বিপুল সংখ্যক আসন নিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্যে ফের দিল্লির মসনদে নরেন্দ্র মোদী। গত পাঁচ বছর আগে মোদীর কাছে দেশের মানুষের প্রত্যাশা ছিল বহু। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, অনেকাংশেই সেই প্রত্যাশা পূরণে কার্যত ব্যথ হয়েছে মোদী সরকার। আর ভোটের ফল বলছে আর একবার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মোদীকেই বেছে নিয়েছেন দেশের মানুষ। জোটে নয়, শুধুমাত্র বিজেপিকেই গোটা দেশের মানুষ সংখ্যাগরিষ্ঠের চেয়ে বেশি আসন দিয়েছে।
কেন্দ্রে মজবুত সরকার গঠনের লক্ষ্যেই দ্বিতীয়বারের জন্যে নরেন্দ্র মোদীর উপরেই ভরসা করেছে দেশ। সেই প্রবল প্রত্যাশার মধ্যেই দ্বিতীয় মোদী সরকারের বাজেট পেশ করবেন বিজেপি সরকার। আগামী পাঁচ জুলাই মোদীর নেতৃত্বে দ্বিতীয়বারের এনডিএ সরকারের পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। বিজেপির দাবি, এই প্রথম দেশের সাধারণ বাজেট পেশ করতে চলেছেন কোনও মহিলা।
একদিকে মানুষের প্রত্যাশা অন্যদিকে বিপুল আর্থিক চাপ সামনে জনমোহনী বাজেট পেশ করাটা রীতিমত চ্যালেঞ্জের নির্মলার কাছে। যদিও পুরো বিষয়টি সাধারণ মানুষের উপরেই ছাড়তে চাইছেন তিনি। অবাক হচ্ছেন তো! সাধারণ বাজেট কেমন হবে তা জানতে এবার তা দেশের ‘আম-আদমি’র কাছ থেকেই পরামর্শ নেবেন নির্মলা। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যে বাজেট নিয়ে একাধিক পরামর্শ আসছে। কেমন বাজেট হওয়া উচিৎ। সাধারণ মানুষ কি চাইছে সেই বিষয়টি উল্লেখ করে বিভিন্ন পরামর্শ আসছে। আর প্রত্যেকটি পরামর্শ খুটিয়ে পড়ছেন অর্থমন্ত্রী। শুধু তা পড়া নয়, সেই পরামর্শ পেয়ে রীতিমত উচ্ছ্বসিত তিনি।
শুধু সাধারণ মানুষই নয়, সমাজের বিভিন্ন পদে থাকা ব্যক্তিত্বরাও তাঁকে পরামর্শ দিচ্ছেন। এই বিষয়ে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে নির্মলা সীতারমণ জানিয়েছেন, বিভিন্ন ধরনের চিন্তা বা পরিকল্পনা আমার সঙ্গে শেয়ার করেছেন অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ এবং উদ্যোগপতিরা। আমি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি অনেকগুলিই পড়েছি। আমার টিম সেগুলি সংগ্রহ করে রাখছে। প্রতিটি অমূল্য। দয়া করে ফিডব্যাক পাঠানো বন্ধ করবেন না। ধন্যবাদ।
আর্থিক গতি থেকে বেকারত্ব ইস্যু। একাধিক ইস্যুতে প্রবল চাপের মুখে দ্বিতীয় মোদী সরকার। দ্বিতীয়বারের জন্যে সরকার গঠনের মধ্যেই চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। যেখানে বলা হয় যে মোদীর আমলেই দেশের বেকারত্বের হার সবথেকে বেশি। যা কিনা গত ৪৫ বছরের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দু’টি নয়া ক্যাবিনেট কমিটি গঠন করেছেন। এই সমীক্ষায় রীতিমত মুখ পুড়িয়েছে মোদী সরকার। পাশাপাশি আর্থিক গতির ক্ষেত্রেও ধাক্কা খেয়েছে ভারতের অর্থনীতি। এই পরিস্থিতিতে এই বাজেট অর্থমন্ত্রীর সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ। শিল্পপতি থেকে শেয়ার বাজারের কারবারিরা, প্রত্যেকেই আশা করছেন নির্মলা সীতারমনের মাস্টারস্ট্রোকে হয়তো আর্থিক বৃদ্ধির হার ফের চাঙ্গা হবে।
অন্যদিকে আগামী কয়েকমাসের ব্যবধানেই বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। সেদিকে তাকিয়ে জনমোহনী বাজেট পেশ করতে হবে বিজেপি সরকারকে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বাজেট হতে হবে একদিকে ভারতের ঘুরে দাঁড়ানোর বাজেট অন্যদিকে অবশ্যই মানুষের প্রত্যাশাপূরণের। যদিও শেষমেশ দেশের প্রথম মহিলা অর্থমন্ত্রী কেমন বাজেট পেশ করবেন সেজন্যে অপেক্ষা করতেই হবে আগামী ৫ জুলাই পর্যন্ত।