন দখলের লক্ষ্যে বিজেপির ইশতেহার প্রকাশ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর সেই ইশতেহার আক্ষরিক অর্থেই কল্পতরু। সেই ইশতেহার প্রকাশ করে অমিত শাহ বলেন, ‘বিজেপি সবসময় সংকল্পপত্রকে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দিয়েছে। সংকল্পপত্রের উপর ভিত্তি করেই বিজেপি সরকার চালিয়ে এসেছে বিভিন্ন রাজ্যে। ভবিষ্যতেও কীভাবে সোনার বাংলা তৈরি করব, তা এই সংকল্পপত্রে আমরা উল্লেখ করেছি। রাজ্যের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মতামত নিয়ে আমরা এই সংকল্পপত্র তৈরি করেছি।’ আর সেই সূত্রেই অমিত শাহ ঘোষণা করেন, বাংলার সরকার গঠনের পর প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকেই সরকারি বেতনভূকদের জন্য সপ্তন বেতন কমিশন গঠন করা হবে। উত্তরবঙ্গ, জঙ্গলমহল ও সুন্দরবনে এইমস-এর ধাঁচে তিনটি হাসপাতাল গড়া হবে। ইশতেহার ঘোষণার পরপরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ট্যুইটে লেখেন, ‘বিজেপির সোনার বাংলা সঙ্কল্পপত্র এক নতুন বাংলা গড়বে। উন্নয়নের এক রূপরেখা গড়া হয়েছে। আপনারা সবাই তা দেখুন।অমিত শাহের দাবি, ‘সোনার বাংলা কোনও অলীক কল্পনা নয়। অতীতে আমরা দেখেছি, বাংলা ভারতের থেকে সবসময় এগিয়ে থাকত। বাংলা থেকেই স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনা হয়েছে। জনগণমন, বন্দেমাতরমের মতো গান তৈরি হয়েছে বাংলার মাটিতেই। শিক্ষা, বিজ্ঞান, সাহিত্য সব ক্ষেত্রে বাংলা এগিয়ে ছিল। কিন্তু সেই কৌলিন্য আজ আর নেই। বিজেপি ক্ষমতায় এলে সেই সোনার দিন আবার ফিরে আসবে।’
বাংলায় ইমাম ভাতা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বারবার আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। পরবর্তীকালে পুরোহিতদেরও ভাতা দেওয়া শুরু করে মমতার সরকার। বিজেপির এবারের ইশতেহারে পুরোহিতদের মাসে ৩,০০০ টাকা অনুদানের ঘোষণা তাই বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। একইসঙ্গে ৬০ বছরের উপর বয়স্ক কীর্তন গায়কদেরও মাসে ৩,০০০ টাকা অনুদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে ইশতেহারে।
এছাড়াও থাকছে রাজ্যের সব চাকরির জন্য কমন এলিজিবিলিটি টেস্টের আশ্বাস, ১১ হাজার কোটি টাকায় সোনার বাংলা ফান্ডের ঘোষণা, বালিকা আলো প্রকল্পে পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের জন্য শিক্ষার জন্য প্রকল্প, চা শ্রমিকদের দৈনিক ৩৫০ টাকা মজুরি, প্রতি পরিবারের এক জনের কর্মসংস্থানের ঘোষণাও করেছে বিজেপি।
আর বিজেপির সেই ইশতেহারকেই ‘জুমলা’ বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তাঁর কথায়, ‘বাংলার জন্য একজন গুজরাতি ইশতেহার পড়ছেন। বাঙালি নেতারা বসে রয়েছেন। গোটা বক্তৃতাই তিনি করলেন হিন্দিতে। এতেই বোঝা যাচ্ছে তাঁরা কতটা সোনার বাংলা গড়তে চান।’