বাঙ্গালী হিন্দুর আকাশে আজ কালো মেঘের ঘনঘটা। ২০১১ সালের জনগণনাতে পশ্চিমবঙ্গের তথাকথিত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ৩০% হলেও বর্তমানে তা ৩৫-৪০%। আসন্ন নির্বাচনে মুখ্য নির্ণায়কের ভূমিকায় যাদের অগ্রণী ভূমিকা বলে মনে করছে পশ্চিমবঙ্গের পূর্বতন ও বর্তমান সরকারের প্রতিনিধিরা।
একদিকে বামপন্থীরা ক্ষমতায় ফিরে আসতে ও অন্যদিকে তৃণমূল ক্ষমতায় টিকে থাকতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট পাওয়ার জন্য তীব্র উদগ্রীব। ফুরফুরা শরীফের দুই পীর ত্বহা সিদ্দিকী ও আব্বাস সিদ্দিকীর দুই পক্ষে সমঝোতা হয়ে ভোটের বৈতরণী পার হওয়ার অপেক্ষা।
কিন্তু তারপর?? যে সরকারই নির্বাচিত হবে তারা কি তাদের উপেক্ষা করে তথাকথিত সেক্যুলার সরকার চালাতে সক্ষম হবে? তোষণ ও ধর্মীয় উগ্রতাকে আটকাতে পারবে? বিগত দিনে রাজ্যে যেভাবে সন্ত্রাসবাদীদের আনাগোনা হচ্ছে তা বন্ধ করতে যা যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সেগুলোকে “ধর্মের ওপর আঘাত” ঘোষনা করবে না?
বিগত দিনে তিন তালাকের মতো কুপ্রথা বন্ধ করতে আইন নিয়ে আসার পর এই আইনকে যেভাবে কলকাতার বুকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মতে ব্যাখ্যা করা হয়েছিল তাতে কিন্ত নিরাশ হতেই হবে। পরবর্তীতে সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট হওয়ার পরও দেখা গেছে রাজ্যের ভয়াবহ অবস্থা। কয়েক হাজার কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা হল অথচ এর বিচার কি হল? যারা এইসব কাজ করল তারা বলতে পারবেন যে এই আইনের জন্য কতজন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের নাগরিকতা চলে গেছে? বিভ্রান্ত হলে বোঝানো সম্ভব কিন্তু দিবা নিদ্রায় ব্যক্তির সত্যের সম্মুখীন করানো সম্ভব নয়।
তাহলে এই অসামাজিক কাজকর্মকে শক্তি প্রদর্শন দেখানো ছাড়া অন্য কিছু বলা সম্ভব নয়। হ্যা, শক্তি প্রদর্শনই বটে। তার সাথে এই বার্তাও দেওয়া হয়েছে যে ভারতবর্ষ তথা পশ্চিমবঙ্গে তাদের সার্টিফিকেট ছাড়া কোনো কিছু করা সম্ভব নয়।
সরকার নির্বাচিত করা হয় জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সমাজ তথা দেশের কল্যাণের জন্য। সেক্ষেত্রে বারংবার যদি কোনো নির্দিষ্ট ধর্ম বা সম্প্রদায় সরকারের সিদ্ধান্তে অগণতান্ত্রিকভাবে হস্তক্ষেপ করে সেক্ষেত্রে অন্যান্য ধর্ম বা সম্প্রদায়ও হস্তক্ষেপ বা শক্তি প্রদর্শন করবে।
আজ বাঙ্গালী হিন্দুর একমাত্র বাসস্থান ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গ । আজও পাকিস্তান বা বাংলাদেশের গৌণ ধর্মলম্বী ও নাস্তিকদের যেরকম উৎপীড়ন সহ্য করতে হচ্ছে তারপরও যদি আমরা এই ভূমির গুরুত্ব না বুঝে অবহেলা করি তাহলে বিপদ আসন্ন। “রাজনীতির উর্ধ্বে রাষ্ট্রনীতি” সেই ধারণা আজ পশ্চিমবঙ্গে গুরুত্বহীন। সর্বশেষে বলতে চায়, এই লড়াই জমির যা হাজার বছর আগে পান্ডবদেরও ছিল আর এখনও আছে। জমির ওপরে ফসল ফলে সংস্কৃতি ও ভাষার। ভাবুন, আর একবার দিবানিদ্র ভঙ্গ করুন।