কথা আগেই ছিল, আজ সেই মতো ইস্তাহার প্রকাশ করল বিজেপি। রবিবার বিকেলে এগরার সভা থেকে কলকাতায় এসে পৌঁছন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। তার পরেই প্রকাশিত হয় ইস্তাহার। বিজেপির এই ইস্তাহারের পোশাকি নাম ‘সোনার বাংলা সঙ্কল্প পত্র ২০২১’।
এই ইস্তাহারে বাংলার উন্নয়নের বিষয়টি নজর দেওয়া হয়েছে বলে বিজেপির দাবি। দিলীপ ঘোষ বলেন, “বিজেপি যা বলে তাই করে, তার চেয়ে বেশিই করে।”
অমিত শাহ ইস্তাহার প্রকাশের আগে বলেন, “অনেক বছর ধরেই ইস্তাহার কেবলই ফাঁপা একটা কাগজ। কিন্তু বিজেপি সরকার গড়ার পরেই এই ইস্তাহারের বাস্তবায়ন হয়েছে। এই জন্যই আমরা নাম দিয়েছি সঙ্কল্প পত্র। কারণ আমাদের সঙ্কল্প, বাংলাকে সোনার বাংলা গড়ব। এটা কেবল ঘোষণা নয়, সঙ্কল্প। এটা প্রকাশ করার আগে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে মানুষের মতামত গ্রহণ করা হয়েছে নানা পদ্ধতির মাধ্যমে।”
তিনি আরও বলেন, “সোনার বাংলা কোনও অলীক কল্পনা নয়। অতীতে বাংলা সারা ভারতের থেকে এগিয়ে থাকত। বাংলা থেকেই স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয়েছে। জনগণমন, বন্দেমাতরম তৈরি হয়েছে এই বাংলাতেই। কিন্তু এখন বাংলা পিছিয়ে গেছে। বামেদের শাসন, মমতা দিদির শাসনের পরিণাম এটা।”
- মেয়েদের জন্য ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণ।
- সমস্ত মহিলাকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান, যার মধ্যে ওপিডি ও উন্নত চিকিৎসা।
- মিশন আত্মনির্ভর মহিলা: মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির জন্য ৫,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ।
- বালিকা আলো: রাজ্যের সব মেয়েকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে এবং ১৮ বছর বয়স হলে ২ লক্ষ টাকা করে প্রদান করা হবে।
- প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মান যোজনার আওতায় বকেয়া ১২ হাজার টাকা সহ মোট ১৮ হাজার টাকা সরাসরি কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হবে।
- ৪ লক্ষ মৎস্যজীবীকে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান প্রকল্পের অনুরূপ বছরে ৬ হাজার টাকা করে দেবে সরকার।
- প্রথম ক্যাবিনেটেই প্রতিটি বাঙালিকে আয়ুষ্মান যোজনার লাভ পৌঁছে দেওয়া হবে।
- এমন সীমা-সুরক্ষা করা হবে, যাতে পাখিও না গলতে পারে। সীমান্তে অপরাধ বন্ধ হবে।
- ৭০ বছর ধরে যে সব শরণার্থী এদেশে রয়েছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
- যে কোনও মহিলা কেজি থেকে পিজি পর্যন্ত নিখরচায় পড়াশোনা করবে।
- সমস্ত গণপরিবহণ মহিলাদের জন্য ফ্রি।
- উত্তরবঙ্গ, জঙ্গলমহল ও সুন্দরবন এলাকায় তিনটে এইমস হাসপাতাল হবে।
- প্রতিটা পরিবারের অন্তত এক জন ব্যক্তি চাকরি পাবেন।
- ২০ লক্ষ যুবকের দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রতিটি ব্লকে নেতাজি ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করা হবে।
- বিদ্যালয়ের পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য ২০,০০০ কোটি টাকার ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তহবিল স্থাপন করা হবে।
- প্রতিটি ব্লকে কমিউনিটি স্পোর্টস সেন্টার, প্রতিটি মহকুমায় মাল্টি স্পোর্টস স্টেডিয়াম এবং প্রতিটি জেলায় ক্রীড়া প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
- সরকারি কর্মচারিদের জন্য সপ্তম বেতন কমিশন গঠন করা হবে।
- অ্যান্টি-কোরাপশন হেল্পলাইন হবে। মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি অভিযোগ জানানো হবে।
- প্রতিটা ঘরে শৌচাগার থাকবে।
- সত্যজিৎ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড উপস্থাপনা করা হবে।
- অনগ্রসর শ্রেণির পড়ুয়াদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।
- বিধবা ভাতা ১ থেকে বেড়ে ৩ হাজার হবে।
- প্রসূতিদের এখন অনুদান ৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৯ হাজার টাকা করা হবে।
- মহিলাদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে রাজ্য পুলিশে ৯টি মহিলা পুলিশ ব্যাটেলিয়ন গঠন এবং রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীতে ৩টি মহিলা ব্যাটেলিয়ন গড়া হবে।
- চারটি মেগা ফুড পার্ক, দশটি ছোট ফুড পার্ক, একটি চা পার্ক, দুটি সি ফুড প্রসেসিং পার্ক স্থাপন করা হবে।
- ২টি চামড়া শিল্প উদ্যান, ১টি লৌহ ইস্পাত শিল্প উদ্যান, ১টি জুয়েলারি শিল্প উদ্যান, ১টি ফার্মা পার্ক, ১টি ইলেকট্রনিক্স এবং সেমিকন্ডাক্টর শিল্প উদ্যান এবং ১টি অটো শিল্প পার্ক স্থাপন করা হবে।
- ফসলের সঠিক দাম নিশ্চিত করতে ৫ হাজার কোটি টাকার ফান্ড তৈরি হবে।
- কৃষক সুরক্ষা যোজনা: সকল ভূমিহীন কৃষক এবং ভাগচাষিকে প্রতি বছর ৪,০০০ টাকা করে দেওয়া হবে।
- ২০ হাজার কোটি টাকার কৃষক সুরক্ষা কৃষি পরিকাঠামো তহবিল গড়া হবে।
- কৃষক ও মৎস্যজীবীদের ৩ লক্ষ টাকার বিমা মিলবে।
- কোল্ড স্টোরেজ, মিল্ক প্রসেসিং ইউনিট তৈরি হবে রাজ্যে। বাংলা হোয়াইট রেভলিউশনে ১,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ।
- মুর্শিদাবাদে মলমল রিসার্চ সেন্টার তৈরি হবে।
- শিক্ষিত যুবকদের কথা ভেবে প্রতিটি ব্লকে কাজ হবে।
- সব স্কুলে জল, বিদ্যুৎ, কম্পিউটার, শৌচাগার, খেলার মাঠ থাকবে।
- আইআইটি এবং আইআইএম তৈরি হবে আরও।
- সাঁওতালি, রাজবংশী, নেপালি ভাষায় জোর দেওয়া হবে শিক্ষাক্ষেত্রে।
- কয়লা মাফিয়া, বালি মাফিয়াদের বিচারের জন্য টাস্ক ফোর্স গড়া হবে।
- আয়লা, আমফান, বুলবুলে যাঁরা দুর্নীতি করেছেন, তাঁদের আইনের সামনে দাঁড় করানো হবে।
- রাজনৈতিক হিংসায় মৃতদের পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে এবং অপরাধীরা শাস্তি পাবে।
- এমএসএমই-গুলিকে ১০ লক্ষ টাকা করে ঋণ মিলবে।
- মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক ও নার্সের আসন দ্বিগুণ করা হবে।
- ১০,০০০ কোটি টাকার কাদম্বিনী গাঙ্গুলী স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর তহবিল গড়া হবে।
- আশা কর্মীদের বর্তমান স্থায়ী মাসিক সাম্মানিক ৪,৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬,০০০ টাকা করা হবে।
- ২০২৫ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গু নির্মূল করা হবে।
- কলকাতাকে ‘ফিউচার সিটি’ হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
- ৬৭৫ কিলোমিটার রাস্তা, কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত তৈরি হবে।
- বাগডোগরা এয়ারপোর্ট আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট হবে। পুরুলিয়ায় ডোমেস্টিক এয়ারপোর্ট হবে।
- মালদা, বালুরঘাট ও কোচবিহার বিমানবন্দরগুলিকে সচল করা হবে।
- গঙ্গাসাগর মেলাকে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছনোর জন্য ফান্ড তৈরি করা হবে।
- পুরোহিতদের মাসে ৩,০০০ টাকা অনুদান দেওয়া হবে।
- ৬০ বছরের উপর বয়স্ক কীর্তন গায়কদের মাসে ৩,০০০ টাকা অনুদান দেওয়া হবে।
- পার্শ্ব শিক্ষকদের বেতন প্রাথমিকে ১৫,০০০ এবং মাধ্যমিকে ২০,০০০ টাকা করে হবে।
- কলকাতায় দুর্গপুজোকে আন্তর্জাতিক মাত্রা দেওয়া হবে। সারা দুনিয়ার পর্যটক আসবে।
- স্কুলগুলিতে বাংলা পড়াতেই হবে। যে মিডিয়ামেরই স্কুল হোক না কেন।
- রাজ্যের সর্বত্র অন্নপূর্ণা ক্যান্টিনে ৫ টাকায় খাবার মিলবে দিনে তিনবার।
- রেশনে ১ টাকা কেজি গম, ৩০ টাকা কেজি ডাল, ৩ টাকা কেজি নুন এবং ৫ টাকা কেজি চিনি বিক্রি হবে। এতে কোনও কাটমানি থাকবে না।
- এসসি-এসটি সার্টিফিকেটেও ভ্রষ্টাচার চলছে বাংলায়, আমরা বন্ধ করব।
- আদিবাসী, জঙ্গলমহল, সুন্দরবন, উত্তরবঙ্গ ডেভেলপমেন্ট বোর্ড তৈরি করা হবে।
- ১০টা মাল্টিস্টোরিড পার্কিং তৈরি হবে।
- আদিগঙ্গা নদী পরিষ্কার করে পুনরুজ্জীবিত করা হবে।
- কলকাতার সঙ্গে শহরতলির দ্রুত যোগাযোগ বাড়াতে কলকাতা মেট্রোর সম্প্রসারণ শ্রীরামপুর, ধুলাগড় এবং কল্যাণী পর্যন্ত করা হবে।
- এসি ও নিচু মেঝেযুক্ত বাসের সংখ্যা বেড়ে ৩,০০০ হবে।
- আপনারা ৩৪ বছর কমিউনিস্টদের দিয়েছেন, ১০ বছর তৃণমূলকে দিয়েছেন, কংগ্রেসকে স্বাধীনতার পর থেকেই দিয়েছেন। ৫ বছর সময় দিন নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। আমরা নতুন বাংলা গড়ব।